কৃষিতে নীরব বিপস্নব- বীজ বপন ও ফসল কাটার আধুনিক যান্ত্রিক পদ্ধতি

কিশোরগঞ্জ জেলার গ্রামাঞ্চলে কৃষি কাজে ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি। গবাদিপশুশক্তির চাষাবাদের সনাতন ব্যবস্থা অনেক আগেই দখল করে নিয়েছে পাওয়া টিলার (কলের লাঙ্গল) ও ধান মাড়াইয়ের 'বুম' মেশিন।
এবার যোগ হয়েছে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) উদ্ভাবিত পাওয়ার চালিত বীজ বপন ও ফসল কাটার মেশিন। স্বল্পব্যয়, অল্প সময় ও কম শ্রমিকের সাহায্যে অধিক কার্যকর হওয়ায় কৃষকদের মাঝে এ প্রযুক্তি দ্রম্নত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
কৃষি জেলা কিশোরগঞ্জে আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহারের এক নীরব বিপস্নব সংঘটিত হচ্ছে। কৃষিকাজে পুরনো পদ্ধতি, প্রকৌশল ও প্রযুক্তির স্থান দখল করে নিচ্ছে নতুন ও আধুনিক যন্ত্রপাতি। জেলার বিভিন্ন এলাকায় পাওয়ার টিলার, পাওয়ার পাম্প ও ধান মাড়াইয়ের বুম মেশিনের ব্যবহার বেশ পুরনো হলেও পাওয়ার টিলারচালিত বীজ বপন ও ফসল কাটার মেশিন এবারই মাঠে নেমেছে। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তা ও কর্মীরা হাতে-কলমে শিখিয়ে দিচ্ছেন নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার। কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার বর্ধিষ্ণু গ্রাম দনাইলের কৃষক রফিকুল ইসলাম ও মফিজ উদ্দিন তাঁদের জমিতে এই প্রথমবার পাওয়ার টিলার চালিত বীজ বপন প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন। এ প্রযুক্তির সুফল পেয়ে তাঁরা খুবই খুশি।
পাওয়ার টিলারচালিত বীজ বপন পদ্ধতিতে একই সঙ্গে জমির মানসম্মত চাষ, মই দেয়া, বীজ বপন ও সারের বৈজ্ঞানিক ব্যবহার সম্ভব হওয়ায় এলাকার কৃষকরা এ প্রযুক্তির প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছেন। তাছাড়া প্রচলিত পাওয়ার টিলারের সাহায্যে ৩/৪টি চাষে জমি যতটুকু উপযোগী করা যায় এ পাওয়ার টিলারের সাহায্যে এক চাষেই তার থেকে বেশি উপযোগী করা যায়। এ টিলারের হলার সংখ্যা অনেক বেশি। এর নিচের অংশে রয়েছে জমি পালিশ করার রম্নলার। পাওয়ার টিলারটি চলার সময় মাঝখানে বসানো পকেটে থাকা বীজ ও সার নির্দিষ্টমাত্রায় গিয়ার ও লিভারের সাহায্যে জমির মাটিতে মিশে যায়। কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তাগণ এ প্রযুক্তির সুফল ও ভবিষ্যত সম্ভাবনার বিষয়ে খুবই আশাবাদী। একই এলাকার বোরো ধান কাটা হচ্ছে যান্ত্রিক প্রযুক্তিতে। এ প্রযুক্তি দেখতে ভিড় করছে এলাকার মানুষ। পাওয়ার টিলারচালিত ধান ও গম কর্তন মেশিনের দ্রম্নত ও সুনিপুণভাবে ফসল কাটার দৃশ্য দেখে অবাক শিশুরা। জেলার বোরো চাষ অধু্যষিত হাওর এলাকায় এ যন্ত্রটির ব্যাপক ব্যবহারের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। কিশোরগঞ্জ জেলার কৃষকদের আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতির ব্যবহার পাল্টে দিচ্ছে দৃশ্যপট। বদলে যাবে কৃষি অর্থনীতির হিসাব-নিকাশ। এ দেশের কৃষিতে নিয়ে আসতে পারে নীরব বিপস্নব। ড. মোঃ ইউসুফ আলী হাব ম্যানেজার সিসা গাজীপুর, ড. আব্দুল ওয়াহাব প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও কৃষি প্রকৌশলী এরশাদুল হক এ প্রতিবেদককে জানান, উদ্ভাবিত নতুন বীজ বপন এবং ফসল কাটার মেশিন এ জেলার কৃষিতে নীরব বিপস্নব ঘটাবে।
_শাহ আজিজুল হক, কিশোরগঞ্জ

No comments

Powered by Blogger.