মধ্য ফেব্রম্নয়ারিতেই গরমের দাপট, ঝড়বৃষ্টির শঙ্কা- আবহাওয়ার বৈরী আচরণ by মহসিন চৌধুরী

চট্টগ্রাম অফিস চলতি শীতের মতো আবহাওয়া অস্বাভাবিক আচরণ করতে পারে আসন্ন গরমের শুরম্নতে। মধ্য ফেব্রম্নয়ারিতেই বদলে যেতে পারে আবহাওয়া। মার্চে রীতিমতো প্রচ- গরম অনুভূত হতে পারে। সেই সঙ্গে বঙ্গোপসাগর উত্তাল হওয়ার এবং নিম্নচাপ সৃষ্টিরও আশঙ্কা রয়েছে। আবহাওয়ার বিভিন্ন উপাত্ত এবং জলবায়ুর রিগ্রেশন পর্যবেৰণ করে দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাসে আবহাওয়াবিদরা এমন আশঙ্কা করেছেন।
নবেম্বর থেকে ফেব্রম্নয়ারি পর্যনত্ম সাধারণত শীতের মওসুম। এর মধ্যে ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে অনুভূত হয় পূর্ণ শীত। গত কয়েক বছর ধরে শীতের মওসুম কেটেছিল অস্বাভাবিক অবস্থায়। কিন্তু এ বছর ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যনত্ম একটানা তীব্র শীত অনুভূত হয়। কয়েক দফা শৈত্যপ্রবাহও চলে বিভিন্ন স্থানে। শীতের দাপট গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর বেশি ছিল। শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে এবার তীব্র শীত অনুভূত হয়েছে। ৪০ বছরের রেকর্ড ছাড়িয়েছে তুষারপাতেরও। বাংলাদেশে এর ব্যতিক্রম হয়নি। তবে রেকর্ড তাপমাত্রা অনুভূত হবার ঘটনা ঘটেনি। তারপরও তাপমাত্রা নেমে এসেছিল ৪ ডিগ্রী সেলসিয়াসে। আবহাওয়াবিদরা আগেভাগেই দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে মাঝারি ও মৃদু তিনটি শৈত্যপ্রবাহের পূর্বাভাস দিয়েছিল। সে অনুযায়ী তাপমাত্রা নেমে এসেছিল ৪ থেকে ৬ ডিগ্রী সেলসিয়াসে। এ মাসের শেষদিকে আরও একটি মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। জানুয়ারি পর্যনত্ম তীব্র শীতের পর ফেব্রম্নয়ারিতে আবহাওয়া দ্রম্নত পাল্টে যাবে। প্রথমার্ধে দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে সর্বোচ্চ একটি মৃদু বা মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এর পর থেকে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরম্ন করবে। ফেব্রম্নয়ারিতেই দেশের একই অঞ্চলে ঝড়বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। সাধারণত এপ্রিলে এ ধরনের ঝড়বৃষ্টির প্রাদুর্ভাব থাকলেও এবার ফেব্রম্নয়ারি থেকেই আবহাওয়ার বৈরী আচরণ শুরম্ন হয়ে যেতে পারে। অর্থাৎ মধ্য ফেব্রম্নয়ারি থেকে বিদায় নেবে শীত। শীত ঋতু পৌষ-মাঘ শেষ হলেই তাপমাত্রা দ্রম্নত উর্ধমুখী হয়ে উঠবে। শীতপরবতর্ী গ্রীষ্মের আগে দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রী সেলসিয়াসে উন্নীত হবার আশঙ্কা রয়েছে। সে সঙ্গে মার্চেই বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হতে পারে নিম্নচাপ। মার্চ মাসেই সাগর প্রচ- উত্তাল হয়ে উঠবে। এতে এ বছর বঙ্গোপসাগরে মৎস্য আহরণের মওসুম সংৰিপ্ত হয়ে যাবার আশঙ্কা রয়েছে। মৎস্য মওসুম সংৰিপ্ত হবার শঙ্কায় ইতোমধ্যেই সামুদ্রিক মাছের বাজারে প্রভাব পড়েছে। মৎস্য আহরণকারীরা এ শীতে আহৃত মাছের সিংহভাগই বিভিন্ন কোল্ড স্টোরেজে মজুদ করে ফেলছে। সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করে গ্রীষ্মে উচ্চমূল্যে সামুদ্রিক মাছ বিক্রির প্রক্রিয়া চলছে।
আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, মধ্য ফেব্রম্নয়ারিতেই আবহাওয়া পুরোপুরি বদলে যাবে। গ্রীষ্মের আগেই গরমের তীব্রতা অনুভূত হতে পারে। একমাস পূর্ব থেকেই কালবৈশাখী ও ঝড়বৃষ্টি ছোবল হানতে পারে। ফেব্রম্নয়ারিতে কুয়াশার প্রভাবও থাকবে তুলনামূলক বেশি। দ্রম্নতগতিতেই তাপমাত্রা বেড়ে যেতে পারে। বৈশাখ মাসের অপেৰা না করে ফাল্গুন অর্থাৎ শেষ ফেব্রম্নয়ারিতে আঘাত হানতে পারে ঝড়বৃষ্টিসহ কালবৈশাখী। চৈত্র মাসজুড়ে আবহাওয়ার বৈরী আচরণের পূর্বাভাস ইতোমধ্যেই দেয়া হয়েছে। গ্রীষ্মে এবার আবহাওয়া কেমন কাটবে, এ নিয়ে এখন থেকেই শুরম্ন হয়েছে নানা ধরনের গবেষণা। এ জন্য আবহাওয়াবিদরা জলবায়ু রিগ্রেশন এনালগ মডেল এল নিনো ও লানিনোর অবস্থা পর্যবেৰণ করছেন।

No comments

Powered by Blogger.