বছরজুড়ে বছর ঘুরে by রেজা ফারুক

 বহমান নদীর মতো সময় বয়ে যায় নিজের মতো করে। নিজের ধরনে রেখে যায় ছায়া। যে ছায়ার ভিতর থেকে নতুন কিছুর অঙ্কুরোদ্গম হয় সজল শ্যামল প্রকৃতির নিয়মে।
২০১২ সালটিও দেখতে দেখতে অতিক্রান্ত হয়ে গেল। পড়ে থাকল সারা বছরের নানা সৃজনশীল কাজের প্রেক্ষাপট।অন্যান্য সৃষ্টিশীল কাজের ধারায় ফ্যাশন শিল্পও একটি অন্যতম সৃজনশীল মাধ্যম।
বছর জুড়েই ফ্যাশন ট্রেডে বৈচিত্র্যময় ফ্যাশন নিয়ে, আধুনিক করসেপ্টকে উপজীব্য করে নানা ফর্মে পোশাকে ডিজাইনের শৈল্পিক প্রতিভাটি ফুটিয়ে তোলার কাজটি হয় ছন্দময় কারুকাজ। ২০১২ সালও এর ব্যতিক্রম ছিল না। সারা বছরই দেশের প্রতিষ্ঠিত ফ্যাশন হাউস তথা বুটিক শপগুলো নানা আঙ্গিকের পোশাক যেমন প্রস্তুত করেছে, পাশাপাশি সে সব পোশাকে নিখুঁত ভাবে নিপুণ ডিজাইনটিও অঙ্কিত হয়েছে মানানসইভাবে। সময়ের ধারাবাহিকতায় ফ্যাশন অঙ্গনে প্রতিনিয়তই চলে ডিজাইন নিয়ে নানা ধরনের পর্যবেক্ষণ। আর তারই প্রতিবিম্বটি এসে উদ্ভাসিত হয় উপজীব্য আবহে।
যেহেতু দেশীয় ফেব্রিকের পোশাকের প্রতিই এখন ক্রেতাদের আগ্রহ প্রবল। ফ্যাশন জগতেও এর আবেশটা বেশ ইতিবাচই ব্যঞ্জনায় ফুটে উঠেছে। তবে সবচেয়ে আগ্রহের যে বিষয়টি লক্ষণীয়Ñ তাহলো উৎসবময় সময়কে সামনে রেখে পোশাকের ক্ষেত্রটি দিন দিন যেমন সম্প্রসারিত হয়েছে, তেমনি দেশীয় ফেব্রিকে তৈরি ফ্যাশনেবল ক্রেজের প্রতি ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার কাজটিও এগিয়েছে বেশ নান্দনিক রূপে। ঈদসহ নানা রকম উৎসব এবং ঋতুভিত্তিক উৎসবেও দেশীয় পোশাকের কদর পূর্বাপেক্ষা এখন বহুগুণ বেড়েছে। আর এই অধ্যায়টি রচিত হয়েছে প্রতিষ্ঠিত ফ্যাশন হাউসগুলোর সুচিন্তিত শিল্পবোধের স্ফুরণে। ২০১২ সালকে আলদাভাবে চিত্রিত করা বিষয়টি আপেক্ষিক হলেও বলা চলে সময়ের বিবর্তনে সবকিছুই বদলে যায়। বদলে যাওয়ার নিরিখে গত বছরে গতানুগতিকতার রেশ থেকে বের হয়ে আসার উদ্যমটাও বেশ ভালভাবেই লক্ষ্য করা গেছে। বছর জুড়েই তাই দেখা গেছে, পোশাকের ডিজাইনে অভিনবত্বের ছোঁয়া। আর এটাই হলো সৃষ্টিশীলতার ক্ষেত্রে উত্তরণের এক নিপুণ উদ্যোগ। ফ্যাশন ভুবনের এই যে এগিয়ে যাওয়া, দেশীয় সংস্কৃতির পাল উড়িয়ে এই এগিয়ে চলার মধ্য দিয়েই শিল্পময় একটি পর্বের সূচনা ঘটে।
নগরজীবনে এখন দেশীয় পোশাকের প্রভাবটা চোখে পড়ার মতো। আর এটা হয়েছে পোশাকে দেশীয় সংস্কৃতির চিত্রকে পরিলক্ষিত হওয়ার পর। যে কাজটি আন্তরিকভাবে করেছেন ডিজাইনার এবং ফ্যাশনধারার সামনের সারির প্রতিষ্ঠিত বুটিক শপগুলো। ফলে ঈদসহ নানা উৎসবে দেশীয় ড্রেসের গ্রহণীয়তা এখন অপরিসীম। দৈনন্দিন জীবনও রুচিশীল, মার্জিত ফ্যাশনবোধটা বেশ নিবিড়ভাবে জড়িয়ে গেছে। আর তা দৃষ্টিগোচর হয়Ñ যখন দেখা যায় একজন মানুষ তার পরিধেয় ড্রেসটিকে শৈল্পিকতায় গড়িয়ে নিয়েছেন। যেহেতু পোশাক ব্যক্তিজীবনে একটি অপরিহার্য বস্তু, তাই প্রতিমুহূর্তে পোশাক নিয়ে চলে নিখুঁত পর্যালোচনা। যার ভিতর দিয়ে একটি সুন্দর ড্রেস আউটলেটের ডিসপ্লেতে উঠে আসে।
আর ক’দিন বাদেই ডোরবেলে আঙুল রাখবে নতুন ইংরেজী বছর। ডিসেম্বর শেষ হতে মাত্র আর কয়েক দিন বাকি। তারপর কালের অতলে তলিয়ে যাবে ২০১২ সাল। আসবে নতুন বছর, নতুন দিন। শুরু হবে নতুন উদ্যমে নতুনত্বের স্পর্শ জাগা সৃজনশীল কর্মক্ষেত্রে। ফ্যাশনধারাও এই সৃজনশীল জগতে একটি সুনির্দিষ্ট অবস্থান নিয়ে ইতোমধ্যে এক ভিন্নতর ভুবন রচিত করেছে। ২০১২ সালের ক্যানভাস থেকে বিগত ছবির অবয়বগুলো পাশে তুলে রেখে আসন্ন নতুন বছরের কাব্যময় ছবির সমারোহ ঘটাবে ফ্যাশন শিল্পও। যে শিল্পের গভীরে এখন এক ভিন্ন মাত্রা যুক্ত হয়েছে দেশীয় ফেব্রিকে, দেশীয় সংস্কৃতির নিপুণতম কম্বিনেশনে। আর এখানেই ফ্যাশন জগত পেয়ে যায় গৌরবোজ্জ্বল সম্ভাষণ।
অতীতের আলোকপুঞ্জ থেকে আলোকণা তুলে তুলে নতুন সব সমকালীন সৃষ্টিময়তাকে দেবে উজ্জ্বলতর ঐশ্বর্যের ছোঁয়া। যে ছোঁয়ায় ফ্যাশনধারাও হয়ে উঠবে আলোচিত। ২০১২-এর সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে বছরের প্রান্তে এসে নতুন বছরকে নানা রঙে রাঙিয়ে বরণ করে নেয়ার অপেক্ষায় এখন ফ্যাশন ভুবন।

মডেল : রুহী, সুজানা ও হৃদয় খান

No comments

Powered by Blogger.