এক্সিকিউটিভ ড্রেস by তৌফিক অপু

রাতুল হাসান পেশায় একজন ব্যাংক কর্মকর্তা। সদ্য পড়াশোনা শেষ করে একটি প্রাইভেট ব্যাংকে জয়েন করেছেন। অফিস সিডিউল অনুযায়ী নিয়মিত অফিসে আসা এবং কাজ শেষে বের হয়ে যাওয়া এটা তো সকল স্টাফের ৰেত্রেই প্রযোজ্য। কিন্তু তার পরও রাতুল হাসান খুব অল্প সময়ের মধ্যে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সৰম হয়েছেন। যদিও প্রাইভেট ব্যাংকগুলোয় কাজের চাপ প্রচুর।
ব্যাংকে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে শুরম্ন হয়ে যায় কাজ। মেধা, মননে, দৰতায় প্রতিটি স্টাফই সমমানের তথাপি রাতুল অন্য রকম একটা ক্রেজ নিয়ে অফিসে বিচরণ করেন। এ নিয়ে অফিস কলিগদের মধ্যে কানাঘুষা কম হয় না। অনেকে ঈর্ষাও করে। অতিরিক্ত মাত্রার কাজও সে করে তাও নয়। তাহলে বস্দের সুনজরে পড়ার কারণ কি_ এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে প্রায়ই মশগুল হয়ে ওঠে রাতুলের কলিগরা। এ ধরনের প্রশ্নের প্রাথমিক অনুসন্ধানে উত্তর মিলেছে স্মার্টনেস। স্মার্ট-এর সংজ্ঞার নানারকম প্রকারভেদ রয়েছে। তবে এ নিয়ে একটা ভুল ধারণা আমাদের দেশে প্রচলিত রয়েছে। অনেকেই মনে করেন সুন্দর চেহারার মানুষ মাত্রই স্মার্ট মানুষ। কিন্তু এ ধারণা গত হয়েছে আরও আগে। আজ এ কথা সত্য, স্মার্টনেস হচ্ছে মানুষের অভ্যনত্মরীণ গুণাবলী যা বাচনভঙ্গি, কথাবার্তা বা অভিব্যক্তির মাধ্যমে প্রকাশ পায়, এটা একটা মানবীয় গুণাবলী। অনেকেই মনে করেন অফিস তো কাজ করার জায়গা এখানে স্মার্টনেস প্রদর্শনের কি আছে? এটা ঠিক, একটা সময় ছিল যখন মানুষ অফিসে কেতাদুরসত্ম হয়ে যাওয়ার চিনত্মা আমলে নিত না, কিন্তু আধুনিক প্রযুক্তি ও প্রতিযোগিতার যুগে অফিসগুলো যেমন আধুনিক সুসজ্জায় সজ্জিত হয়, তেমনি অফিস স্টাফদেরও শামিল হতে হয় স্মার্টনেস প্রতিযোগিতায়। এ কারণে অফিস এক্সিকিউটিভগণ রীতিমতো সারা বছরের পোশাক সিডিউল পর্যনত্ম করে থাকেন। কেননা দিনের বেশিরভাগ সময়ই কাটাতে হয় অফিসে। এ ছাড়া সপ্তাহে একদিন ছুটি ছাড়া বছরের ম্যাক্সিমাম দিনগুলো কাটাতে হয় অফিসে, কাজেই অফিসিয়াল পোশাক নির্বাচন করাটা অত্যনত্ম জরম্নরী। বাংলাদেশ ষড়ঋতুর দেশ হওয়ায় দু'মাস, তিন মাস অনত্মর অনত্মর আবহাওয়ার পরিবর্তন ঘটে। আবহাওয়ার সঙ্গে সামাঞ্জস্য রেখে পোশাকের কাপড়, রং সিলেক্ট করাটা জরম্নরী। আর এখানেই বহির্প্রকাশ ঘটে স্মার্টনেসের। অনেক দাম দিয়ে ড্রেস কিনেও সবার সামনে আকর্ষণীয় হওয়া যায় না, আবার অল্পদামের