শেষ বি-৫৩ বোমা নিষ্ক্রিয় করল যুক্তরাষ্ট্র-স্নায়ুযুদ্ধের সময় বানানো হয়েছিল এ বোমা

যুক্তরাষ্ট্র তার সবচেয়ে পুরনো, বড় ও শক্তিশালী পরমাণু বোমাটি নিষ্ক্রিয় করেছে। কর্মকর্তারা বলছেন, ১৯৬২ সালে তৈরি এই বি-ফিফটি-থ্রি বোমাটি নিষ্ক্রিয় করার ফলে স্নায়ুযুদ্ধের একটি অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটল।যুক্তরাষ্ট্রের টেঙ্াস অঙ্গরাজ্যের আমারিলো শহরের প্যানটেঙ্ পরমাণু স্থাপনায় গত মঙ্গলবার শেষ বি-ফিফটি-থ্রি বোমাটি বিভিন্ন অংশে ভাগ করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রে পরমাণু বোমা তৈরি, বোমার রক্ষণাবেক্ষণ ও বোমা নিষ্ক্রিয় করার কাজ এখন শুধু প্যানটেঙ্ স্থাপনাতেই হয়। বোমার ভেতরে ইউরেনিয়াম অংশ থেকে ১৩৬ কিলোগ্রাম বিস্ফোরক আলাদা করা হয়। ছোট একটি গাড়ির আকারের ধূসর রঙের এ বোমার ওজন প্রায় সাড়ে চার হাজার কিলোগ্রাম।


১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট 'লিটল বয়' নামের যে পরমাণু বোমাটি জাপানের হিরোশিমা নগরে ফেলা হয়, বি-ফিফটি-থ্রি বোমাটির বিধ্বংসী ক্ষমতা তার চেয়েও প্রায় ৬০০ গুণ বেশি ছিল। এক লাখের বেশি মানুষের প্রাণ কেড়ে নেওয়া লিটল বয় কেবল ১২ কিলোটন (দশমিক শূন্য এক দুই মেগাটন) তেজস্ক্রিয়া উৎপাদন করতে পেরেছিল। কিন্তু বি-ফিফটি-থ্রি বোমাটি ৯ মেগাটন তেজস্ক্রিয়া উৎপাদনে সক্ষম। আকার ও ওজন এত বেশি যে একটি বি-ফিফটি-টু বোমারু বিমান কেবল দুটি বি-ফিফটি-থ্রি বোমা বহন করতে পারে। ফেডারেশন অব আমেরিকান সায়েন্টিস্টসের বিজ্ঞানী হ্যান্স কিরস্টেনসেন বলেন, 'স্নায়ুযুদ্ধের সময় পরাশক্তিগুলোর উদ্ভাবিত মাল্টি-মেগাটন বোমাগুলোর মধ্যে রয়ে যাওয়া সর্বশেষ বোমা ছিল এটি। এর মাধ্যমে আগ্রাসী অস্ত্রযুগের সমাপ্তি ঘটল।'
বি-ফিফটি-থ্রি বোমাটি ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্রভাণ্ডারে মোতায়েন ছিল। প্যানটেঙ্ স্থাপনার মুখপাত্র ক্রেগ কানিংহ্যাম বলেন, 'এ বোমা নিষ্ক্রিয় করার মাধ্যমে বিশ্ব অধিকতর নিরাপদ হলো। এটি প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার পরমাণু অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ নীতির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ।' গত মে মাসে প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্র তার পরমাণু অস্ত্রের হিসাব প্রকাশ করে। ২০০৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হিসাবে, সক্রিয় ও নিষ্ক্রিয় মিলিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পাঁচ হাজার ১১৩টি পরমাণু অস্ত্র রয়েছে। সূত্র : এএফপি, বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.