কুমিল্লায় কলেজছাত্রকে গলা কেটে হত্যা

কুমিল্লায় সাগর দত্ত নামে এক কলেজছাত্রকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। এসময় একই কক্ষে সজীব সাহা নামে আরো এক ছাত্রকে গুলিতে আহত করা হয়। আহত সজীবকে আশংকাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মঙ্গলবার শেষ রাতে কুমিল্লা নগরীর রেইসকোর্স এলাকার পান্থপথ গলির বিএইচ ভূঁইয়া হাউজ ভবনের নিচতলার একটি কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। বুধবার সকালে পুলিশ নিহতের লাশ এবং একটি পিস্তল ও একটি ছুরি উদ্ধার করে। ঘটনার পরই পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা আহত সজীবের প্রেমিকা ও তার ভাইকে আটক করতে অভিযান শুরু করে। নিহত সাগর দত্ত কুমিল্লা সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ও জেলার চান্দিনা উপজেলার চিলোরা গ্রামের শংকর দত্তের ছেলে এবং গুলিবিদ্ধ সজীব ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার উজানচর গ্রামের রাখাল সাহার ছেলে ও ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ডিগ্রির ছাত্র। 
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নগরীর রেইসকোর্স এলাকার ভূঁইয়া হাউজ নামের তিন তলা ভবনের নিচতলার ৩টি কক্ষের একটি কক্ষে থাকতো কলেজ ছাত্র সাগর দত্ত (১৮) ও সজিব সাহা (২০) এবং অপর দুই কক্ষে তাদের আরও ৪ সহপাঠী ভাড়ায় থাকতো। ভাড়াটিয়াদের মধ্যে একজনের বোনের সঙ্গে সজীবের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিষয়টি নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরে তাদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। মঙ্গলবার রাতে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। শেষ রাতে পাশের কক্ষের দুই সহপাঠী সজিব-সাগরের কক্ষে প্রবেশ করে সজীবকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালায়। এসময় সজিবকে রক্ষার জন্য তার রুমমিট কলেজ ছাত্র সাগর এগিয়ে এলে তার গলায় ছুরি ধরে মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে দেয় এবং সজিবকে মারধর শুরু করে। একপর্যায়ে সজিবকে গুলি করার সময় তাকে বাঁচাতে সাগর ধস্তাধস্তি শুরু করে। এসময় তারা সাগরকে গলা কেটে হত্যা করে এবং সজিবের বুকের বাম পাশে গুলি করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা গুলিবিদ্ধ সজীবকে উদ্ধার করে প্রথমে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। এ ঘটনার পর ওই ফ্লোরের অন্যান্য কক্ষের ভাড়াটিয়ারা পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে কুমিল্লা জেলা পুলিশ, ডিবি, র‌্যাব ও পিবিআইসহ বিভিন্ন সংস্থার পৃথক টিম ঘটনাস্থলে যায়। এদিকে নিহত সাগরের মরদেহ উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে দুপুরে তার স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানার ওসি আবু ছালাম মিয়া জানান, প্রেম সংক্রান্ত বিষয়ের জের ধরে এ ঘটনাটি ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল ও ধারালো ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশের ৩টি টিমের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.