লিবিয়া দূতাবাস ফের ভিসা দিচ্ছে- ৩ মাস পর by ফিরোজ মান্না

শ্রমিক নিয়োগ তিন মাস বন্ধ থাকার পর ঢাকার লিবিয়া দূতাবাস আবার ভিসা ইসু্য শুরম্ন করেছে। সম্প্রতি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল লিবিয়া গিয়ে কর্তৃপৰের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হওয়ার পর ভিসা ইসু্য শুরম্ন হয়।
একই সঙ্গে অবৈধ প্রায় চার হাজার শ্রমিককে বৈধ করার ঘোষণা দেয়। লিবিয়া গত কয়েকদিনে ভিজিট ও জাল ভিসায় যাওয়া ৫ শ' শ্রমিককে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে। ভিজিট ও জাল ভিসায় লিবিয়ায় শ্রমিক পাঠানোদের বিরম্নদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বিএমইটি ও বায়রাকে এ ব্যাপারে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিজের (বায়রা) সভাপতি গোলাম মুসত্মাফা বলেন, বিশ্ব মন্দায় যে সব দেশে শ্রম বাজার বন্ধ হয়ে আছে সেই সব দেশ এখন মন্দা কাটিয়ে উঠতে শুরম্ন করেছে। ওই সব দেশে কূটনৈতিক তৎপরতা দিয়ে বাজার ধরতে হবে। লিবিয়াতে শ্রম বাজার বন্ধই হয়ে গিয়েছিল। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী খন্দকার মোশারফ হোসেনের, জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিৰণ বু্যরোর (বিএমইটি) মহা পরিচালক, বায়রার সভাপতি গোলাম মুসত্মাফা, সাধারণ সম্পাদকসহ ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল লিবিয়া গিয়ে বাজারটি উদ্ধার করেছে। আমরা লিবিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, শ্রমমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীসহ উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। লিবিয়ার মন্ত্রী ও কর্মকর্তরা আমাদের কথায় সন্তুষ্ট হয়েছে। কর্তৃপৰ বলেছে কিছু শর্তসাপেৰে বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেয়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তারা বলেছে, শ্রমিক নিয়োগে বাংলাদেশকে প্রাধান্য দেয়া হবে।
সূত্র জানিয়েছে, লিবিয়া এখন বাংলাদেশের অন্যতম শ্রমবাজার হিসাবে দেখা দিয়েছে। এই বাজারটি যাতে কোনভাবে ৰতিগ্রসত্ম না হয় সেদিকে নজর রাখতে হবে। এ ব্যাপারে সরকারের সংশিস্নষ্ট দফতর সমূহের গুরম্নত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। নতুন ব্যবস্থাপনায় ঢাকার লিবিয়ায় দূতাবাস ভিসা ইসু্যর সঙ্গে নিয়োগকর্তা ও কর্মীর মধ্যে চাকরির জন্য সম্পাদিত চুক্তিটির সত্যতা অফিসিয়ালি নিশ্চিত করতে হবে। অবৈধ শ্রমিক বন্ধের জন্য লিবিয়া কর্তৃপৰ ভিজিট ভিসার ব্যাপারে কড়াকড়ি আরোপ করবে। লিবিয়া নিয়োগকারীদের চাহিদা মোতাবেক দৰ শ্রমিক নিয়োগ করতে হবে। শ্রম মন্ত্রণালয়ের অধীনের পরিদর্শন বিভাগের পরিদর্শকগণ সরেজমিন তদনত্ম করে শ্রমিক নিয়োগের এপ্রোভাল দিতে হবে। বাংলাদেশ ও লিবিয়ার যৌথ মালিকানায় একটি আউট সোসিং কোম্পানি করতে হবে। বাংলাদেশ থেকে লিবিয়া নির্মাণ, কৃষি কর্মী, স্বাস্থ্য কর্মী, ডাক্তার ও প্রকৌশলী নেবে। এই সাফল্য ধরে রাখতে হলে লিবিয়ার বাজারটি যাতে বাংলাদেশের অনুকূলে থাকে তার জন্য লিবীয়ও কর্তৃপৰের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করতে হবে। জাল ও ভ্রমণ ভিসা দিয়ে আরও কোন শ্রমিককে সেদেশে পাঠানো যাবে না। এই কাজটি চলতে থাকলে বাজারটি হারাতে হবে। লিবিয়াতে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার বাঙালী শ্রমিক কাজ করছেন। এরমধ্যে ৩ থেকে ৪ হাজার শ্রমিক ভিজিট ভিসায় লিবিয়া গিয়েছিল। প্রতিনিধিদলের অনুরোধে তাদের বৈধ করে নিয়েছে লিবীয় কর্তৃপৰ।
অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর আমেরিকার সঙ্গে লিবিয়ার সম্পর্ক উন্নয়ন হয়েছে। পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গেও লিবিয়ার সম্পর্ক উন্নয়নে হয়েছে। এ কারণে লিবিয়ায় এখন ব্যাপক উন্নয়নে কাজ চলছে। রাসত্মা-ঘাট, বড় বড় শপিং মল, স্কুল কলেজসহ নানা অবকাঠামো নির্মাণ হচ্ছে। নির্মাণ কাজের জন্য বিপুল সংখ্যক শ্রমিকের প্রয়োজন রয়েছে তাদের।

No comments

Powered by Blogger.