শ্রমিকদের নূ্যনতম মজুরি বাড়াল চীন

নূ্যনতম মজুরি প্রায় ২২ শতাংশের মতো বাড়িয়েছে চীন। বিশ্ব অর্থনীতিতে সংকট সত্ত্বেও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে গত সেপ্টেম্বরে ২১ দশমিক ৭ শতাংশ হারে নূ্যনতম মজুরি ঘোষণা করে বেইজিং। চীনে মজুরি বাড়ার ফলে বাংলাদেশসহ পোশাক খাতের অন্যান্য প্রতিযোগী দেশ লাভবান হবে বলে কেপিএমজিসহ আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থাগুলো মন্তব্য করেছে।পোশাক খাতের ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিজিএমইএ আশা করছে, বর্ধিত চীনা মজুরি বাংলাদেশের পোশাক খাতের জন্য বড় সুখবর। তবে এক বছর আগে মজুরি বাড়ানো হলেও নতুন করে আর বাড়ানোর সুযোগ নেই বলে জানান সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান।


এদিকে আগামী ঈদের পরই নতুন করে বেতন বাড়ানোর দাবিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে শ্রমিক সংগঠনগুলো।চীনা মানবসম্পদ ও সামাজিক নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রণালয় জানায়, চীনের ৩১ প্রদেশের মধ্যে ২১টির জন্য নতুন বেতন কাঠামো কার্যকর হবে। চীনের অর্থনৈনিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ২ রাজ্য হংকং এবং শেনজেনে মজুরি বেড়েছে সর্বোচ্চ হারে। এ দুই রাজ্যে মাসিক মজুরি ২০৭ ডলারের সমান স্থানীয় এক হাজার ৩২০ ইউয়ান। বেইজিংয়ে ঘণ্টাপ্রতি ২ ডলারের সমান ১৩ ইউয়ান। কেপিএমজির তথ্য মতে, এ নতুন হারসহ চীনা মজুরি এখন বাংলাদেশ এবং দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রায় চারগুণ। ফলে বিশ্বব্যাপী চীনা পণ্যের দাম বেড়ে যেতে পারে। তবে চীনা প্রযুক্তি ও অবকাঠামো সুবিধায় চীনের জন্য বাড়তি খরচ কোনো সমস্যা করবে না বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
এ প্রসঙ্গে দেশের সবচেয়ে বড় শ্রমক্ষেত্র পোশাক খাতের নূ্যনতম মজুরি নিয়ে জানাতে চাইলে সিদ্দিকুর রহমান গতকাল জানান, 'চীনের দক্ষ শ্রমিক, পরিকল্পিত অবকাঠামো এবং স্বল্প সুদে ব্যাংক ঋণসহ ৬২টি ভর্তুকি পাচ্ছে। ফলে মজুরি আরও কয়েকগুণ বাড়াতে চীনের কোনো সমস্যা নেই। চীনা এক শ্রমিক বাংলাদেশের তিন শ্রমিকের সমান কাজ করতে পারে। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নিয়ে তারা কাজে আসে। আমরা অশিক্ষিত, অদক্ষ লোক নিয়ে কাজ করি। কাজ শেখানোর পর মহিলা শ্রমিকদের বিয়ে হয় যায়। কারখানায় আবার দক্ষ শ্রমিকের অভাব পড়ে।' তিনি জানান, কোটি কোটি টাকায় কেনা মেশিনারিজের ২৫ শতাংশ উৎপাদন ক্ষমতা কাজে লাগানো যায় না দক্ষ শ্রমিক সংকটে। অবকাঠামো, ব্যাংক ঋণসহ বাকি সবক্ষেত্রেই চীনের তুলনায় বাংলাদেশের চিত্র সম্পূর্ণ বিপরীত। ফলে এক বছর আগে বেতন বাড়ানোর পর এখন আর এ নিয়ে তাদের কোনো চিন্তা নেই।
আগামী ঈদের পরই নতুন করে বেতন বাড়ানোর দাবি নিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছে শ্রমিক সংগঠনগুলো। জাগো বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক ফেডারেশন সভাপতি বাহারানে সুলতান বাহার গতকাল বলেন, 'দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে বর্তমান নূ্যনতম মজুরি দিয়ে জীবিকা নির্বাহ মুশকিল। আমরা ঈদের পর ৫০ শতাংশ হারে মহার্ঘ্য ভাতা বৃদ্ধিসহ বেতন বাড়ানো নিয়ে সরকার এবং পোশাক ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে কথা বলব।'

No comments

Powered by Blogger.