পোশাকও অনেক সময় আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। এৰেত্রে দূরদর্শিতার পরিচয় দিতে হয়। পোশাক ডিজাইনিং এবং প্যাটার্ন সম্বন্ধে স্বচ্ছ ধারণা রাখা উচিত। যেমন গরমকালে হাল্কা কালারের এবং সুতি কাপড় পরা ভাল। এ ছাড়া বর্তমানে ব্যাংকগুলোতে ফুল এয়ার কন্ডিশনাইজড হওয়াতে সু্যট অথবা টাই সারা বছরই পড়ে যেতে হয়। সে কারণে ড্রেসের সঙ্গে টাইয়ের কালার ম্যাচ করা বা কন্ট্রাস্ট কালার ম্যাচিং করাটা কেতাদুরসত্মের পরিচায়ক। বাংলায় একটা প্রবাদ আছে_ 'আগে দর্শনদারী পড়ে গুণ বিচারি' এটাই বাসত্মব। আপনাকে আগে দেখে যদি ভাল লাগে তারপরেই আপনার গুণ বিশেস্নষণের প্রয়োজন পড়বে। এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে যারা ইন্টারভিউ বোর্ড থেকে বাদ পড়েছেন শুধু স্মাটনেসের কারণে। ইন্টারভিউ বোর্ডে একজন পরীৰাথর্ীকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিশেস্নষণ করা হয়, অতএব ইন্টারভিউ বোর্ডে নিজেকে স্মার্ট হিসেবে প্রেজেন্ট করাটা একটা মুখ্য বিষয়। সেই সঙ্গে বিষয়ভিত্তিক জ্ঞান আহরণ তো থাকতেই হবেই। শীতের সময় সু্যট, বেস্নজার, অথবা হাফ সোয়েটার আপনার সৌন্দর্য বাড়িয়ে তুলবে। অনেক সময় হাইনেক গেঞ্জিগুলোর সঙ্গে বেস্নজার পরলে বেশ লাগে। নারীদের ৰেত্রে শাড়ি অথবা সালোয়ার কামিজ যেটাই পড়ুক না কেন তার সঙ্গে ম্যাচ করে যদি হাল্কা অর্নামেন্টস পরা যায় তাহলে মানাবে দারম্নণ। তবে এটা অবশ্যই লৰণীয়, অফিসে কখনই ভারি গহনা বা সোনার গহনা পড়ে না যাওয়াই উচিত। এটা দৃষ্টিকটু। এখন অবশ্য অনেক অফিসে নারীরা সু্যট, বেস্নজার পরছেন। এ কারণে বিভিন্ন ফ্যাশন হাউসে নানা ধরনের নানা ডিজাইন ও কালারের রেডিমেট সু্যট, বেস্নজার পাওয়া যায় যা বেশ কোয়ালিটিফুল। পোশাক-আশাকে স্মার্টনেসের পাশাপাশি কথাবার্তা ও চালচলনে দৰতা অর্জন করা উচিত। কারণ সু-ব্যবহার এবং কলিগদের সঙ্গে সৌহার্দপ্রীতি কাজের গতিকে বৃদ্ধি করে বহুগুণ। আপনার এ গুণের কারণে অফিস কলিগরা নানান কাজে আপনাকে হেলপ করতে এগিয়ে আসবে, আর কলিগদের এ ধরনের হেল্্প কর্মৰেত্রে আপনার দৃঢ়বদ্ধতা বাড়িয়ে তুলবে। এসবের মধ্যে সু-সমন্বয় ঘটলে বস্্দের সু-নজরে পড়াটাই স্বাভাবিক। অতএব প্রতিযোগিতার এই যুগে নিজেকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করতে হলে স্মার্টনেসের বিকল্প নেই।
ছবি আরিফ আহমেদ
মডেল তানভির, রাসেল ও পলিন
কৃতজ্ঞতা রে কমিউনিকেশন্স
মেকাপ পারসোনা

No comments

Powered by Blogger.