পণ্যের সঙ্গে বাজার সম্প্রসারণের পরামর্শ প্রধানমন্ত্রীর

বিশ্ব বাজারে কুটির শিল্পের ব্র্যান্ডিং করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নকশি কাঁথা ও সিলেটের শীতল পাটি ইতিমধ্যে ইউনেস্কোর আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য-তালিকায় স্থান পেয়েছে। তাই উদ্যোক্তাদের এ সকল পণ্যের ব্র্যান্ডিং এর পাশাপাশি বাজার সমপ্রসারণের উদ্যোগ নিতে হবে। গতকাল বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘জাতীয় এসএমই মেলা ২০১৮’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে পণ্যের বাজার অনুসন্ধান এবং তাদের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য উৎপাদন করতে হবে। মুষ্টিমেয় কয়েকটি পণ্যের ওপর রপ্তানি নির্ভরশীলতা কমিয়ে আমাদের এখন রপ্তানি বহুমুখীকরণের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। এজন্য সরকার সব ধরনের সহযোগিতা করবে। এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য সহজ শর্তে ঋণ দেয়াসহ বিভিন্ন প্রণোদনা এবং দেশে শিল্প বিকাশে সরকারের নেয়া বিভিন্ন কর্মসূচির কথাও উল্লেখ করেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, উদ্যোক্তাগণ ব্যবসা স্থাপন থেকে শুরু করে ব্যবসা সমপ্রসারণ, ব্যবসায়িক ও কারিগরি প্রশিক্ষণ ও সহায়তা, পরামর্শক সেবা ইত্যাদি এই ওয়ানস্টপ সেন্টার থেকে গ্রহণ করতে পারবে। প্রতিটি বিভাগীয় শহরে প্রদর্শনী ও বিক্রয় কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে পণ্যের প্রদর্শনী ও বিক্রয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। এ ছাড়া এসএমইর বিকাশের মাধ্যমে কর্মসংস্থান বাড়ানোর পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের বিকাশের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে, নারী উদ্যোক্তার সৃষ্টি হবে- সেটাই সরকারের প্রত্যাশা বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, তার সরকারের গৃহীত কর্মসূচির ফলে দেশব্যাপী টেকসই ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পখাতের দ্রুত প্রসার ঘটছে। উদ্যোক্তাবান্ধব নীতির কারণে প্রতিনিয়ত নারীরা ব্যবসায়ে মনোনিবেশ করছে। ফলে দারিদ্র্য বিমোচন, কর্মসংস্থান, নারীর ক্ষমতায়নসহ আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির অনেক সূচকে বাংলাদেশ প্রতিবেশী দেশগুলোকে ছাড়িয়ে গেছে।
উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, দেশীয় কাঁচামালনির্ভর শিল্পায়নের পাশাপাশি অঞ্চলভিত্তিক কাঁচামালের সহজলভ্যতা বিবেচনা করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প স্থাপনে উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসতে হবে। সরকার উদ্যোক্তাদের প্রয়োজনীয় প্রণোদনা ও নীতি সহায়তা প্রদান করবে। মুক্তবাজার অর্থনীতিতে বিভিন্ন দেশের পণ্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে নতুন ও আধুনিক প্রযুক্তি আয়ত্তকরণ এবং পণ্যের গুণগত মানোন্নয়ন অত্যন্ত জরুরি বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। ৫ দিনব্যাপী ষষ্ঠ জাতীয় এসএমই মেলায় সারা দেশ থেকে আসা ২৬৭টি এসএমই প্রতিষ্ঠান তাদের উৎপাদিত পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রি করবে। এর মধ্যে ৬৭ শতাংশই নারী উদ্যোক্তাদের প্রতিষ্ঠান।
অনুষ্ঠানে ‘ঠাণ্ডা লেগে’ প্রধানমন্ত্রীর গলা বসে যাওয়ার কথা বলেন উপস্থাপিকা। ফলে প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণ প্রদান করেননি। এর পরিবর্তে তার ভাষণের লিখিত কপি অনুষ্ঠানে বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান কেএম হাবিব উল্লাহ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী সফল এসএমই উদ্যোক্তাদের মাঝে পুরস্কারও বিতরণ করেন। পরে প্রধানমন্ত্রী মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন এবং উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।

No comments

Powered by Blogger.