বান কি মুনের সঙ্গে খালেদা জিয়ার সাক্ষাৎ নির্বাচন ও যুদ্ধাপরাধের বিচারে জাতিসংঘের ভূমিকা চায় বিএনপি

ব দলের অংশগ্রহণে আগামী সংসদ নির্বাচন এবং প্রকৃত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করতে জাতিসংঘের ভূমিকা দেখতে চায় বিএনপি। সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বাংলাদেশসফররত জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ প্রত্যাশা তুলে ধরেন। দলটি যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কিছু ত্রুটি লিখিতভাবে জাতিসংঘ মহাসচিবকে দেন। সাক্ষাৎ শেষে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শমসের মুবিন চৌধুরী এসব কথা জানান।


বান কি মুন বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনে সব দল যাতে অংশ নেয়, তা নিশ্চিত করতে জাতিসংঘ চেষ্টা চালাবে। তিনি বলেন, গণতন্ত্রের স্বার্থে নির্বাচন সুষ্ঠু হতে হবে। সাক্ষাতে খালেদা জিয়া জাতিসংঘ মহাসচিবকে বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র হেঁাঁচট খাচ্ছে।
মহাজোট সরকার গণতন্ত্রকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন বিরোধীদলীয় নেতা। তিনি জানান, সরকারের আচরণের কারণে আগামী সাধারণ নির্বাচনে সব দল অংশ নাও নিতে পারে। তিনি এ ব্যাপারে সহযোগিতামূলক ভূমিকা পালন করতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানান। বান কি মুন খালেদা জিয়ার আহ্বানে সাড়া দিয়ে বলেন, নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে জাতিসংঘ ভূমিকা পালন করবে। শমসের মুবিন চৌধুরী জানান, বান কি মুন বলেছেন, জাতিসংঘ বাংলাদেশে সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়।
শমসের মুবিন জানান, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম ও বিচার প্রক্রিয়ার বিভিন্ন ত্রুটি চিহ্নিত করে বিএনপি তা লিখিতভাবে জাতিসংঘ মহাসচিবকে জানিয়েছে। মুবিন জানান. সাক্ষাতে বান কি মুন বলেন, জাতিসংঘ মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার চায়। কিন্তু সেটা আন্তর্জাতিক মানের হতে হবে। তিনি এ ব্যাপারে বিএনপির অবস্থান কী, তা খালেদা জিয়ার কাছে জানতে চান। খালেদা জিয়া মুনকে বলেন, বিএনপিও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার চায়। কিন্তু বিচার এমন হতে হবে, যাতে প্রকৃত অপরাধীর শাস্তি হয়। আদালতের ভূমিকা হতে হবে নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ ও প্রশ্নাতীত। আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হবে। খালেদা জিয়া অভিযোগ করেন, ট্রাইব্যুনালকে আন্তর্জাতিক মানের বলা হলেও বিচারের শুনানিতে বিদেশি কোনো আইনজীবীকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
শমসের মুবিন জানান, পৌনে এক ঘণ্টার সাক্ষাতে জাতিসংঘ মহাসচিব এবং বিরোধীদলীয় নেতা বাংলাদেশের বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন। দ্বিতীয় মেয়াদে জাতিসংঘের মহাসচিব নির্বাচিত হওয়ায় বান কি মুনকে অভিনন্দন জানান খালেদা জিয়া। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে সর্বাধিকসংখ্যক সশস্ত্র ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য থাকায় বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন বান কি মুন।
সাক্ষাৎ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, চেয়ারপারসনের দুই উপদেষ্টা সাবিহ উদ্দিন আহমেদ ও রিয়াজ রহমান।

No comments

Powered by Blogger.