নিরাপত্তা বলয়ে সারাদেশ by জাহাঙ্গীর সুমন, ইমরান আলী ও ইসমাইল হোসেন

মঙ্গলবারের হরতালে রাজধানীসহ সারাদেশে কঠোর নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হবে। রাজধানীতে মোতায়েন থাকবে ৠাব, পুলিশ, সোয়াত বাহিনী।
পাশাপাশি প্রস্তুত রাখা হয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যদেরও। বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে সর্বোচ্চ শক্তি নিয়ে মাঠে থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
হরতালে কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা হলে কঠোর হস্তে দমন করা হবে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

জানা যায়, যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আটক জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে মঙ্গলবার রায় ঘোষণা করবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এ খবরে মঙ্গলবার সকাল সন্ধ্যা হরতালের ঘোষণা দেয় জামায়াত। রায় দিলে লাগাতার হরতালের কর্মসূচিও রয়েছে তাদের।

এর আগে সোমবার পুলিশের অনুমতি নিয়েই রাজধানীসহ সারাদেশে বিক্ষোভ সমাবেশ করে জামায়াত শিবির।

দীর্ঘদিন পরে সমাবেশ করার পুলিশি অনুমতি পাওয়ায় রাজধানীতে ব্যাপক সমাবেশ ঘটায় দলটি। রাজধানী ছাড়াও আশেপাশের সব জেলা থেকেই জামায়াত শিবির ক্যাডারদের সমাবেশ ঘটায় তারা।

হরতালের খবরে ওইসব নেতাকর্মী সন্ধ্যা থেকেই রাজধানী জুড়ে সহিংসতার চেষ্টা করে। মঙ্গলবারও তারা আক্রমণাতœক ভূমিকায় থাকবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়।

এদিকে, জামায়াত শিবির মোকাবেলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সমন্বয়ে ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাজধানী জুড়ে গড়ে তোলা হয়েছে নিরাপত্তা বলয়। বিশেষ করে ট্রাইব্যুনালকে ঘিরে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। পাশাপাশি পুরো হাইকোর্ট এলাকা জুড়েই থাকবে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

মঙ্গলবার ভোর থেকেই রাজধানীজুড়ে পুলিশ মোতায়েন করা হবে। রাস্তায় কোনো পিকেটিং হতে দেখলে তা সঙ্গে সঙ্গে প্রতিহত করা হবে। রাজধানীর অন্যতম গুত্বপূর্ণ পয়েন্ট মালিবাগ, মগবাজার, পল্টন, মতিঝিল, দৈনিক বাংলামোড়, যাত্রাবাড়ী, উত্তরা, খিলক্ষেত, গাবতলী, শ্যামলি, মহাখালি, সাতরাস্তা, তেজগাঁও, রামপুরা, বাড্ডা, মিরপুর, কাজীপাড়া, হাইকোর্ট মোড়, রামপুরা, বাড্ডা, ফার্মগেট এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘিরে পুলিশের সবচেয়ে কঠোর নজরদারী থাকবে।


ডিএমপি পুলিশ সদস্য ছাড়াও জেলা পুলিশ থেকে অতিরিক্ত ফোর্স আনা হচ্ছে। ট্রাইবুন্যালকে ঘিরে পুলিশ ৠাবের পাশাপাশি পুলিশের বিশেষায়িত বাহিনী সোয়াতও থাকছে।

রাজধানীতে কোন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে সতর্ক রাখা হয়েছে বিজিবি সদস্যদেরও।
পাশাপাশি পুরো রাজধানীতে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করবে। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া মাত্র তারা যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য পুলিশকে জানাবে। 

রাজধানীতে হরতালের নামে কোন প্রকার বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করা হলে পুলিশ কঠোর হস্তে দমন করবে বলে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল জলিল মণ্ডল।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, “হরতালের নামে নৈরাজ্য কোনোভাবে সহ্য করা হবে না। তাদের মিছিল করার জন্য আমরা অনুমতি দিয়েছিলাম। কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে, কেউ বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করলে পুলিশ বসে থাকবে।”

তিনি বলেন, “আমরা রাজধানীতে নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলেছি। জামায়াত শিবির আতঙ্ক তৈরি করার চেষ্টা করবে, কিন্তু আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।”

রাজধানীর মতো সারাদেশেও কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। স্পর্শকাতর বিভাগীয় শহর এবং জেলা শহরগুলোতে বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্য ঠেকাতে কঠোরভাবে দায়িত্ব পালনের জন্য পুলিশ সদরদপ্তর থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

পুলিশের অতিরিক্ত আইজি একেএম শহিদুল হক বাংলানিউজকে বলেন, “হরতালের নামে নৈরাজ্য ঠেকাতে পুলিশকে কঠোরভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেউ রাস্তায় নেমে গাড়ি ভাঙচুর কিংবা পিকেটিংয়ের চেষ্টা করলে পুলিশ জনগণের নিরাপত্তায় সবকিছু করবে।”

No comments

Powered by Blogger.