ভোটের অঙ্ক জটিল টাকার খেলা শুরু by রাশেদ মেহেদী,

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটের অঙ্ক জটিলথেকে জটিলতর হচ্ছে। অনেকের মতে, ভোটের মূল অঙ্ক
এখন নারায়ণগঞ্জ শহরের বাইরে সিদ্ধিরগঞ্জ-কদমরসুলকে ঘিরে। ১ লাখ ৬২ হাজার ৮৫২ ভোটারের মূল নারায়ণগঞ্জ শহরে ভোটের জোর হাওয়া অনেকটাই একজন মেয়র প্রার্থীর অনুকূলে থাকলেও নানা হিসাব-নিকাশ করে নিজেদের শক্ত অবস্থান তৈরিতে ব্যস্ত অন্য দুই হেভিওয়েট প্রার্থী। তবে স্থানীয়দের অভিমত, এবারের নির্বাচনের ফল নির্ধারণে শহরের চেয়েও বেশি ভূমিকা রাখতে পারে সিদ্ধিরগঞ্জ (১ লাখ ৪৪ হাজার ৮৫২ ভোটার) এবং বিএনপি অধ্যুষিত কদমরসুল এলাকা (প্রায় ৯৭ হাজার ভোটার)।


আর এই দুই এলাকার ভোট নিজেদের অনুকূলে নেওয়ার জোর লড়াই চলছে তিন হেভিওয়েট প্রার্থীর মধ্যে। ফলে শহরের চেয়েও প্রচার এবং নানা জটিল হিসাব-নিকাশে সবচেয়ে বেশি সরব এখন সিদ্ধিরগঞ্জ-কদমরসুল এলাকা। শেষ অঙ্ক হিসাবে এর মধ্যে কোনো কোনো প্রার্থীর টাকার খেলা শুরু করার তথ্যও মিলেছে সরেজমিন অনুসন্ধানে।
বন্দর-কদমরসুল : টানবাজার এলাকা থেকে শীতলক্ষ্যা পার হলে অপর পাড়ে বন্দর থানা এলাকা। আর বন্দর ঘাট থেকে
রিকশায় ২০ মিনিটের পথ কদমরসুল পৌরসভা এলাকা। ভোটের বিভাজনে এই এলাকাটি নারায়ণগঞ্জের একমাত্র বিএনপি অধ্যুষিত এলাকা। এ এলাকার উপজেলা চেয়ারম্যানও বিএনপি নেতা। নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক এমপি বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট আবুল কালামের নিজের এলাকা সোনাকান্দায় রয়েছে বিএনপির ভোটব্যাংক। বন্দর ঘাট এলাকা শামীম ওসমানের দেয়াল ঘড়ি আর সেলিনা হায়াৎ আইভীর দোয়াত কলম মার্কার পোস্টারে ঠাসা থাকলেও যতই কদমরসুল এলাকার ভেতরে যাওয়া যায়, বেশি চোখে পড়ে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকারের আনারস মার্কার পোস্টার। নবীগঞ্জ এলাকায় নেতাকর্মীদের নিয়ে বাড়ি বাড়ি ঘুরতে দেখা গেল কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা খায়রুল কবীর খোকনকে। চোখাচোখি হতেই করমর্দন করে খোকন বললেন, আমরা খুবই আশাবাদী, দোয়া করবেন।
এলাকার মুদি দোকানদার আবদুর রশীদের দোকানের সামনে অনেকেই ভোট নিয়ে জোর আলোচনা করছেন। ৬৫ বছরের আবদুর রশীদও আলোচনায় খুবই সরব। তিনি বললেন, এতদিন এ এলাকায় দোয়াত কলমের কথাই সবার মুখে মুখে ছিল। কিন্তু গত দু'দিন হলো আনারসের লোকজন জোরেশোরে মাঠে নেমেছেন। ঢাকার নেতারাও আসছেন আনারসের জন্য। তবে মানুষের মনোভাব এতে কতটা বদল হবে বোঝা মুশকিল। তার অভিমত, দেয়াল ঘড়ি মার্কার প্রচারও বেশ আছে। দেয়াল ঘড়ির পক্ষেও গত কয়েক দিন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গেছেন ভোট চাইতে। তবে কদমরসুলের মানুষের ভেতরে বেশি আলোচনা দোয়াত কলম আর আনারস নিয়ে। আলোচনার ফাঁকে এক যুবক নবী হোসেন বললেন, চাচা, আলাপ কম করেন। বিপদে পড়লে কিন্তু সাংবাদিকরা ঠেকাইব না। আবদুর রশীদ চুপ হয়ে গেলেন।
