অপ্রয়োজনে সিজার করলে ব্যবস্থা

সিজারিয়ান ডেলিভারির ক্ষেত্রে হাসপাতালগুলোকে একটি ফরম পূরণ করতে হবে জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেছেন, অপ্রয়োজনে সিজারিয়ান ডেলিভারি (অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে শিশুর জন্ম) করালে হাসপাতালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে সরকার। গতকাল বিশ্বস্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ এ কথা জানান। এ সময় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশ ম্যাটারনাল মরটালিটি অ্যান্ড হেলথ কেয়ার সার্ভের (বিএমএমএস) প্রাথমিক ফলাফল অনুযায়ী বাংলাদেশে মাতৃমৃত্যুর হার বেড়েছে। সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০১৬ সালে প্রতি এক লাখ জীবন্ত শিশু জন্মের ক্ষেত্রে মৃত্যু হয়েছে ১৯৬ জন মায়ের। ২০১০ সালে এই সংখ্যা ছিল ১৯৪। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মহাপরিচালক বলেন, ‘মাতৃমৃত্যুর হার নিয়ে আমাদের প্রশ্ন আছে। আমরা ওই রিপোর্টের সঙ্গে এখনো একমত হতে পারিনি। কারণ আমাদের যে রুটিন হেলথ ইনফরমেশন ডাটা যেখানে থেকে আসে আমরা সেটাকে বিশ্বাস করতে পারি। আমাদের ডাটা অনুসারে এটা ১৬৮ থেকে ১৭০ এর মতো হতে পারে। এটা নিয়ে কাজ করছি, বিষয়টি দেখছি, এটা আসলে কতটুকু সঠিক। কাজেই আমরা স্বীকার করতে রাজি নই মাতৃমৃত্যুর হার বাংলাদেশে বেড়েছে। তিনি বলেন, আমরা স্বীকার করি বাংলাদেশে সিজারিয়ান অনেক বেড়ে গেছে। এটা যাতে না হয়, যেখানে সিজারিয়ান করার প্রয়োজন নেই, সেখানে যাতে সিজারিয়ান করা না হয়, সেজন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে একটি বিশেষ ফরম করেছি। যেখানে সিজারিয়ান হবে প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে ফরম পূরণ করে আমাদের জানাতে হবে। আমরা এগুলো চেক করবো। তারা যে তথ্য আমাদের জানাচ্ছে তা সঠিক কি-না। সেক্ষেত্রে যারা বিনা প্রয়োজনে সিজারিয়ান করাবে, সেখানে যে ধরনের ব্যবস্থা নেয়া দরকার সে ধরনের আমরা ব্যবস্থা নেব। ফরমে মোবাইল নম্বরও নেয়া হবে। ব্রিফিংয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা অর্জনের সফলতা আশাব্যঞ্জক। সরকার বর্তমানে জিডিপি’র ২ দশমিক ৮ শতাংশ স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় করছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেবে বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু এখন ৭১ দশমিক ৮, যা ২০০০ সালে ছিল ৬৫ দশমিক ৫। শিশুদের টিকাদানের অর্জন ৯৪ শতাংশ; অত্যাবশ্যকীয় ওষুধ সুবিধার আওতায় আনা হয়েছে ৬৫ শতাংশ মানুষকে; মাতৃমৃত্যুর হার এখন প্রতি এক লাখে ১৭৬ জন, যা ২০০০ সালে ছিল ৩৯৯ জন; প্রতি ১০০০ জনে নবজাতকের মৃত্যু ২০০০ সালে ছিল ৪২ দশমিক ৬, যা ২০১৫ সালে কমে হয় ২৩ দশমিক ৩।  স্বাধীনতার সুফল সকলের কাছে পৌঁছে দেয়ার অন্যতম শর্ত হচ্ছে-পরিকল্পিত পরিবার গঠন। বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর পরই এ ব্যাপারে বিশেষ দৃষ্টি দিয়েছে। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে ‘সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা: সবার জন্য সর্বত্র।’

No comments

Powered by Blogger.