দামের আশায় ব্যবসায়ীরা-রাজবাড়ীর আড়তে জমে আছে ৭০ লাখ টাকার চামড়া by জাহাঙ্গীর হোসেন,

ক্রয়মূল্য ও প্রক্রিয়াজাত ব্যয় বাড়ায় এবং বাজারমূল্য কম থাকায় রাজবাড়ীর বিভিন্ন আড়তে প্রায় ৭০ লাখ টাকা মূল্যের চামড়া মজুদ আছে। সন্তোষজনক দামে কবে নাগাদ চামড়া বিক্রি করতে পারবেন_এ নিয়ে উৎকণ্ঠায় আছেন ব্যবসায়ীরা।রাজবাড়ী বাজারের চামড়া ব্যবসায়ী ফুল মোহম্মদ জানান, বাজারে চামড়ার আড়ত রয়েছে ছয়টি। আড়তগুলোর সঙ্গে ২০ জন ব্যবসায়ী জড়িত।


আড়ত ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি ঈদুল আজহায় মৌসুমি ব্যবসায়ীরাও চামড়া ক্রয় করেন। মৌসুমি ব্যবসায়ীদের মধ্যে বেশির ভাগই অতিরিক্ত মূল্যে চামড়া ক্রয় করেন। যে কারণে এবার চামড়ার বাজার ছিল ঊর্ধ্বমুখী। বাধ্য হয়ে আড়তদারদের উচ্চ দরে চামড়া ক্রয় করতে হয়। তাঁরা প্রতি ফুট গরুর চামড়া ৬৫ থেকে ৭০ টাকায় ও ছাগলের চামড়া ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় ক্রয় করেন। একটি গরুর চামড়া প্রক্রিয়াজাত করতে ৭০ থেকে ৮০ টাকা এবং ছাগলের চামড়ায় ৩০ থেকে ৪০ টাকা খরচ হয়। বর্তমানে রাজবাড়ী বাজারের বিভিন্ন ব্যবসায়ীর আড়তে কমপক্ষে ৭০ লাখ টাকার চামড়া মজুদ রয়েছে। কোনো কোনো ব্যবসায়ী পাওনাদারের চাপে মজুদ করা চামড়া বিক্রি করলেও তাঁরা লাভের মুখ দেখেননি। সাধারণত তাঁরা ঢাকা ও কুষ্টিয়া এলাকার আড়তে চামড়া বিক্রি করে থাকেন। তবে ওইসব এলাকার আড়তদাররা বর্তমানে গরুর চামড়া ৭০ থেকে ৮০ এবং ছাগলের চামড়া ৫০ থেকে ৫৫ টাকা ফুট দরে ক্রয় করছেন। যে কারণে রাজবাড়ীর আড়তদাররা পড়েছেন বিপাকে। খরচ বাদ দিয়ে ওই মূল্যে চামড়া বিক্রি করলে বিপুল লোকসানের শিকার হবেন তাঁরা। ফলে চামড়া বিক্রি না করে মজুদ অবস্থায় ফেলে রেখেছেন।
বাজারের অপর ব্যবসায়ী সবুর আহম্মেদ জানান, উচ্চ মূল্যে চামড়া ক্রয় করে তিনি ফেঁসে গেছেন। কবে নাগাদ মজুদ করা চামড়া বিক্রি করতে পারবেন, তা তিনি জানেন না। তিনি বলেন, ঢাকার কোনো ট্যানারি রাজবাড়ী থেকে সরাসরি চামড়া কেনে না। যদি ঢাকার ট্যানারিগুলো সরাসরি চামড়া কিনত, তাহলে তাঁরাও সঠিক মূল্যে চামড়া বিক্রি করতে পারতেন। এতে ব্যবসায়ীদের হাঁ-হুতাশ করতে হতো না।
মৌসুমি ব্যবসায়ী আবদুর রাজ্জাক, সোহরাব সেখ ও আবু হানিফ জানান, লাভের আশায় ঈদ মৌসুমে তাঁরা তিন-চার লাখ টাকার চামড়া কিনেছিলেন। তবে রাজবাড়ী বাজারে চামড়ার মূল্য কম থাকায় রাজবাড়ীতে সংগ্রহ করা চামড়া বিক্রি করতে পারেননি। বাধ্য হয়ে কুষ্টিয়ার আড়তে নিয়ে গিয়েছিলেন চামড়া। সেখানেও চামড়ার দাম কম থাকায় তাঁদের মতো বেশির ভাগ ব্যবসায়ীকেই চার-পাঁচ হাজার টাকা লসে চামড়া বিক্রি করতে হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.