ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদন-জলবায়ু পরিবর্তনে দুর্যোগের ঝুঁকির শীর্ষে বাংলাদেশ

লবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর তালিকায় বাংলাদেশ শীর্ষস্থানে রয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভারত। তৃতীয় অবস্থানে মাদাগাস্কার। গতকাল বুধবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে (ক্লাইমেটচেঞ্জ ভালনার‌্যাবিলিটি ইনডেঙ্-সিসিভিআই) এ তথ্য দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, আফ্রিকা ও দক্ষিণ এশিয়ায় বাস করা বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষ ইউরোপের উন্নত দেশগুলোর তুলনায় অনেক বেশি ঝুঁকির মধ্যে বসবাস করছে।


বৈশ্বিক ঝুঁকির বিষয়ে যুক্তরাজ্যভিত্তিক বিশ্লেষক ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ম্যাপলক্রফট প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে। খরা, সাইক্লোন, দাবানল ও ঝড়ের প্রবণতা এবং এসবের পরিণতি হিসেবে পানির সমস্যা, খাদ্যাভাব ও সমুদ্রে জমি তলিয়ে যাওয়ার মতো বিষয়গুলো সিসিভির সূচকের (ইনডেঙ্) অন্তর্ভুক্ত। এ ছাড়া একটি দেশ এসব দুর্যোগের বিপরীতে কতটা দুর্বল ও ভবিষ্যতে এসব দুর্যোগ মোকাবিলায় দেশটির কী সক্ষমতা রয়েছে, তাও এর মধ্যে বিবেচনা করা হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আগামী ৩০ বছরে যে প্রতিকূলতা সৃষ্টি হবে, এর পরিপ্রেক্ষিতে এসব সূচকের ভিত্তিতে বিশ্বের ১৭০টি দেশের ওপর সমীক্ষা চালিয়ে এ ফল প্রকাশ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, বাতাসের তাপমাত্রা, আর্দ্রতা, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতার মতো বিষয় বাড়ার কারণে ওই সময়ের মধ্যে দেশগুলো আরো বেশি ঝুঁকির সম্মুখীন হবে।
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের বিপরীতে একটি দেশ কতটা দুর্বল অবস্থানে রয়েছে, তা নিরূপণ করতে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত মোট ৪২টি বিষয় মূল্যায়ন করা হয়েছে। এর রয়েছে তিনটি মূল ক্ষেত্র। একটি হলো জলবায়ু সম্পর্কিত প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রকোপ ও সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি; মানুষের সংবেদনশীলতা (জনসংখ্যার কাঠামো, উন্নয়ন, প্রাকৃতিক সম্পদ, কৃষিনির্ভরতা ও দ্বন্দ্বের প্রেক্ষাপটে); এবং তৃতীয়ত জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ভবিষ্যৎ দুর্যোগ মোকাবিলায় একটি দেশের সরকারের সক্ষমতা ও অবকাঠামো মূল্যায়ন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে রয়েছে চরম দারিদ্র্য ও কৃষির ওপর অতি-নির্ভরশীলতার সংস্কৃতি। পাশাপাশি জলবায়ুর পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবিলায় দেশটির সরকারের সক্ষমতা অন্য দেশগুলোর চেয়ে অনেক কম। মূলত এসব ব্যাপারই ঝুঁকির তালিকায় বাংলাদেশের শীর্ষে অবস্থানের কারণ। এ ছাড়া বাংলাদেশে খরা ও বন্যা_দুটি দুর্যোগেরই প্রবণতা অনেক বেশি। এসব নেতিবাচক দিকের পাশাপাশি অবশ্য প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০০০ থেকে ২০০৮ সালের মধ্যে দেশটির অর্থনীতি ৮৮ শতাংশ বেড়েছে এবং আইএমএফের (ইন্টারন্যাশনাল মনিটারি ফান্ড বা আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল) পূর্বাভাস অনুযায়ী ২০১০ সালের পর আরো ৫.৪ শতাংশ এবং আগামী ৫ বছরে আরো ৬.২ শতাংশ বাড়বে।

No comments

Powered by Blogger.