নবীগঞ্জের চায়ের দোকানদার এজাজ হোসেনের দাবি, তিনি ভোটের হিসাব খুব ভালো বোঝেন। বিএনপি নেতা কালাম এখানে যার পক্ষে ভোট চাইবেন, এ এলাকার মানুষ তাকেই ভোট দেবেন। তার মতে, কালামের ভাব এবার বোঝা যাচ্ছে না। বিএনপির পক্ষে মাঠে থাকলেও আসলে কালামের মনে কী আছে_ তা নিয়ে তার মনেও সন্দেহ।
তবে ভোটের মাঠে বন্দর এলাকার সংখ্যালঘু অধুষ্যিত ঋষিপাড়া-বাবুপাড়ায় সমানে প্রচার চালাচ্ছেন দেয়াল ঘড়ি আর দোয়াত কলমের কর্মী-সমর্থকরা। ঋষিপাড়ার বাসিন্দা এবং এলাকায় পুতুলনাচের শিল্পী হিসেবে পরিচিত প্রবীণ ভীমচন্দ্র দাস বললেন, এ পাড়ায় ওসমান-আইভী সমান সমান। তবে ওসমানের সমর্থন কিছুটা বেশি হতে পারে। তিনি এলাকার মানুষের মনে ভয়ের কথাও বললেন। তার আবেদন, আপনারা প্রশাসনকে আমাদের দিকে একটু নজর রাখতে বলবেন। ভোটের একদিন আগে থেকে যেন মহল্লার মুখে পুলিশ থাকে। আমরা এমনিতেই ভয়ে থাকি, ভোট এলে ভয় বাড়ে।
এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী জাকির হোসেন জানালেন নির্বাচনের অন্য হিসাব। তিনি জানান, এলাকায় অনেকে বুকে এক মেয়র প্রার্থীর পোস্টার নিয়ে ঘুরছে, গোপনে প্রচারণা চালাচ্ছে আর এক প্রার্থীর জন্য। তার মতে, এক প্রার্থীর কাছ থেকে নির্বাচনী খরচ নিয়ে আর একজনের পক্ষে কাজ করার মতো গাদ্দারি গত ৩০ বছরে কখনও দেখিনি। তিনি মনে করেন, এবার ভোটের খেলা হবে অর্থ-মাস্তান বাহিনীর সঙ্গে আম জনতার সমর্থনের। আম জনতার কাছে মাস্তানদের এত অসহায় অবস্থ্থা আগে কখনও বন্দর এলাকায় দেখেননি বলে জানান পঞ্চাশ ছুঁই ছুঁই এই ব্যবসায়ী। তিনি এও বললেন, নির্বাচনের আগের দুই রাতে হবে আসল খেলা। এ খেলা যার নিয়ন্ত্রণে থাকবে, সেই জিতবে।
সিদ্ধিরগঞ্জ
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন এলাকার সবচেয়ে বড় এলাকা সিদ্ধিরগঞ্জ। শহর এবং কদমরসুল এলাকার ভোটার প্রায় ২ লাখ ১০ হাজার। আর এক সিদ্ধিরগঞ্জেই ভোটার ১ লাখ ৯২ হাজার। ফলে এবারের নির্বাচনে চালকের আসনে সিদ্ধিরগঞ্জ।
সিদ্ধিরগঞ্জ বাজার থেকে মিজমিজি, হিরাঝিল. কদমতলি পর্যন্ত যত দূর চোখ যায়, শুধু নির্বাচনী পোস্টার। তিন হেভিওয়েট প্রার্থীর ছোট-বড় পোস্টার পাশাপাশি। এলাকায় চায়ের দোকান, বাজারে নির্বাচন ঘিরে তুমুল আলোচনা।
