কষ্টের জয়ে শীর্ষে বার্সা

বার্সেলোনার স্ট্রাইকারদের সঙ্গে যেন গোলের শত্রুতা তৈরি হয়েছে। স্ট্রাইকারদের ব্যর্থতায় আগের ম্যাচে সেভিয়ার সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করেছিল। মঙ্গলবারও সেই ব্যর্থতা থেকে বের হয়ে আসতে পারেনি। তাই গ্রানাডার বিপক্ষে জয় মাত্র এক গোলে। ফ্রি কিক থেকে জাভি হার্নান্দেজের করা গোলটিই ড্রর হাত থেকে রক্ষা করেছে বার্সেলোনাকে। এ জয়ে স্বল্প সময়ের জন্য হলেও তারা ফিরে এসেছে শীর্ষে। সেভিয়ার সঙ্গে ড্র বার্সেলোনাকে শীর্ষস্থান থেকে ছিটকে দিয়েছিল। তাদের টপকে রিয়াল মাদ্রিদ দ্বিতীয় স্থানে এবং লেভ্যান্তে উঠে গিয়েছিল শীর্ষে। নিজ নিজ ম্যাচে জয় পেলে লেভ্যান্তে আবার শীর্ষে চলে আসবে।


বার্সেলোনা তৃতীয় স্থানে নেমে রিয়াল মাদ্রিদকে দ্বিতীয় স্থানটি ছেড়ে দেবে। ৯ ম্যাচে বার্সেলোনার সংগ্রহ ২১ পয়েন্ট। ৮ ম্যাচ শেষে লেভ্যান্তে ও রিয়ালের সংগ্রহ যথাক্রমে ২০ ও ১৯ পয়েন্ট।
মঙ্গলবারের এক গোল নিয়ে গত পাঁচ ম্যাচে বার্সেলোনা মাত্র সাত গোল করেছে। গ্রানাডার বিপক্ষে বার্সেলোনাকে এ জয় পেতে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে। অথচ পয়েন্ট টেবিলের অবস্থান বার্সেলোনার সহজ জয়ের ইঙ্গিত দিয়েছিল। মাত্র ৫ পয়েন্ট নিয়ে নিচের দিক থেকে দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান গ্রানাডার। জয় মাত্র এক ম্যাচে। ড্র দুই ম্যাচে। স্বাভাবিকভাবেই বার্সেলোনার আক্রমণভাগের সামনে উড়ে যাওয়ার শঙ্কা ছিল গ্রানাডার; কিন্তু বার্সেলোনার সব আক্রমণ সফলতার সঙ্গে রুখে দিয়েছে গ্রানাডা। ম্যাচ থেকে এক পয়েন্ট সংগ্রহ করার যাবতীয় আয়োজনই তারা করেছিল। এ জন্য প্রায় পুরো দলই রক্ষণকাজে করেছিল মনোনিবেশ। যে কারণে বার্সেলোনার আক্রমণগুলো গ্রানাডার গোল সীমানার কাছে এসে থমকে যায়। এমনভাবে গোলের সামনে জটলা তৈরি করেছিল যে, বার্সেলোনার কোনো স্ট্রাইকার ভালোভাবে শট নেওয়ার সুযোগ পাননি। তারপরও যেসব শট তারা নিয়েছে তার কতগুলো পোস্টের বাইরে দিয়ে, আবার কতগুলো গোলরক্ষক রুখে দিয়েছেন। ফলে গ্রানাডার চেয়ে তিনগুণ সময় বল নিয়ন্ত্রণে রেখেও ব্যবধান বাড়াতে পারেনি তারা। ৩৩ মিনিটে জাভি হার্নান্দেজের দুর্দান্ত ফ্রিকিকই বার্সেলোনাকে জয়ের পথ দেখায়। গ্রানাডার খেলোয়াড়দের তৈরি মানব দেয়ালকে ফাঁকি দিয়ে জাভির বাঁকানো শট জালে আশ্রয় নিলে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বার্সেলোনা। এ গোলের মাঝ দিয়ে জাভি তার ৩৯২তম ম্যাচটি স্মরণীয় করে রাখলেন। এ ম্যাচে জাভি বার্সেলোনার হয়ে সর্বাধিক ম্যাচ খেলার কৃতিত্ব দেখালেন। ৩৯১ ম্যাচ খেলে এতদিন রেকর্ডটি নিজের করে রেখেছিলেন ডিফেন্ডার মিগুয়েইলিকে।
গ্রানাডার রক্ষণভাগ বার্সেলোনার জন্য এতটাই নিশ্ছিদ্রভাবে তৈরি হয়েছিল যে, শেষ ৩৭ মিনিট গ্রানাডা ১০ জন নিয়ে খেললেও তা থেকে মেসিরা কোনো সুবিধাই আদায় করতে পারেননি। গ্রানাডা অবশ্য ম্যাচ শেষ করে ৯ জন নিয়ে। অতিরিক্ত সময় খেলানোর প্রতিবাদ করে গ্রানাডা স্ট্রাইকার ড্যানি বেনিতেজ লাল কার্ড দেখেন।
প্রতিপক্ষ অপেক্ষাকৃত দুর্বল চিন্তা করেই এ ম্যাচে ডেভিড ভিয়া, আন্দ্রে ইনিয়েস্তা ও কার্লোস পুওলকে প্রথম একাদশে রাখেননি কোচ পেপ গার্দিওলা। যুব দলের আইজ্যাক কুয়েঙ্কাকে রেখেছিলেন প্রথম একাদশে। বদলি খেলোয়াড় হিসেবে ভিয়া ও ইনিয়েস্তা মাঠে নামলেও ব্যবধান বাড়াতে পারেননি। আগের ম্যাচে পেনাল্টি থেকে গোল করতে না পারা মেসি এ ম্যাচে ব্যর্থতা থেকে বের হয়ে আসতে পারেননি। সমর্থকদের ভোটে 'ফ্লপ অব দ্য ম্যাচ' নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।

No comments

Powered by Blogger.