সড়ক ও জনপথ বিভাগের ঘুম ভাঙবে কবে?-‘রাস্তা ঠিক না হলে খবর আছে’

ঈদে দুর্ভোগ কমাতে ২৫১টি কোচ (বগি) মেরামত করা হয়েছে বলে যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের যে খবরটি জানিয়েছেন, তা যাত্রীসাধারণের জন্য স্বস্তিদায়ক হতে পারে, যদি সেই বগি চালানোর মতো ইঞ্জিন, চালক ও রেলওয়ে—সবকিছু ঠিকঠাক থাকে। কিন্তু বাংলাদেশ রেলওয়ের অবস্থাটি দাঁড়িয়েছে লাইন আছে তো বগি নেই, বগি আছে তো


সেই বগি চালানোর ইঞ্জিন নেই। ঈদে বা অন্য যেকোনো পার্বণে নিরাপদ ও সাশ্রয়ী বাহন হিসেবে মানুষ ট্রেনে যাতায়াত করতে আগ্রহী। কিন্তু সীমিত ইঞ্জিন ও বগি দিয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে যাত্রীর চাহিদা মেটাতে অপারগ।
এ অবস্থায় সড়কপথই প্রধান ভরসা। কিন্তু সেই সড়কের যে কী বেহালদশা, তা যোগাযোগমন্ত্রীর মন্তব্যেই স্পষ্ট। শুক্রবার খুলনা-ঢাকা মহাসড়কের যশোর অঞ্চলের বিভিন্ন জায়গা পরিদর্শনের পর তিনি সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের প্রকৌশলীদের উদ্দেশ করে বলেছেন, ‘ঈদের আগে খুলনা-ঢাকা মহাসড়ক যানবাহন চলাচলের উপযোগী না হলে খবর আছে।’ গত বছর ঈদের আগে সারা দেশে মহাসড়কগুলোর বেহালদশার কারণে কী পরিস্থিতি হয়েছিল তা কম-বেশি সবাই অবহিত। তখন বর্তমান মন্ত্রী দায়িত্বে না থাকলেও সওজের কর্মকর্তা-প্রকৌশলীরা তো ছিলেন। তাঁরা সময়মতো কেন সড়ক-মহাসড়কগুলো মেরামত করলেন না?
এবার সেই পরিস্থিতি যাতে না হয়, মন্ত্রী মহোদয় সম্ভবত সওজের প্রকৌশলীদের সে জন্যই সতর্ক করে দিয়েছেন। তবে তিনি এই সতর্কবাণী বর্ষার আগে দিলে ভালো করতেন। সড়ক-মহাসড়ক মেরামতের জন্য বর্ষাকাল বেছে নেওয়ার কারণ এই সময়ে জনগণের টাকা নয়ছয় করার সুযোগ বেশি। মাটি-বালু বর্ষার পানিতে ভেসে গেছে—এই অজুহাতে বড় দাও মারা যায়। যেসব কর্মকর্তা এ ধরনের মানসিকতা পোষণ করেন, সদুপদেশ বা মৃদু সতর্কবাণীতে তাঁদের চৈতন্যোদয় হবে না। যে জনগণের অর্থে সওজের কর্মকর্তা ও প্রকৌশলীদের বেতন-ভাতা হয়, সেই জনগণের ভোগান্তি বাড়ানোর পরিণতি কখনোই ভালো হবে না। আমরা আশা করব, মন্ত্রীর ভাষায় খবর হওয়ার আগেই তাঁরা জরুরি ভিত্তিতে বেহাল সড়কগুলো মেরামত করে যানবাহন চলাচলের উপযোগী করবেন।

No comments

Powered by Blogger.