বাজারের সঙ্গে লাগোয়া মিজমিজি এলাকার একটি চায়ের দোকানে বসে এলাকাবাসী রুহুল আমিন তার মতো করে বললেন এ এলাকার ভোটের হিসাব। তার মতে, এখানে শামীম ওসমানের একটি ভোটব্যাংক আছে হিরাঝিল এলাকায়। কদমতলিতে প্রভাব বেশি সেলিনা হায়াৎ আইভীর। আর মিজমিজি এলাকায় প্রভাব বেশি তৈমুর আলম খন্দকারের। স্থানীয় এক রাজনৈতিক নেতাও তাকে সমর্থন করলেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই নেতা বললেন, সিদ্ধিরগঞ্জে যিনি ভোট বেশি পাবেন, ফল তার দিকে ঝুঁকে পড়ার সম্ভাবনা বেশি। কিন্তু এখন পর্যন্ত মাঠের হিসাব হচ্ছে, কেউ কারে নাহি ছাড়ে সমানে সমান। এ এলাকায় এখন পর্যন্ত কারও একক প্রভাব নেই। তবে গত দুই দিনে শামীম ওসমান এবং তৈমুরের পক্ষে প্রচারণা ব্যাপক হারে বেড়েছে। দুই প্রার্থীর সমর্থকরা সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন। মানুষের হাতে-পায়ে ধরেও ভোট চাচ্ছেন। তবে আইভীর কর্মী-সমর্থকদের এ এলাকায় এত বেশি প্রচারণা দেখা যাচ্ছে না। তার প্রতি অনেকের নীরব সমর্থন আছে বলে মনে করেন এই রাজনৈতিক কর্মী।
মিজমিজি থেকে হিরাঝিলে ঢোকার মুখে আলাপ হলো কয়েক এলাাকাবাসীর সঙ্গে। এলাকার এক চাকরিজীবী আবদুল হামিদ বললেন, সিদ্ধিরগঞ্জে ইসলামী আন্দোলনের কর্মী আছেন অনেক। প্রায় পাঁচ হাজার। এই কর্মীদের ভোটসহ সাত থেকে আট হাজার ভোট পড়তে পারে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী আতিকুর রহমান নান্নু মুন্সীর গরুর গাড়ি মার্কায়। তার বক্তব্য অনুযায়ী, তিন হেভিওয়েট প্রার্থীর সঙ্গে অন্তত সিদ্ধিরগঞ্জে স্বল্প পরিসরে হলেও ভোটের হিসাবের মধ্যে রয়েছেন নান্নু। হিরাঝিলের অলিগলিতে দেয়াল ঘড়ির পোস্টারই বেশি চোখে পড়ল। ফাঁকে ফাঁকে আছে আইভীর পোস্টার। তৈমুরের পক্ষে নতুন করে পোস্টার লাগাতেও দেখা গেল এখানে।
কদমতলি এলাকায় তিন প্রার্থীর পোস্টার দেখা গেল ঠাসাঠাসি করে। প্রচারে সবাই সমান। তবে প্রচারই এবারের নির্বাচনের সবকিছু নয়_ বললেন এলাকাবাসী মরিয়ম বেগম। তার মন্তব্য, এবার সবাই চোখ-কান খোলা রেখে ভোট দেবে। সন্ত্রাস কিংবা প্যাঁচের রাজনীতি এবার কোনো কাজে আসবে না বলে তিনি মত দেন। তাহলে এবারের নির্বাচনের রাজনীতি কী_ জানতে চাইলে তিনি মুচকি হেসে বলেন, ভালোবাসার রাজনীতি।
নারায়ণগঞ্জ শহর
সবকিছুর পর নির্বাচনী উত্তেজনা সবচেয়ে বেশি নারায়ণগঞ্জ শহরকে ঘিরেই। সকাল থেকে হেভিওয়েট তিন মেয়র প্রার্থীসহ কাউন্সিলর প্রার্থীদের বিরামহীন প্রচারে মুখরিত নারায়ণগঞ্জ শহর। শহরময় শুধু পোস্টার আর পোস্টার। চলছে মাইকিং, গণসঙ্গীত। কে যে প্রচারে এগিয়ে আছেন, বলা মুশকিল।
