'সোনার মানুষ' সম্মাননা দিল রামরু-ভিসা পেতে ঘুষ দিতে হচ্ছে শ্রমিকদের : অর্থমন্ত্রী

ৎপাদনশীল খাতে প্রবাসী আয় বিনিয়োগের মাধ্যমে উন্নয়নে অবদান রাখায় ব্যক্তি ও সংগঠন পর্যায়ে সম্মাননা দিয়েছে রিফিউজি ও মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিট (রামরু)। গতকাল ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে 'সোনার মানুষ' ও 'সেরা রেমিট্যান্স ব্যবহারকারী' নামে এ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, এখনো শ্রমিকদের বিদেশে যেতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। তাঁদের ভিসা পেতে দালালি ফি ও ঘুষ দিতে হচ্ছে।


রামরুর সোনার মানুষ সম্মাননা পেয়েছেন টাঙ্গাইলের করটিয়ার ভাতকুড়া গ্রামের ১২ সদস্যের এক দরিদ্র পরিবারের সন্তান মো. ইসমাইল হোসেন। তাঁর সম্পর্কে বলা হয়েছে, অভাবের তাড়নায় ইসমাইল অল্প বয়সেই তাঁত কারখানায় মাকু ঠেলত। ১৯৯০ সালে ইসমাইল সৌদি আরবে যান। পাঁচ বছর পর ছুটিতে এসে তিন একর জমি কেনেন তিনি। পরে আরো পাঁচ বছর সৌদি আরবে থাকার পর একেবারে দেশে ফিরে এসে ১০০ শতাংশ জমিতে ৩৬টি মেশিন নিয়ে তাঁতের কারখানা গড়েন তিনি। এখন তাঁর কারখানায় কর্মরত তাঁতির সংখ্যা ২০০। প্রতিদিন ১৫০ থেকে ২০০ পিস শাড়ি তৈরি হয় ইসমাইলের কারখানায়।
সেরা রেমিট্যান্স ব্যবহারকারীর সম্মাননা পেয়েছেন চট্টগ্রামের হাইদগাঁও গ্রামের আবদুল মান্নানরা পাঁচ ভাই। ২০ বছর আগে বড় ভাই নাসির উদ্দিন যান আবুধাবিতে। শ্রমিক হিসেবে কাজ করার পর সেখানে একটি দোকান দেন তিনি। ওই দোকানের মাধ্যমে দুটি ভিসা বের করে আরো দুই ভাইকে নিয়ে যান সংযুক্ত আরব আমিরাতে। তিন ভাইয়ের আয় দিয়ে সেখানে রেস্টুরেন্টের ব্যবসা শুরু করেন তাঁরা। এরপর নিয়ে যান আরেক ভাইকে। ছোট দোকানটি বেড়ে বেড়ে একসময় সুপারমার্কেটে পরিণত হয়। ছেলেদের পাঠানো টাকায় বাবা আবদুল মান্নান ৪০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে একটি লবণের কারখানা গড়ে তোলেন। সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের শ্রমিকরা বিদেশে যাওয়ার আগেই ভবিষ্যতে জানতে পারবেন, তাঁরা কোথায় গিয়ে কী কাজ করবেন, কত টাকা বেতন পাবেন। এখন কেবল দুবাইয়ের ক্ষেত্রে তা জানা সহজ হয়েছে। তিনি বলেন, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক ১০০ দিনের মধ্যে ঋণ দিয়ে অনেককেই বিদেশে যেতে সহায়তা করেছে। তাদের কোথাও ঘুষ দিতে হয়নি বলে কম খরচেই বিদেশে যেতে পারছেন তাঁরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান তাঁর লিখিত বক্তব্যে বলেন, 'আমাদের জনশক্তির ৫৫ শতাংশই অদক্ষ। তাদের আয়ের পরিমাণও কম। মেধানির্ভর দক্ষ জনশক্তি বিদেশে রপ্তানির মাধ্যমে রেমিট্যান্স প্রবাহ বহুগুণ বাড়ানো সম্ভব।' রামরুর সভাপতি ড. তাসনিম সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ২০১০ সালে অভিবাসীরা ১১ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার দেশে পাঠিয়েছে। এটি পোশাক শিল্প থেকে প্রাপ্ত বৈদেশিক আয়ের তিনগুণ।

No comments

Powered by Blogger.