সিরিয়ায় অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করতে হবে: ব্রাহিমি

সিরিয়া-সংক্রান্ত আরব লিগ ও জাতিসংঘের দূত লাখদার ব্রাহিমি বলেছেন, সিরিয়ায় প্রকৃত পরিবর্তন আনতে হলে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করতে হবে। নির্বাচন পর্যন্ত এই অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে সব ধরনের ক্ষমতা থাকবে।
সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে গতকাল বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন ব্রাহিমি। শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনার জন্য তিনি আবার গতকালই রাশিয়ায় গেছেন। রাশিয়া ইতিমধ্যে বলেছে, শান্তি আলোচনার পূর্বশর্ত হিসেবে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পদত্যাগ মেনে নেওয়া হবে না।
জাতিসংঘ ও আরব লিগের সিরিয়াবিষয়ক দূত ব্রাহিমি গত রোববার দামেস্ক পৌঁছেন। গত অক্টোবরের পর এটাই তাঁর প্রথম সিরিয়া সফর। এই সফরে তিনি প্রেসিডেন্ট বাশারসহ সিরিয়ার শীর্ষ পর্যায়ের সরকারি নেতা ও বাশারবিরোধীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সিরিয়ার বর্তমান সরকারের কাছ থেকে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের চেষ্টার অংশ হিসেবে বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।
গতকাল দামেস্কে ব্রাহিমি বলেন, ‘আমাদের এমন একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা প্রয়োজন, যার সব ধরনের ক্ষমতা থাকবে। প্রেসিডেন্ট বা পার্লামেন্ট নির্বাচন হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকারের সব ধরনের ক্ষমতা থাকতে হবে।’
সিরিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী ফয়সাল মাকদাদ ও প্রেসিডেন্ট বাশারের একজন ঘনিষ্ঠ সহযোগী গতকাল রাশিয়ায় দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তবে সেই বৈঠকের কোনো তথ্য গণমাধ্যমকে জানানো হয়নি। তবে এর আগে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, ফয়সাল মাকদাদ রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্গেই লাভরভ ও মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক প্রতিনিধি মিখাইল বোগদানভের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
সিরিয়া ও লেবানন সূত্রে জানা যায়, ব্রাহিমির শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার জন্য ফয়সাল মাকদাদকে রাশিয়ায় পাঠানো হয়েছে।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আলেক্সান্দার লুকাশেভিচ বলেন, সিরিয়ায় রাজনীতিক ও কূটনীতিকভাবে একটি সমাধান বের করতে আলোচনার পরিকল্পনা করা হয়েছে। দেশটিতে সহিংসতা বন্ধে একটি গঠনমূলক সংলাপ আয়োজনই এখন মূল লক্ষ্য।
বিশ্বের পরাশক্তিগুলোর ধারণা, রাশিয়ার সমর্থন পেয়েই টিকে আছে বাশার সরকার। মস্কো বাশারকে অস্ত্রও সরবরাহ করছে।
প্রায় দুই বছর ধরে বিদ্রোহীরা বাশারের পদত্যাগের দাবিতে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোর তথ্যমতে, এ পর্যন্ত লড়াইয়ে ৪৫ হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে।
ইসরায়েল-জর্ডান বৈঠক: সিরিয়ার সহিংসতা নিয়ে জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহর সঙ্গে বৈঠক করেছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তবে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর মুখপাত্র এই বৈঠকের কথা অস্বীকার করেছেন।
ইসরায়েলের পত্রিকা ও বেতারে ইসরায়েল-জর্ডান বৈঠকের বিষয়টি প্রকাশ করা হয়েছে। তবে কবে ওই বৈঠক হয়েছে তা উল্লেখ করা হয়নি। খবরে বলা হয়, সিরিয়ায় রাসায়নিক অস্ত্রের মজুদ যে ওই অঞ্চলের জন্য হুমকি, তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। এএফপি, রয়টার্স।

No comments

Powered by Blogger.