গত তিন দিন প্রেস ক্লাব এলাকাসহ শহরের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃৃতিক জোটসহ গণসঙ্গীত শিল্পীদের নিয়ে এসে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন দেয়াল ঘড়ি মার্কার মেয়র প্রার্থী শামীম ওসমান। অন্য দুই হেভিওয়েট প্রার্থীর পক্ষে এ ধরনের সাংস্কৃৃতিক প্রচার চোখে পড়েনি। অন্য দুই হেভিওয়েট প্রার্থীর মধ্যে দোয়াত কলম মার্কার প্রার্থী আইভীর সমর্থকরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চাচ্ছেন। তার পক্ষে গঠিত সম্মিলিত নাগরিক পরিষদ শহর চষে বেড়াচ্ছে ভোটের প্রচার চালিয়ে। চলছে দোয়াত কলম মার্কার মাইকিং। অন্যদিকে আনারস মার্কার প্রার্থী তৈমুরের কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে আছেন ঢাকা থেকে আসা বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা। একেক জন কেন্দ্রীয় নেতা একেকটি গ্রুপে ভাগ হয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন। গতকাল বুধবারও তার পক্ষে শহরে পাঁচটি গ্রুপ প্রচারণায় নামে। তিন প্রার্থীর সমানে সমান প্রচারে ভোটের হাওয়ার ঝড়ো বাতাসে এখন উত্তাল নারায়ণগঞ্জ শহর।
নারায়ণগঞ্জ শহর এলাকায় ভোটার সংখ্যা প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার। এই পৌরসভায় গত আট বছর নির্বাচিত মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন সেলিনা হায়াৎ আইভী। স্থানীয় এলাকাবাসী, রাজনৈতিক কর্মী এবং বিভিন্ন সূত্রের অভিমত, শহর এলাকায় জনসমর্থনের বিচারে ভোটের মাঠে অনেকটা এককভাবে এগিয়ে আছেন সেলিনা হায়াৎ আইভী। তার সঙ্গে সমান তালে পাল্লা দিয়ে ভোটের মাঠে নিজের অবস্থান দৃঢ় করার বিরামহীন চেষ্টা করছেন সাবেক সাংসদ শামীম ওসমান। দলীয় সমর্থন তার পক্ষে যাওয়ার কারণে তার মাঠের প্রচারণাও বেশি। তবে শহর এলাকার ভেতরে তৈমুর আলম খন্দকারের প্রভাব কিছুটা কম বলেই মনে করছেন স্থানীয়রা। অবশ্য গত দু'দিনের প্রচারণায় তিনিও সামনে চলে এসেছেন। স্থ্থানীয়দের অধিকাংশের অভিমত, শহর এলাকায় মূল লড়াই হবে সেলিনা হায়াৎ আইভী এবং শামীম ওসমানের মধ্যে। এখন পর্যন্ত শহরে ভোটের অঙ্কে আইভী এগিয়ে থাকলেও ৩০ অক্টোবরের ফলাফলই বলে দেবে লড়াইয়ের আসল চিত্র। শহরে কেউই ভোটের ব্যাপারে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চাচ্ছেন না। সাধারণ আলাপেও যেন অজানা ভয়। তবে ভয়-ভীতি দেখানোর বিক্ষিপ্ত অভিযোগ এলেও বড় কোনো অভিযোগ এখন পর্যন্ত আসেনি। শেষ মুহূর্তে কী ঘটবে_ কেউই বলতে পারছেন না।
টাকার খেলা শুরু!
