পাঁচ বছরের দণ্ড, জেলে সালমান

কৃষ্ণসার হরিণ শিকার মামলায় বলিউড তারকা সালমান খানের ৫ বছরের জেল হয়েছে। সঙ্গে ১০ হাজার টাকা জরিমানা। ২০ বছর আগের এ মামলায় তাকে গতকাল দোষী সাব্যস্ত করে যোধপুরের আদালত রায় প্রদান করেন। চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দেব কুমার ক্ষত্রী এ রায় প্রদান করেন। ৫ বছরের জেল হওয়ায়   জামিনের জন্য সেশনস কোর্টে যেতে হবে এ অভিনেতাকে। ৩ বছরের কম সাজা হলে যোধপুর আদালতই গতকাল তাকে জামিন দিতে পারতো। কিন্তু সেটা সম্ভব না হওয়ায় তাকে পুলিশের গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হয় যোধপুর সেন্ট্রাল জেলে। একই মামলায় অন্য চার অভিযুক্ত ছিলেন বলিউড তারকা সাইফ আলি খান, টাবু, নীলম এবং সোনালি বেন্দ্রে। তাদের বেকসুর ঘোষণা করেছেন আদালত। বিশনয়রা বাকি অভিযুক্তদের খালাস পাওয়ার রায়কে চ্যালেঞ্জ করবে বলে জানিয়েছে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, রায় ঘোষণার পর সালমান খানকে হাতকড়া পরিয়ে যোধপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ৫০ মিনিটে সালমানকে বহনকারী পুলিশের একটি গাড়ি আদালত থেকে কারাগারে প্রবেশ করে। এ সময় চারপাশে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়। ওই সময় সেখানে উৎসুক জনতা ভিড় করে। পুলিশ লাঠিচার্জ করে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। সালমানকে যে কারাগারে রাখা হয়েছে সেখানে নেয়া হয়েছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা। ভারতীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, গতকালই দোষী সাব্যস্ত করে দেয়া রায় ও সাজার নির্দেশের বিরুদ্ধে দায়রা আদালতে জামিনের আবেদন পেশ করা হয়েছে সালমানের পক্ষে। আজ বেলা সাড়ে দশটায় তার শুনানি। এদিকে সালমানকে যখন মেডিকেল পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, বাইরে তার বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে দেখা যায় বিশনয় সমপ্রদায়ের সদস্যদের। কৃষ্ণসার শিকারের মুখ্য অভিযুক্ত সালমান খানের সঙ্গে ছিলেন তার দুই বোন আলভিরা ও অর্পিতা। সালমানের বিরুদ্ধে বন্য পশু সংরক্ষণ আইনের ৫১ নম্বর ধারায় মামলা চলছিল। এই কৃষ্ণসার হরিণের রক্ষণাবেক্ষণ যারা করেন রাজস্থানের সেই বিশনয় উপজাতির সদস্যরা জানান, তাদের স্থির বিশ্বাস, এবার তারা ন্যায় বিচার পাবেন। সালমানের আইনজীবী এইচ এম সারস্বতের দাবি ছিল, সরকারি কৌঁসুলি অভিযোগের স্বপক্ষে প্রমাণ সংগ্রহ করতেই পারেননি। মামলা সাজাতে ভুয়া সাক্ষী দাঁড় করিয়েছেন। এমন কি, বন্দুকের গুলিতেই যে হরিণ দুটির মৃত্যু হয়েছিল, তা-ও সরকারি কৌঁসুলি প্রমাণ করতে পারেননি বলে দাবি করেছেন সারস্বত। ২৮শে মার্চ নিম্ন আদালতে কৃষ্ণসার হরিণ শিকার মামলার চূড়ান্ত পর্যায়ের শুনানি শেষ হয়। অন্যদিকে প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, ১৯৯৮ সালের ১লা এবং ২রা অক্টোবর যোধপুরে ‘হাম সাথ সাথ হ্যায়’ সিনেমার শুটিংয়ের মাঝে আলাদা আলাদা জায়গায় দু’টি কৃষ্ণসার হরিণ শিকার করেছিলেন সালমান খান। সেই সময় তার সঙ্গে ছিলেন সাইফ আলি খান, নীলম, টাবু এবং সোনালি  বেন্দ্রে। রাজস্থানের কঙ্কানি এলাকার গ্রামবাসীদের অভিযোগ, গুলির শব্দ শুনে তারা সালমানদের জিপসি গাড়িটিকে ধাওয়া করেছিলেন। কিন্তু তাদের ধরা যায়নি। সেই সময় চালকের আসনে ছিলেন স্বয়ং সালমান। প্রবল গতিতে গাড়ি ছুটিয়ে তারা পালিয়ে যান বলে দাবি করেন গ্রামবাসীরা। প্রসঙ্গত, ২০০৭ সালে এই মামলায় কয়েকদিন যোধপুর কারাগারে ছিলেন সালমান খান। পরে জামিনে মুক্ত হন তিনি। এরপর ২০১৭ সালে যখন এই মামলার রায় দেয়া হয় তখন নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছিলেন এ অভিনেতা। কিন্তু এই রায়ের ওপর আবারো আপিল করা হয়। এদিকে এই মুহূর্তে সালমানের ওপর এক হাজার কোটি রুপিরও বেশি লগ্নি রয়েছে। তার সাজা হওয়ায় অনিশ্চিত হয়ে পড়লো এই ছবিগুলোর ভবিষ্যৎ।

No comments

Powered by Blogger.