‘তওবা করে সঠিক নির্বাচন দিন’ -একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী

৫ই জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচনে ভোট দিতে না পারার প্রতিশোধ জনগণ এবার সিটি নির্বাচনে নেবে বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বিকল্পধারার সভাপতি প্রফেসর একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। একইসঙ্গে অতীতের অভিশাপ থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য সরকারকে তওবা করে সিটি নির্বাচন নিরপেক্ষ করার দাবি জানান সাবেক এই প্রেসিডেন্ট। এদিকে সিটি নির্বাচনের দলীয় প্রার্থীদের গণভবনে ডেকে প্রধানমন্ত্রী যে সংবিধান লঙ্ঘন করছেন এর দায়ে ভবিষ্যতে একদিন তার ফাঁসিও হতে পারে বলে মন্তব্য করেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম। আগামী ১লা এপ্রিল নতুন কর্মসূচি ঘোষণা দেবেন বলে জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডির সভাপতি আসম আবদুর রব বলেছেন, সিটি নির্বাচনের ফলাফল জোর করে নিতে চাইলে আপনি আরও পচে যাবেন। জনগণ আপনাকে ডাস্টবিনে নিক্ষেপ করবে। আজ দুপুরে মতিঝিলের কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের  কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ফুটপাথে অবস্থানের ৬০তম দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তারা। সরকারের উদ্দেশে সাবেক এই প্রেসিডেন্ট বলেন, ৫ই জানুয়ারি নির্লজ্জভাবে বেআইনি নির্বাচন করেছিল সরকার। ওই নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারেনি। এখন তাদের সামনে শেষ সুযোগ এসেছেÑ তওবা করে অতীতের অভিশাপ থেকে মুক্ত হওয়ার । সরকারকে বলবো, সঠিক নির্বাচন দেন। একইভাবে নির্বাচন কমিশনকে বলবোÑ একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন করেন। এর মাধ্যমে প্রমাণ করতে পারবেনÑ অতীতে ভুল হয়েছে আর হবে না। প্রশাসনের উদ্দেশে বি. চৌধুরী বলেন, অতীতে আপনারা আঙুল চোষার কথা বলেছিলেন। আর আপনাদের আঙুল চোষার দরকার নেই। দায়িত্বে আছেন, দায়িত্বের কাজ করেন। ক্ষেমতা (ক্ষমতা) দেখাইয়েন না। ক্ষেমতা বেশি দিন থাকে না। কারণ দায়িত্ব পালন না করলে এর প্রতিশোধ একদিন জনগণ নেবে। তিনি বলেন, ‘সিটি নির্বাচন সরকারকে সঠিক পথে আনার সুযোগ। এবার রুখে দাঁড়াতে হবে। ১৫৩টি আসনের মানুষ ভোট দিতে পারেনি। এবার প্রতিবাদ গড়ে তুলতে হবে। ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনে ভোট দিতে না পারার প্রতিশোধ নিতে হবে। নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনারকে বলবো, পুতুল খেলা চলবে না। আমার ভোট আমি দিবো, তুমি ছিনিয়ে নেয়ার কে? কোন রকম অন্যায় চলবে না।  বি. চৌধুরী চৌধুরী বলেন, ঢাকা শহরের উত্তর-দক্ষিণের জনগণ যদি জেগে উঠে তাহলে আর হরতাল-অবরোধ দিতে হবে না। তুমি, আমাদের জাগিয়ে দিয়েছে, তোমাকে আমরা ঘুমাতে দেবো না। কাদের সিদ্দিকীকে রাস্তায় নামার পরামর্শ দিয়ে বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, কাদের সিদ্দিকী আমার প্রিয় মানুষ। যাকে বাদ দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্ভব নয়। তার এ মানুষটির নীরব প্রতিবাদকে আমি সব সময় সমর্থন দিয়ে আসছি। কে ক্ষমতায় সেটা দেখার বিষয় নয়, আমার দল সব সময় কাদের সিদ্দিকীর পাশে থাকবে। তিনি বলেন, আপনি ৬০ দিন ধরে মতিঝিলে অবস্থান করছেন। জনগণের কাছে আপনার মেসেজ পৌঁছে গেছে। কিন্তু সরকারের কানে দিয়েছে তুলা, পিঠে দিয়েছে কুলা। তারা আপনার কথা শুনবে না। তাই আপনি রাস্তায় নামুন। সিটি নির্বাচনে জনগণকে প্রতিশোধ নিতে উদ্বুুদ্ধ করুন। শুধু ঢাকা শহরে অবস্থান কর্মসূচি সীমাবদ্ধ না রেখে সারা দেশে ছড়িয়ে দিন।  মতবিনিময় সভায় লেখক ও গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি)-এর সভাপতি শেখ শওকত হোসেন নিলু, ইসলামী আন্দোলনের ঢাকা মহানগর সভাপতি এটিএম হেমায়েত উদ্দিন, কাদের সিদ্দিকীর স্ত্রী নাসরিন কাদের সিদ্দিকী, সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী কায়সার,  কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তালুকদার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল সিদ্দিকী, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম দেলোয়ার, শিক্ষাবিদ এম ই এইচ আরিফ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ
ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দল সমর্থিত দুই প্রার্থীকে পরিচয় করিয়ে দেয়ার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘণ করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন সিপিবি নেতা আবদুল্লাহ আল কাফি রতন। তিনি ঢাকা উত্তরে মেয়র পদে নির্বাচন করার জন্য মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।  শনিবার রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহের সময় তিনি এ অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল আনিসুল হক ও মোহাম্মদ সাঈদ খোকনকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন, যা আচরণবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। প্রধানমন্ত্রী দলের অন্য কাউকে নির্বাচনে প্রার্থী না হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন এ সিপিবি নেতা। অভিযোগের বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শাহ আলম বলেন, আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় ইতিমধ্যে একজন সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীসহ ২৩ জনকে শোকজ করা হয়েছে। এ ছাড়া দুজন ম্যাজিস্ট্রেট নির্বাচনী এলাকা পরিদর্শন করছেন।

No comments

Powered by Blogger.