হোয়াইটওয়াশের পরও ধোনির আক্ষেপ

মাঠ প্রস্তুত ছিল না বলে ২০১১ বিশ্বকাপের ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচ কলকাতার ইডেন গার্ডেনস থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল বেঙ্গালুরুতে। তা নিয়ে কত হৈচৈ। অথচ আট মাস পর সেই ইডেনসেই যখন ইংল্যান্ডের মুখোমুখি ভারত, তখন গ্যালারিতে মাছি উড়ছে! ভেংচি কেটে হাসছে ৬০ হাজার দর্শক ধারণ ক্ষমতার স্টেডিয়ামের ফাঁকা গ্যালারি। তাই দেশের মাটিতে ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করার দিনে ইডেনসে দেখা গেল না তেরঙ্গার ঢেউ, শোনা গেল না দর্শকদের আকাশ-বাতাস কাঁপানো উল্লাস।


প্রায় খালি গ্যালারির সামনেই মোটরবাইকে চড়ে মহেন্দ্র সিং ধোনিদের 'ভিক্টরি ল্যাপ', শিশিরে প্রায় হাত ফসকে যাওয়া ম্যাচে নাটকীয়ভাবে ফিরে এসে ৯৫ রানের জয়ের চাক্ষুষ সাক্ষীর সংখ্যাটা কমই।তবুও তো জয়! ২৭২ রানের লক্ষ্যে প্রথম উইকেট জুটিতে ইংল্যান্ডের তরতর করে এগিয়ে যাওয়ায় তৈরি হয়েছিল হোয়াইটওয়াশ নিয়ে শঙ্কা। কিন্তু রবীন্দ্র জাদেজার জাদুকরী স্পেল ম্যাচে ফিরিয়েছে ভারতকে, অনেকটা তাঁর কৃতিত্বেই ১২৯ রানের উদ্বোধনী জুটির পরও ইংল্যান্ড গুটিয়ে গেছে ১৭৬ রানে। ম্যাচ শেষে ধোনির কণ্ঠে সিরিজ জয়ের তৃপ্তির সঙ্গে ফুটে উঠল ফাস্ট বোলারদের নিয়ে শঙ্কাও। বেশির ভাগ ম্যাচেই যে নির্ধারিত ১০ ওভারের কোটা পূরণ করতে পারছেন না পেসাররা, 'সিরিজ জয়ের অনুভূতিটা অবশ্যই অসাধারণ, তবে আমাদের ফাস্ট বোলাররা কিন্তু বেশির ভাগ ম্যাচেই ১০ ওভারের কোটা শেষ করতে পারছে না। আমাদের বুঝতে হবে, এই দুর্বলতা নিয়ে সব সময় পার পাওয়া যাবে না। তারা হয়তো জোরে বল করছে, কিন্তু রানের ধারায় রেশ টানতে পারছে না। তাদের আরো মিতব্যয়ী হতে হবে আর ওভারপ্রতি একটা করে বাউন্ডারি দেওয়াটা থামাতে হবে।'
সিনিয়র ক্রিকেটারদের ছাড়াই অনায়াসে সিরিজ জয়, তাহলে কি ওয়ানডে থেকে ব্রাত্যই হতে চললেন 'মহারথী'রা। বরাবরই তারুণ্যের জয়গান গাওয়া ধোনি এমন প্রশ্নে খানিকটা কূটনীতির আশ্রয় নিলেন, 'প্রতিভার পাল্লায় সিনিয়র ক্রিকেটারদের বিকল্প খুঁজে পাওয়াটা কঠিন। তবে এই তরুণরা কিন্তু দল হিসেবে ভালো করেছে। তারা ফিল্ডার হিসেবেও ভালো, গোটা ম্যাচে তারা ৮-১০টা রান বাঁচায়, সীমিত ওভারের খেলায় যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তারা ধৈর্য ধরেছে আর নিজেদের প্রমাণ করার মুহূর্তে জ্বলে উঠেছে। তবে সত্যি বলতে কি, আমরা কখনোই শচীন (টেন্ডুলকার), বীরেন্দর (শেবাগ) ও যুবরাজের (সিং) বিকল্প খুঁজে পাব না।'
ধোনির মুখটা যখন হাসি হাসি, অ্যালিস্টার কুকের চেহারায় বিষণ্নতা স্পষ্ট। অধিনায়ক হিসেবে, উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে দারুণ একটা শুরু এনে দিয়েছিলেন। কিন্তু এরপর যা হয়েছে তা রীতিমতো দুঃস্বপ্নের মতো, '৫-০তে সিরিজ হারাটা নিশ্চয়ই কেউ আশা করেনি, আর এই সিরিজটা হেরে যাওয়াটাতো খুবই হতাশার। আমাদের একটা শঙ্কা ছিল যে আমাদের চটজলদি একাধিক উইকেট পড়ে যায়, কিন্তু এ যে হুড়মুড়িয়ে ১০ উইকেট পড়ে গেল।' তবে ৫-০তে সিরিজ হারের মধ্যেও আশার আলো দেখছেন কুক, 'ফিনের বোলিংটা ভালো হয়েছে। তরুণ দলের জন্য অনেক কিছুই শেখার ছিল এখানে।'
সিরিজের বিজ্ঞাপনে ছিল 'বদলা', কিন্তু এর পরও গ্যালারিতে ভাটার টান। ধোনি অবশ্য বাণিজ্যিক ব্যর্থতার কারণ হিসেবে দেখছেন টেন্ডুলকারের অনুপস্থিতিকেই, 'শচীনের মতো বড় তারকা নেই, আর এটা ভারতের অন্যতম বড় একটা স্টেডিয়াম। এখানে গ্যালারি ভরাটা খুব একটা সহজ নয়।' ক্রিকইনফো

No comments

Powered by Blogger.