কো-পাইলট ছিলেন বিষণ্ন

ফরাসি আল্পস পর্বতমালায় সম্প্রতি এক জার্মান বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পেছনে যাকে দায়ী ভাবা হচ্ছে, সেই কো-পাইলট আন্দ্রে লুবিটজ বিষণ্নতায় আক্রান্ত ছিলেন। এমনকি বিষণ্নতাজনিত কারণে তার প্রশিক্ষণও কয়েক মাস বন্ধ ছিল। তার নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের কাছে থাকা বিভিন্ন নথিতে এমন ইঙ্গিত রয়েছে। আবার জার্মানির ডুসেলডর্ফের কৌঁসুলিরা তার অসুস্থ থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করলেও, অসুস্থতার ধরন সম্পর্কে কিছু জানাননি। তবে তারা জানিয়েছেন, নিজের অসুস্থতা সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য নিয়োগকর্তাদের কাছে লুকিয়ে ছিলেন লুবিটজ। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এপি ও বিবিসি। উল্লেখ্য, এক ফরাসি কৌঁসুলি সর্বপ্রথম জনসম্মুখে দাবি করেন, বিধ্বস্ত হওয়া জার্মান বিমানটির কো-পাইলট ইচ্ছা করেই বিমানটিকে দুর্ঘটনার দিকে নিয়ে গিয়েছিলেন। এবার জার্মান কৌঁসুলিদের বক্তব্যে এ দাবি আরও পোক্ত হলো। তবে কৌঁসুলিরা আরও বলেছেন, লুবিটজের এমন আচরণের পেছনে কোনও রাজনৈতিক বা ধর্মীয় উদ্দেশ্য থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া তার কোনও সুইসাইড নোটও পাওয়া যায়নি। গত মঙ্গলবার ফরাসি আল্পস পর্বতমালায় প্রায় ১৫০ আরোহী নিয়ে বিধ্বস্ত হয় জার্মান উইংস-এর ফ্লাইট ৪ইউ ৯৫২৫ নামের বিমানটি। বিমানের উদ্ধারকৃত ব্ল্যাকবক্স থেকে প্রাপ্ত তথ্য মোতাবেক, বিমানের মূল পাইলট ককপিটের বাইরে গেলে, দরজা বন্ধ করে দেন কো-পাইলট আন্দ্রে লুবিটজ। এরপর বিমানের নিয়ন্ত্রণ নিজের কাছে নিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে বিমানটি নিচের দিকে নামাতে শুরু করেন লুবিটজ। এক পর্যায়ে এটি বিধ্বস্ত হয়। এক বিবৃতিতে জার্মান কৌঁসুলিরা জানিয়েছেন, লুবিটজের দুটি আবাসস্থল থেকে তারা স্বাস্থ্যসংক্রান্ত নথিপত্র উদ্ধার করেছেন। সেখানে তার অসুস্থতা ও চিকিৎসা গ্রহণের ইঙ্গিত রয়েছে।
কে এই আন্দ্রে লুবিটজ?
২০০৮ সালে বিমান উড্ডয়নের প্রশিক্ষণ নেয়া শুরু করেন লুবিটজ। এরপর ২০১৩ সাল থেকে কো-পাইলট হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি। তার কাজে নিয়োগকর্তারা খুশিই ছিলেন। তিনি বাস করতেন জার্মানির ফ্রাংকফুট শহরের কাছে মোনটাবাউরে নিজের বাবা-মায়ের সঙ্গে। তবে ডুসেলডর্ফে একটি ফ্ল্যাটেও থাকতেন তিনি। ২০০৯ সালে তার প্রশিক্ষণ কয়েক মাসের জন্য বন্ধ ছিল। জার্মান গণমাধ্যম জানিয়েছে, তার বিষণ্নতাই এর মূল কারণ। তবে তিনি সকল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েই বিমানের হাল ধরেন।

No comments

Powered by Blogger.