মধ্যপ্রদেশে ৫ হিন্দু ধর্মগুরুকে মন্ত্রীর মর্যাদা দিল বিজেপি, কংগ্রেসের সমালোচনা

এই পাঁচ হিন্দু ধর্মগুরুকে মন্ত্রীর মর্যাদা দিল বিজেপি
ভারতে বিজেপিশাসিত মধ্য প্রদেশে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে পাঁচ হিন্দু ধর্মগুরুকে মন্ত্রীর মর্যাদা দেয়ায় তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
গতকাল (বুধবার) মধ্য প্রদেশ সরকারের পক্ষ থেকে নর্মদানন্দ মহারাজ, হরিহরানন্দ মহারাজ, কম্পিউটার বাবা, ভায়ু মহারাজ এবং পণ্ডিত যোগেন্দ্র মহন্তকে প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়।
রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতা রাজ বব্বর সরকারি ওই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলেছেন, ‘বিজেপি নির্বাচনে জয়ের জন্য গেরুয়াধারীদের ব্যবহার করতে চাচ্ছে। উত্তরপ্রদেশে গেরুয়াধারীকে মুখ্যমন্ত্রী করে কী হাল হয়েছে, তার থেকে ওদের শিক্ষা নেয়া উচিত।’
কংগ্রেসের বক্তব্য, মধ্য প্রদেশে তোষণের রাজনীতি করছে বিজেপি। কংগ্রেসের মুখপাত্র পঙ্কজ চতুর্বেদী বলেন, ‘এটা চটকদারি রাজনীতি ছাড়া আর কিছু নয়। মুখ্যমন্ত্রী  ভাবছেন, এ ভাবে তিনি সমস্ত পাপ ধুয়ে ফেলবেন। নর্মদা নদীর তীরে পোঁতা চারাগাছ কোথায় গেল, সেটি যেন সাধুরা তদন্ত করে দেখেন।’
কংগ্রেসের কটাক্ষ, ওই সাধুদের এবার সন্ন্যাসীর মতো ভূমিকা ও আশ্রম ত্যাগ করে এবার পারিবারিক জীবনে ফিরে আসা উচিত!
কিন্তু মধ্যপ্রদেশ বিজেপি’র মুখপাত্র রজনীশ আগরওয়ালের দাবি, সরকার নিয়ম মেনেই কাজ করছে। পাঁচ সাধু নর্মদা সংরক্ষণ নিয়ে কাজ করবেন। তাই তাদের মন্ত্রীর মর্যাদা দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে কোনো রাজনীতি নেই।
বিজেপি সরকারের পক্ষ থেকে আচমকা ওই ঘোষণার পিছনে ধর্মীয় কারণের পাশাপাশি নর্মদা নদী নিয়ে দুর্নীতি বিরোধী আন্দোলন দমন করাও উদ্দেশ্য বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। কারণ, সম্প্রতি যোগেন্দ্র মহন্তকে সঙ্গে নিয়ে ‘নর্মদা ঘোটালা (দুর্নীতি) রথযাত্রা’র ঘোষণা করেছিলেন কম্পিউটার বাবা। তিনি দাবি করেছিলেন, নর্মদা নদী সংরক্ষণ নিয়ে বিরাট দুর্নীতি হয়েছে। এর বিরুদ্ধে তারা আন্দোলনে নামবেন। নর্মদার তীরে ৬ কোটি চারাগাছ পোঁতা নিয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামার ডাক দিয়েছিলেন ওই সাধুরা। চারাগাছ দুর্নীতির প্রতিবাদে এবং নর্মদার তীরে অবৈধ বালি খাদান বন্ধের দাবিতে ১ এপ্রিল থেকে ১৫ মে’র মধ্যে রাজ্যে প্রত্যেক জেলা থেকে ‘নর্মদা ঘোটালা রথযাত্রা’ বের করার কথা ঘোষণা করেছিলেন কম্পিউটার বাবা। ওই আন্দোলনের আহ্বায়ক ছিলেন যোগেন্দ্র মহন্ত। 
অবশেষে মন্ত্রীর মর্যাদা পেয়ে আপাতত রণভঙ্গ করেছেন সাধু বাবারা। কম্পিউটার বাবা ঘোষণা করেছেন, তিনি নর্মদা ঘোটালা রথযাত্রা বাতিল করেছেন। কারণ, নর্মদা নদী রক্ষা নিয়ে তাদের দাবি মেটানো হয়েছে। গত ৩১ মার্চ ওই পাঁচ ধর্মগুরুকে নিয়ে গঠন করা হয়েছে ‘জনজাগৃতি অভিযান সমিতি’।

No comments

Powered by Blogger.