পাখির বাসা বানাতে সিগারেটের ব্যবহার!

সিগারেট মানবদেহের জন্য ক্ষতিকারক বলেই আমাদের সবার জানা, কিন্তু এই সিগারেটের পরিত্যক্ত অংশই আবার কাজে লাগাচ্ছে একদল পাখি। মেক্সিকো সিটিতে বসবাসকারী একদল পাখিকে সিগারেটের পরিত্যক্ত অংশ বা ফিল্টার সংগ্রহ করতে দেখা যায়।
বিভিন্ন ধরনের কীট-পতঙ্গ থেকে নিজেদের বাসাকে সুরক্ষিত রাখতে পাখিরা সিগারেটের ফিল্টার ব্যবহার করছে। এমনকি নিজেদের বাসস্থানকে উষ্ণ রাখতে এটি ভূমিকা রাখছে বলে পাখিদের ধারণা। এ বিষয় নিয়ে পরিচালিত এক গবেষণা থেকে আরও কিছু মজাদার তথ্য পাওয়া যায়। দীর্ঘদিন ধরে নানা ধরনের পাখির আচরণ নিয়ে সেন্ট এন্ড্রুস বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা গবেষণা চালান। বিজ্ঞানীরা লক্ষ্য করেন যে, মেক্সিকো সিটিতে বাসা বানিয়ে আছে এমন অধিকাংশ চড়ুই পাখির বাসাতেই গড়ে দশটি করে সিগারেটের পরিত্যক্ত অংশ রয়েছে।
এমনকি কোন কোন পাখির বাসাতে সর্বোচ্চ ৪৮টি পর্যন্ত সিগারেটের ফেলে দেয়া অংশ পাওয়া গেছে। সিগারেটের ফেলে দেয়া অংশ দ্বারা তৈরি বাসা অন্যান্য পোকামাকড় দ্বারা কম আক্রান্ত হয়। মূলত সিগারেটের অবশিষ্ট অংশের বিভিন্ন রাসায়নিক ও নিকোটিন ক্ষুদ্র পোকামাকড় ও কীট পতঙ্গের আক্রমণ থেকে বাসাকে নিরাপদ রাখে বলে পাখিরা এটি ব্যবহার করে বলে বিজ্ঞানীরা উল্লেখ করেন। সেন্ট এন্ড্রুস বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. কনস্ট্যানেটিনো ম্যাসিয়াস গার্সিয়ার নেতৃত্বাধীন একদল বিজ্ঞানী এ গবেষণা করেন। গবেষকদল তাদের এ আবিষ্কার রয়েল সোসাইটির বায়োলজি জার্নালে প্রকাশ করেন। এতে তারা বলেন, শহরে বাসা বানানো পাখিরা সিগারেটের পুড়ে যাওয়া অংশ তাদের বাসা নির্মাণে ব্যবহার করে মূলত ক্ষুদ্র কীটপতঙ্গ ও পোকামাকড়ের হাত থেকে বাসাকে মুক্ত রাখার জন্য। এ কারণে যে, সিগারেটের নিকোটিন বিভিন্ন পোকামাকড়ের আক্রমণ প্রতিহত করে। এছাড়া পাখিরা পুড়ে যাওয়া সিগারেটের ফিল্টার বেশি কার্যকর হয় মনে করে ব্যবহার করে। গবেষকরা বলেন, খড়কুটোর মতোই সিগারেটের পরিত্যক্ত অংশ ব্যবহার করে পাখিরা বাসা বানাতে শুরু করে। কিন্তু কোন একসময় তারা এই উপকরণের কীটপতঙ্গ দূর করার ক্ষমতার কথা জানতে পারে। এর ফলেই তাদের মধ্যে এটির ব্যবহার বাড়তে শুরু করে।

সাবিনা ইয়াসমিন

No comments

Powered by Blogger.