বর্ষা মৌসুমে দুই লাখ রোহিঙ্গা ঝুঁকিতে: ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশ by দীন ইসলাম

বর্ষাকালে ভূমিধস ও বন্যার ঝুঁকিতে রয়েছে দুই লাখ তিন হাজার রোহিঙ্গা। এ জন্য ৪৭ হাজার ৮১৬টি পরিবার বেশ দুশ্চিন্তাগ্রস্ত। রোহিঙ্গাদের এমন অবস্থার বিপরীতে আগাম প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ১৮ই মার্চ প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে বর্ষাকালে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়, পাহাড়ি ঢল ও পাহাড় ধস থেকে উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায় অবস্থানরত বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের রক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিব, বিজিবি মহাপরিচালক, কোস্টগার্ড মহাপরিচালক, চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনারসহ উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এ সভায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব জানান, ফেব্রুয়ারিতে অ্যানালাইসিসের মাধ্যমে ভূমি ধস ও বন্যার ঝুঁকিতে থাকা এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব এলাকাকে চারটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে। ঝুঁকিতে থাকা ১১৮৮টি পরিবারের পাঁচ হাজার ৩৫ জনকে এরই মধ্যে ১৭ ও ১৮ নং ক্যাম্পের নিরাপদ স্থানে স্থানান্তর করা হয়েছে। এছাড়া ঝুঁকিতে থাকা মিয়ানমার নাগরিকদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে উখিয়ার কুতুপালং সম্প্রসারিত ক্যাম্পের উত্তর-পশ্চিম অংশের ১২৩ একর জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। এ জমিতে শেল্টার নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। এর মধ্যে ৩০ একর জমি ব্যবহার উপযোগী করা হয়েছে। তিনি জানান, বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকরা সহজে স্থান পরিবর্তন করতে চায় না। তাই ঝুঁকিতে থাকা লোকজনকে নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরের বিষয়ে উদ্বুদ্ধকরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এছাড়া সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ে যেন টিকে থাকে এজন্য অস্থায়ী শেল্টারগুলো মজবুত করার কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উচ্চ পর্যায়ের ওই সভায় রোহিঙ্গাদের অস্থায়ী আশ্রয় শিবিরগুলোর নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং দেশি-বিদেশি এনজিওগুলোর কার্যক্রমের মাঠ পর্যায়ের চিত্র চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ও কক্সবাজারের ডিসি উপস্থাপন করেন। এ সভায় ১৩টি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এসব সিদ্ধান্তে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের ভাসানচর আশ্রয়ণ-৩ প্রকল্পে স্থানান্তরের কথা বলা হয়। এছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাসরত রোহিঙ্গারা যাতে নিরাপদ স্থানে বা ভাসানচরে যেতে উৎসাহিত হয় এজন্য প্রামাণ্য চিত্র তৈরি এবং মোটিভেশনাল ব্রিফ তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি কর্মরত এনজিওগুলোতে এ কাজে নিয়োজিত করার কথা বলা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের সম্পর্কে নেয়া এসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে বর্ষাকালে স্বস্তিতে থাকতে পারবেন তারা।

No comments

Powered by Blogger.