সরকার নিজেরাই মারামারি করে নিঃশেষ হয়ে যাবে: এমাজউদ্দীন

বিএনপি কীভাবে চলবে তা নিয়ে কোনো দুশ্চিন্তা নেই বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর এমাজউদ্দীন আহমেদ। তিনি বলেছেন, খালেদা জিয়ার পেছনে জনগণের যে সমর্থন আছে তাতেই সরকার ভীত। জনসাধারণ এরশাদের পতনের সময়ও এক হয়েছিল, এখনও হবে। এজন্য সময় লাগবে। জনগণকে সচেতনতার সঙ্গে কাজ করতে হবে। লক্ষ্য একটাই। সরকার নিজেরাই নিজেদের মধ্যে হানাহানি-মারামারি করে নিঃশেষ হয়ে যাবে। ‘গণতন্ত্রের মাতা খালেদা জিয়া ও আইনজীবী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসসহ সব রাজবন্দির মুক্তির দাবিতে’ গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরাম আয়োজিত এক যুব সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। এমাজউদ্দীন বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন কারাগারে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় তাকে নিয়েও অনেকে সন্দিহান। এদিকে মহাসচিব অসুস্থ, তাহলে বিএনপির সামনের দিনগুলো কীভাবে চলবে? এমন প্রশ্ন অনেকেই আমাকে করেন। কিন্তু এ দল তিনবার রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল। দলটি এক অর্থে সাধারণের দল। এর গঠনতন্ত্রে দল পরিচালনার ব্যাপারে দিকনির্দেশনা দেয়া আছে। প্রথম থেকে দশম পর্যন্ত কার কী ভূমিকা, কে কী করবেন? গঠনতন্ত্র অনুযায়ী যার যা দায়িত্ব তা পালন করলেই চলবে। বিএনপিকে নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা নেই। তিনি বলেন, কারাগারে যাওয়ার আগে খালেদা জিয়া বলে গেছেন মাথানত করার জন্য তার জন্ম হয়নি। দল কীভাবে চলবে সে কথাও তিনি বলে গেছেন। প্রবীণ এ শিক্ষাবিদ বলেন, রাজনীতির স্থিতিশীলতা ছাড়া অর্থনীতির স্থিতিশীলতা দীর্ঘায়িত হয় না। অর্থনৈতিক উন্নয়নের আগে সরকারকে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে হবে। এটা আগেই প্রয়োজন। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার বেশি দিন টিকবে না। দেশের মালিক জনগণ তাই যে সরকার জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় সে সরকারের স্থায়িত্ব বেশি দিন হয় না। এমাজউদ্দিন বলেছেন, খালেদা জিয়ার কষ্ট হয়তো একটু হচ্ছে। তবে নেতাকর্মীদের মনেপ্রাণে সংকল্পবদ্ধ হয়ে নয় মাসের সংগ্রামের মাধ্যমে যুদ্ধ জয়ের পরিস্থিতির মতো একটা পরিস্থিতি আসবে। যুদ্ধ করার সময় আসতে পারে। যে যুদ্ধের জন্য তৈরি হতে হবে। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, ওয়ান ইলেভেনে শেখ হাসিনা যখন আমেরিকায় চলে গেল সেদিন খালেদা জিয়াকে বিদেশ পাঠাতে চাইলেও পারেনি। খালেদা জিয়া গণতন্ত্র রক্ষা করার জন্য বিদেশ যায়নি। তখন আমরাও জেলে গিয়েছি। তবে তখন রাষ্ট্রদ্রোহীর মামলায় গ্রেপ্তার করা হতো। পটপরিবর্তন হলে সব ঠিক হয়ে যেত। এখন ক্রিমিনাল ল’ দিয়ে যেভাবে রাজনীতিকদের বিচার করা হচ্ছে, এটা গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি বলেন, পাকিস্তান আমলে একনায়ক আয়ুব খান ও বাংলাদেশ আমলে স্বৈরাচার এরশাদ বহুবার উন্নয়নের জিগির তুলেছেন। বর্তমানে শেখ হাসিনাও তাই বলছেন। কিন্তু এদেশের মানুষ শুধু উন্নয়ন চায় না, গণতন্ত্রও চায়। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া অসুস্থতার বিষয়ে তিনি বলেন, একজন মন্ত্রী বললেন তিনি অসুস্থ। তারপর মেডিকেল বোর্ড দেখে বললো তিনি অসুস্থ। আমরা সরকারের আনুকূল্য চাই না। আমরা চাই খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা করা হোক। আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা আলহাজ এম এ বাশারের সভাপতিত্বে ও মুহাম্মদ সাইদুর রহমানের সঞ্চালনায় সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, জাতীয় পার্টির (জাফর) প্রেসিডিয়াম সদস্য আহসান হাবিব লিংকন ও বিএনপি নেতা আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ বক্তব্য দেন।

No comments

Powered by Blogger.