হিসাববিজ্ঞানে পেশাদার ডিগ্রি-এসিসিএ পাল্টে দেবে আপনার ভবিষ্যৎ by জিয়া হাসান

'বিশ্বব্যাপী দারুণ সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে এসিসিএ ডিগ্রি অর্জনকারীদের। হিসাববিজ্ঞানের এই পেশাদার ডিগ্রিটি পাল্টে দিতে পারে আপনার ভবিষ্যৎ, তৈরি করতে পারে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কাজ করার সুযোগ। বাংলাদেশ এসিসিএর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ। এখানে এ বিষয়ে প্রায় সাত হাজার শিক্ষার্থী রয়েছেন এবং আগ্রহ দেখাচ্ছেন অনেকেই।' সম্প্রতি বাংলাদেশ সফরকালে সমকালের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে এসিসিএর প্রধান নির্বাহী হেলেন ব্র্যান্ড অবি এসব কথা বলেন। তিনি এসিসিএ নিয়ে শিক্ষার্থীদের ভাবনা, কাজের সুযোগ এবং ভবিষ্যৎ নানা পরিকল্পনার কথা বলেন।


গত দুই বছর ধরে এসিসিএর প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা এই ব্রিটিশ নাগরিক গত সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ সফরে আসেন। এই সফরে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ কয়েকটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন ছাড়াও সেমিনারে অংশ নেন। দ্য অ্যাসোসিয়েশন অব চার্টার্ড সার্টিফায়েড অ্যাকাউন্ট্যান্টে (এসিসিএ) সম্পর্কে তিনি বলেন, ১৯০৪ সালে যুক্তরাজ্যে এটি প্রথম চালু হয়। হিসাববিজ্ঞানে এটি পেশাদার ডিগ্রি। শুরু হওয়ার পর থেকে ১৭০টি দেশে ৮৩টি আঞ্চলিক অফিসের মধ্যে এ প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম চলছে। বর্তমানে এসব দেশে চার লাখ শিক্ষার্থী এবং এক লাখ চলি্লশ হাজার সদস্য রয়েছেন। এই কোর্সের মূল বডি একই হওয়ার কারণে ইংল্যান্ডসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পড়াশোনার জন্য ক্রেডিট ট্রান্সফার করা যায়। একে ব্রিটিশ কারিকুলামের সিএ ডিগ্রি বলা হয় এবং বিশ্বজুড়ে এর গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। শিক্ষার্থীরা যে কোনো বিভাগ থেকে পাস করে প্রফেশনাল অ্যাকাউন্টিং বা ব্রিটিশ সিএ ডিগ্রি শেষ করে বিশ্বের যে কোনো দেশে চাকরি করতে পারেন। এটি জাতিসংঘ এবং ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব অ্যাকাউন্ট্যান্টসের সদস্য। এ কোর্সগুলো সম্পন্ন করে বহুজাতিক কোম্পানি বা করপোরেট অফিসে উচ্চ বেতনে বিশেষ করে চিফ ফিন্যান্স অফিসার, অডিটর, অ্যাকাউন্টিং পার্টনার, ফিন্যান্স ডিরেক্টর, সিনিয়র ইন্টার্নাল অডিটর, বিজনেস অ্যাডভাইজার প্রভৃতি পদে চাকরি করা যায়। ক্যারিয়ার গড়ার ক্ষেত্রে প্রফেশনালদের কাছে এসব কোর্সের চাহিদা সবচেয়ে বেশি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের এ বিষয়ে আগ্রহ দেখে তিনি অভিভূত হয়েছেন। তার কাছে সবাই জানতে চেয়েছিলেন এ ডিগ্রির বিভিন্ন দিক নিয়ে। তিনি বলেন, 'আমার ভালো লেগেছে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের আগ্রহ দেখে। আমার ধারণা, এ দেশের শিক্ষার্থীরা এ বিষয়ে ভালো করবে এবং চাকরি ক্ষেত্রেও তারা এগিয়ে যাবে সমান তালে। মনে রাখতে হবে, হিসাববিজ্ঞানে ক্যারিয়ার গড়া একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত এবং এটি আপনাকে ভালো কাজের সন্ধান দিতে পারবে, পাশাপাশি একটি প্রতিষ্ঠানের উঁচু পর্যায়ে কাজ করার সুযোগ তৈরি করবে এই এসিসিএ। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কাজের সুযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, এসিসিএ আন্তর্জাতিকভাবে পেশাদার হিসাবরক্ষণ হিসেবে স্বীকৃত। এর অর্থ হচ্ছে, আপনি যেখানে ইচ্ছা পড়তে এবং কাজ করতে পারবেন। বর্তমানে দেশে আট হাজার শিক্ষার্থী এবং ৪৫ জন এসিসিএর সদস্য রয়েছেন। চাহিদার কথা চিন্তা করে বাংলাদেশে ২০০৮ সালে এসিসিএর কান্ট্রি অফিস খোলা হয়। এখানকার শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার কথা ভাবা হচ্ছে। কীভাবে আরও সুযোগ বাড়ানো যায় তা ভাবা হচ্ছে। এসিসিএর গুণগত মানের বিষয়ে হেলেন ব্র্যান্ড বলেন, এসিসিএ বিশ্বব্যাপী সমাদৃত একটি পেশাগত ডিগ্রি এবং এটি আন্তর্জাতিক ফেডারেশন অব অ্যাকাউন্ট্যান্টসের (আইফ্যাক) সদস্য। ফলে এসিসিএ সব সময়ই গুণগত মান বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর। সব দেশে একই পদ্ধতিতে পড়ানো হয়। তাই বাংলাদেশসহ যে দেশেই এসিসিএ সম্পন্ন করা হোক না কেন, একই মান বাজায় থাকবে। তিনি আরও বলেন, এসিসিএ বাংলাদেশের হিসাবরক্ষণে পেশাজীবীদের যোগ্য করে তোলার জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।

No comments

Powered by Blogger.