হাঁটুর প্যাটেলার তরুনাস্থি নরম ও ক্ষয় হওয়া এবং প্রতিকার

গঠনগতভাবে হাঁটু ফিমার, টিবিয়া ও প্যাটেলা এই তিনটি হাড় এবং বিভিন্ন ধরনের লিগ্যামেন্ট সমন্বয়ে গঠিত। জোড়ার মধ্যে কার্টিলেজ বা তুরম্ননাস্থি হাড়ের প্রানত্মে অবস্থান করে বিভিন্ন মুভমেন্টে সহায়তা করে।
লিগামেন্ট জোড়ার স্ট্যাবিলিটি রৰা করে। প্যাটেলা হাড়টি হাঁটুর সামনে ফিমার (ঊরম্নর হাড়) উপর থাকে এবং দেখতে টুপির মতো বলে একে নী ক্যাপ বলে। প্যাটেলার আন্ডার বা আর্টিকুলার সার্ফেস মসৃণ তরম্ননাস্থি দ্বারা আবৃত থাকে, ফলে প্যাটেলার স্মুথ মুভমেন্ট হয়। প্যাটেলার অস্বাভাবিক মুভমেন্ট বা ট্র্যাকিং হলে তরম্ননাস্থি নরম ও ৰয় হয় এবং ৰুদ্র ৰুদ্র অংশে বিভক্ত হয়। প্যাটেলার মুভমেন্টের সময় তরম্ননাস্থির ঘর্ষণ হয়। ফলে তরম্ননাস্থি নরম ও ৰয় হয়। এই অবস্থাকে আর্থোপেডিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে "কনড্রোমালাসিয়া প্যাটলা" (ঈযড়হফৎড়সধষধপরধ চধঃবষষধ) বলে। একে আবার প্যাটলো ফেমোরাল পেইন সিনড্রোম বলে। হাঁটু ব্যথার কারণসমূহের মধ্যে কনড্রোমালাসিয়া প্যাটলা অন্যতম। যে কোন কারণে বা আঘাত হলে মসৃণ আর্টিকুলার সার্ফেস তরম্ননাস্থির ঘর্ষণ হয় বা টিয়ার হয় (ছিঁড়ে যায়) এবং খসখসে হয়ে অবশেষে নরম ও ৰয় হয়।
কারণসমূহ
- প্যাটেলা বা নীক্যাপের অসংগতি মুভমেন্ট বা ম্যাল-ট্রেকিং।
- প্যাটেলা হাঁটুর বাহির পাশ্বর্ে মুভমেন্ট করে।
- বাহির পাশ্বর্ের মাংশপেশী ও রেটিনাকুলাম সংকুচিত এবং শক্তিশালী।
- ভেতর পাশ্বর্ের মাংশপেশী দুর্বল।
- অস্বাভাবিক আকৃতির প্যাটেলা।
- প্যাটেলা ওপরে বা নীচে থাকলে।
- প্যাটেলার উপর পড়লে।
- সরাসরি আঘাত হলে।
- খেলোয়াড়দের বেশি হয়।
- পুরম্নষের তুলনায় মহিলাদের বেশি হয়।
- নক নি (হাঁটু ভেতরের দিকে বাঁকা)।
- ফাট ফুট।

উপসর্গ
- সবসময় হাঁটুর মধ্যে অস্বসত্মি।
- দৌড়ালে, লাফ দিলে, জগিং করলে, সিঁড়ি দিয়ে উঠানামা করলে এবং বেশিৰণ হাঁটু ভাঁজ করে বসলে হাঁটুতে ব্যথা হয়।
- কখনও কখনও অনেকে মনে করে হাঁটু শক্ত হয়ে গেছে বা ফুলে গেছে।
- দীর্ঘদিন এই অবস্থা থাকলে পেশী শুকিয়ে যায়, হাঁটু দুর্বল হয় এবং হাঁটু ছুটে যাওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়।
- হাঁটু সোজা করতে গেলে গ্রিন্ডিং বা কিকিং শব্দ শুনা যায়।
- বেশিৰণ ভাঁজ করে বসে থাকার পর হাঁটু সোজা করলে বেশি ব্যথা হয়।
- প্যাটলা বা নী ক্যাপের ওপর চাপ দিলে ব্যথা অনুভূত হয়।
- মাঝে মাঝে হাঁটুর জোড়া ফুলে যায়।
প্রতিকার :
- প্রয়োজনীয় বিশ্রাম গ্রহণ করতে হবে।
- ব্যথা নিরাময়ে এনালজেসিক ব্যবহার করতে হবে।
- পেশীর কার্যৰমতা বৃদ্ধি করতে হবে।
- পরিশ্রমের ধরন পরিবর্তন করতে হবে।
- পেশী নমনীয় ও শক্তিশালী হওয়ার ব্যায়াম করতে হবে।
- ব্যথা ও ফুলা কমানোর জন্য ম্যাসেজ ও আল্ট্রাসাউন্ড থেরাপি গ্রহণ করা যেতে পারে।
- ব্রেসিং বা টেপিং করলে ব্যথা কমে আসে।
- বরফ, মোয়েস্ট হিট, ইলেকট্রিকেল স্টিমুলেশন রোগ কমাতে সাহায্য করে।
অপারেশন :
- আক্রানত্ম জায়গায় আর্থ্রোস্কোপিক ডেব্রাইডমেন্ট ও ড্রিলিং।
- আর্থ্রোস্কোপিক সফট টিসু রিলিজ।
- আর্থ্রোস্কোপিক তরম্ননাস্থি পুনসর্্থাপন।
- টিবিয়াল টিউবেরোসিটি রিএলাইনমেন্ট।

কনসালটেন্ট_ হাড়, জোড়া, ট্রমা ও আথ্রের্াস্কোপিক সার্জারি
ডিজিল্যাব মেডিক্যাল সার্ভিসেস, মিরপুর (ইনডোর স্টেডিয়ামের সামনে) ঢাকা।

No comments

Powered by Blogger.