তুষারঝড়ে লন্ডভন্ড যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, নিহত ৯

প্রচণ্ড তুষারঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় এলাকা। বিরল এই ঝড়ে ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যে ৬৮ সেন্টিমিটার (২৭ ইঞ্চি) তুষার জমেছে। বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে লাখ লাখ মানুষ।
তুষারপাতজনিত দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত নয়জনের মৃত্যু হয়েছে। ঝড়ের কারণে নিউ জার্সি, কানেকটিকাট, ম্যাসাচুসেটস ও নিউইয়র্কের কিছু অংশে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় এলাকায় এ সময় সাধারণত এ ধরনের তুষারঝড় হয় না। কাজেই ঝড় মোকাবিলায় ওই এলাকার লোকজনের প্রস্তুতি তেমন ছিল না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ১৮৬৯ সাল থেকে যে তথ্যাবলি সংরক্ষণ করা হয়েছে সে অনুযায়ী, নিউইয়র্কের সেন্ট্রাল পার্কে অক্টোবর মাসে কখনো এক ইঞ্চি তুষারও দেখা যায়নি। সেখানে এখন ২ দশমিক ৯ ইঞ্চি তুষার, যা নজিরবিহীন।
শনিবার থেকে শুরু হওয়া এই তুষারঝড় রোববার শেষ হলেও এর জের কাটতে সময় লাগবে বলে কর্মকর্তারা জানান। উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহরগুলোতে ৩২ লাখের বেশি বাড়িতে বিদ্যুৎ নেই। মেরিল্যান্ড থেকে মেইন পর্যন্ত বিদ্যুৎ-পরিস্থিতি স্বাভাবিক পর্যায়ে নিয়ে আসতে কয়েক দিন লেগে যেতে পারে।
ঝড়ের কারণে একই সঙ্গে বিমান, রেল ও সড়ক যোগাযোগ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস ঝড়জনিত দুর্ভোগের ব্যাপারে সতর্ক করেছে।
ঝড়জনিত দুর্ঘটনায় যেসব লোকের মৃত্যু হয়েছে, এর মধ্যে ফিলাডেলফিয়ায় বরফে ঢাকা সড়কে পৃথক দুটি দুর্ঘটনায় চারজন নিহত হয়। তুষারঝড়ের সময় পেনসিলভানিয়ার টেম্পলে ৮৪ বছর বয়সী এক বৃদ্ধের মৃত্যু ঘটে। কানেকটিকাটের কলচেস্টারে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন এক ব্যক্তি। এ ছাড়া সড়ক দুর্ঘটনায় নিউইয়র্কে এক নারী ও নিউ জার্সিতে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। ম্যাসাচুসেটসের স্প্রিংফিল্ডে তুষারঝড়ের সময় বিদ্যুতায়িত একটি রেলিং ধরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান অপর এক ব্যক্তি।
কানেকটিকাটের গভর্নর ডানেল পি ম্যালয় বলেন, তাঁর অঙ্গরাজ্যে সাড়ে সাত লাখ মানুষ বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছে। তবে ঝড়ের ঝাপটা পুরোপুরি কেটে যাওয়ার পর ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ জানা যাবে।
ম্যালয় বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় আইরিন থেকে আমরা যে অভিজ্ঞতা লাভ করেছি, এখনকার পরিস্থিতি এর চেয়ে ভয়াবহ বলে মনে হচ্ছে। রাজ্যজুড়ে ৩২টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। দুর্গত লোকজন যাতে আগুন পোহানো ও উষ্ণ পানিতে গোসল করার সুবিধা পায়, সে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কমপক্ষে চারটি হাসপাতালে এখন জেনারেটরের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে।’

No comments

Powered by Blogger.