দোহার-নবাবগঞ্জ-পদ্মার ভাঙন ঠেকাতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত বাঁধ হয়নি আজও

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের সাড়ে তিন বছর পার হলেও দোহার-নবাবগঞ্জবাসীকে দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি এখনো পূরণ হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত পদ্মার ভাঙন ঠেকাতে বাঁধ না হওয়ায় ঢাকার দোহার-নবাবগঞ্জ উপজেলার চার ইউনিয়নের শত শত পরিবার প্রতিবছর ঘরবাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে।
গত কয়েক দিনে অরঙ্গাবাদ, চারাখালী, মঠবাড়ি ও মাহমুদপুর ইউনিয়নের নারায়ণপুর থেকে চর বিলাসপুর পর্যন্ত ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। এসব এলাকায় একটি মসজিদ ও পাঁচটি বসতবাড়ি ভেঙে গেছে। ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে অরঙ্গাবাদ বাজার, একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি মাদ্রাসা।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপসহকারী প্রকৌশলী আবদুল মান্নান বলেন, দুটি পয়েন্টে ১১ কিলোমিটার জায়গায় বেড়িবাঁধ নির্মাণে ৩৫২ কোটি টাকার প্রকল্প বরাদ্দ চেয়ে ২০১১ সালে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়। একনেকের সভায় পাস হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। বেড়িবাঁধ নির্মাণের প্রস্তাবিত পয়েন্ট দুটি হচ্ছে—বিলাসপুরের মাঝির চর থেকে মোকসেদপুর পর্যন্ত সাড়ে সাত কিলোমিটার এবং নয়াবাড়ী ইউনিয়নের অরঙ্গাবাদ থেকে বাহ্রাঘাট পর্যন্ত সাড়ে তিন কিলোমিটার।
দোহার উপজেলার মাহমুদপুর, নয়াবাড়ি, বিলাসপুর ও নারিশা ইউনিয়নে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে নদীভাঙনের কারণে শত শত পরিবার ভিটেবাড়ি হারিয়ে উদ্বাস্তু হয়ে যাচ্ছে। মাহমুদপুর গ্রামের আবদুর রহিম বলেন, ‘গায়ে খেটে সংসার চালিয়ে বাঁচা অনেক কষ্ট। এরপর যদি পদ্মার ভাঙনে সব হারিয়ে যায় তাইলে কী করুম!’
চর বিলাসপুর গ্রামের আজিজ মোল্লা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী তো কইছিল, গদিতে গেলে বান (বাঁধ) করে দিবে। কিন্তু কিছুই তো করল না। অহন আবার কে আইসা কবে যে, ভোট দিলে বান করে দেবে।’
প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বিষয়ে দোহার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলী আহসান শিকদার বলেন, ‘স্থানীয় সাংসদ ও প্রতিমন্ত্রী মান্নান খান পদ্মার ভাঙন ঠেকাতে বাঁধ নির্মাণের ব্যাপারে পাউবোকে তাগিদ দিয়েছেন। আশা করি, আগামী শুকনো মৌসুমের মধ্যে কাজটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।’
গত বুধবার দোহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আল আমিন মাহমুদপুর ইউনিয়নে একটি ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেন এবং বালুর বস্তা ফেলে স্রোতকে ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করতে উপজেলা পরিষদের তহবিল থেকে এক লাখ টাকা বরাদ্দ দেন। এ সময় মাহমুদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.