বন্দর এলাকার ২১ নং ওয়ার্ড এলাকায় এক যুবলীগ কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, গত সোমবার রাাত থেকে টাকার খেলা শুরু হয়েছে। ২১ নং ওয়ার্ড এলাকায় দু'জন কাউন্সিলর প্রার্থী রাতে ঘুরে ঘুরে ভোটারদের তিন থেকে চারশ' টাকা করে দিয়েছেন। এর মধ্যে একজন বিএনপি সমর্থক হিসেবে পরিচিত, অন্যজনের রাজনৈতিক পরিচয় নেই। তবে তারা দু'জনেই একজন হেভিওয়েট মেয়র প্রার্থীর পক্ষেও কাজ করছেন। আর একজন মেয়র প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার ওয়াদা করলে এক হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। টাকা নিলে ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি রেখে দেওয়া হচ্ছে, শপথ করানো হচ্ছে মাথায় হাত রেখে। তার অভিমত, অনেকে টাকা নিচ্ছে কিন্তু ভোট দেওয়ার বেলায় কথা রাখবে কি-না সন্দেহ। অনেকে ভয়েই টাকা নিচ্ছে। স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, ২৭টি ওয়ার্ডে ২৫০ জন প্রার্থীর মধ্যে ৫০ শতাংশের বেশি প্রার্থী দাঁড়িয়েছেন একজন প্রার্থীর সমর্থনে। আর সেই মেয়র প্রার্থীর ভোটে টাকার খেলার রাজনীতি করছেন মেয়র প্রার্থীদের মাধ্যমেই। হেভিওয়েট প্রার্থীদের টাকার খেলা আগামী দুই রাতে বেশি চলবে বলে সূত্রের অভিমত।
আরও কিছু হিসাবনিকাশ
ভোটের অঙ্কে ভোটের দিন বিভিন্ন কেন্দ্রে এজেন্ট নিয়োগ একটি বড় খেলা বলেও মনে করেন অনেকে। সেই বিচারে কাউন্সিলর পদে অসংখ্য ডামি প্রার্থী এবং মেয়র পদে ডামি প্রার্থী দেওয়ার রাজনীতি হচ্ছে_ কোন কোন হেভিওয়েট মেয়র প্রার্থীর পক্ষে কেন্দ্রে অনেক বেশি এজেন্ট রাখা যাবে। এই এজেন্টদের মাধ্যমে কেন্দ্রের ভেতরে সূক্ষ্ম প্রচারণাসহ সুযোগ বুঝে কেন্দ্রের দখলও নেওয়া যায়। আবার ভোটার পরিচয় নিয়ে সন্দেহ থাকলেও এজেন্টরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে ডামি প্রার্থী আর এজেন্টের অঙ্কে একজন হেভিওয়েট মেয়র প্রার্থীর কর্মকাণ্ডই চোখে পড়ছে। অন্য দু'জন প্রার্থীর এই অঙ্ক এখনও দৃশ্যমান নয় বলেই অভিমত স্থানীয়দের।
প্রশাসনের সূক্ষ্ম ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়েও অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে গতকাল বুধবার ইভিএমের মহড়ায় মেয়র পদের প্রতীক হিসেবে ঘড়ির ব্যবহার নিয়ে আইভী এবং তৈমুর জোরালো অভিযোগ তুলেছেন। কিছু পুলিশ সদস্যের ভূমিকা নিয়েও এই দুই প্রার্থীর পক্ষ থেকে দফায় দফায় অভিযোগ উঠেছে। নারায়ণগঞ্জবাসীর অভিমত, এবারের মতো ভোটের মাঠে এত জটিল অঙ্ক, এত চুলচেরা হিসাবনিকাশ আর কখনও দেখা যায়নি। তবে অঙ্ক যতই জটিল থাকুক, শেষ বিচারে সবাই যেন শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অবাধে ভোট দিতে পারেন_ এটাই সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা।

No comments

Powered by Blogger.