ঝাড়খণ্ডে বাংলা প্রচারে 'ভাষা-রথ'

ঝাড়খণ্ডে বাংলাভাষী পড়ুয়াদের মধ্যে শিক্ষার প্রসারে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। নতুন বছরে জামশেদপুরের একটি অনুষ্ঠানে পড়শি রাজ্যে বাংলাভাষীদের মাতৃভাষার সঙ্গে পরিচয় ঘটাতে প্রাথমিক স্তরের এক লাখ পাঠ্যপুস্তক 'উপহার' দেওয়া হচ্ছে।
ঝাড়খণ্ড বঙ্গভাষী সমন্বয় সমিতির উদ্যোগে আজ ৩ জানুয়ারি থেকে একটি 'ভাষা-রথ' ঝাড়খণ্ড সফরের জন্য পথে নামছে। এই যাত্রার সূচনা করবেন পশ্চিমবঙ্গের স্কুলশিক্ষা মন্ত্রী পার্থ দে।
বঙ্গভাষী সমন্বয় সমিতির দাবি, পূর্ব সিংভূম, সরাইকেলা-খরসোঁয়া বা সাঁওতাল পরগনার কয়েকটি জেলাসহ ঝাড়খণ্ডের অন্তত ১৬টি জেলায় বাংলাভাষীর সংখ্যা অনেক। কিন্তু পাঠ্যপুস্তক বা শিক্ষকের অভাবে গত দেড় দশকে বাংলামাধ্যম স্কুলগুলো ক্রমশ 'নিশ্চিহ্ন' হয়ে যাচ্ছে, নয় তো হিন্দি-মাধ্যম স্কুলে রূপান্তরিত হচ্ছে। সমিতির সভাপতি বিকাশ মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, 'বাংলাভাষীদের মাতৃভাষা শিক্ষার অসুবিধা তো আছেই, জনগণনার সময়ে ইচ্ছাকৃতভাবে বাংলাভাষীদের হিন্দিভাষী বলে চিহ্নিত করাও শুরু হয়েছে। এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী অর্জুন মুণ্ডার সঙ্গে আমরা কথা বলেছি।' মুণ্ডার ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী দুই দশক আগে রাজ্যে কত বাংলামাধ্যম স্কুল ছিল প্রশাসনকে তার খোঁজখবর নিতে বলেছেন। পরিকাঠামোর ব্যবস্থা করে ওই স্কুলগুলোকে বাঁচিয়ে তুলতে তিনি আগ্রহী।
এই প্রেক্ষাপটেই 'ভাষা-রথ' পথে নামার দিনে এক লাখ 'কিশলয় প্রথম ভাগ' দিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। সমিতির কর্তারা আরো ১০ হাজার 'বর্ণপরিচয়' জোগাচ্ছেন। বিকাশ বলেন, 'ভাষা-রথ' প্রথম ১৫ দিন গোটা পূর্ব সিংভূম জেলার জামশেদপুর, বহরাগোড়া, ঘাটশিলা, ডুমরিয়া, পটমডা বা চাকুলিয়ায় ঘুরবে। তারপর রাজ্যের অন্যত্র যাবে। বাংলাভাষীদের নিজেদের ভাষার বিষয়ে সচেতন করা ও বাংলা পাঠ্য বই বিলি করা হবে। ২৪ আসনের একটি মাঝারি মাপের বাসেই এই 'ভাষা-রথ' সাজানো হচ্ছে। রবীন্দ্রনাথ-বিরসা মুণ্ডা-শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সংবলিত বাসে বাঙালির ভাষা বাঁচানোর দাবি লেখা থাকবে।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা।

No comments

Powered by Blogger.