পাকিসত্মানে তৈরি জাল নোট- চলছে চোরাচালান, জঙ্গী প্রশিৰণ by গাফফার খান চৌধুরী

 বাংলাদেশের সিংহভাগ চোরাচালান নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে পাকিসত্মানে তৈরি জাল বৈদেশিক মুদ্রায়। পাকিসত্মানে বসেই বাংলাদেশে বসবাসকারী পাকিসত্মানীদের মাধ্যমে এ চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
বাংলাদেশে বসবাসকারী এ রকম প্রায় অর্ধশত পাকিসত্মানীর সন্ধান পেয়েছে গোয়েন্দারা। বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শেষ দিকে বাংলাদেশে চোরাচালানের নিয়ন্ত্রণ চলে যায় পাকিসত্মানী মাফিয়া ও জঙ্গীদের হাতে। জাল বৈদেশিক মুদ্রার ব্যবসা থেকে আয়ের একটি অংশ দিয়ে বাংলাদেশী জঙ্গীদের পাকিসত্মানের জঙ্গী প্রশিৰণ ক্যাম্পে ট্রেনিং দেয়া হয়। পাকিসত্মানী মাফিয়া ও শীর্ষ জঙ্গীরা বাংলাদেশের চোরাচালান এখনও নিয়ন্ত্রণ করছে। সে অনুযায়ী গত প্রায় ১০ বছর ধরে তারা বাংলাদেশে চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ করছে। শুধু চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ করছে না, জাল বৈদেশিক মুদ্রার ব্যবসা থেকে আয়ের একটি বড় অংশ বাংলাদেশে জঙ্গীবাদের উত্থানের পেছনে ঢালছে। গ্রেফতারকৃত দুই পাকিসত্মানীর দেয়া তথ্যমতে বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে মোহাম্মদ জাহিদ নামে আরও এক পাকিসত্মানী নাগরিককে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দারা। তার কাছ থেকে ৫০ হাজার জাল ভারতীয় রম্নপী উদ্ধার করা হয়েছে। আজ জাল রম্নপীসহ গ্রেফতার হওয়া দুই পাকিসত্মানী নাগরিককে আবার রিমান্ডের জন্য আদালতে সোপর্দ করা হবে।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, ২০০১ সালের শেষের দিকে বাংলাদেশে চোরাচালান ব্যবসার সিংহভাগ পাকিসত্মানী মাফিয়া ও জঙ্গীদের হাতে চলে যায়। এ ৰেত্রে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের একটি বড় অংশ সহযোগিতা করেছে। পাকিসত্মানের করাচীতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জাল মুদ্রা তৈরি হচ্ছে। করাচী থেকে সেসব জাল মুদ্রা বিভিন্ন দেশে বসবাসরত পাকিসত্মানী নাগরিকদের মাধ্যমে সেখানে পাঠানো হয়। গত মঙ্গলবার ১০ লাখ জাল ভারতীয় রম্নপীসহ পাকিসত্মানী নাগরিক দানিশ ও সাবি্বরকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। পরে তাদের ৩ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। গ্রেফতারকৃত দানিশ ও সাবি্বর পাকিসত্মান থেকে এসব জাল বৈদেশিক মুদ্রা বাংলাদেশে নিয়ে আসে। পরে তা বাংলাদেশে অবস্থানকারী পাকিসত্মানী চোরাকারবারিদের হাতে পেঁৗছে দেয়া হয়। বাংলাদেশে এ রকম পাকিসত্মানী নাগরিকের সংখ্যা অনত্মত অর্ধশত। এসব চোরাকারবারি বাংলাদেশে আটকেপড়া পাকিসত্মানীদের ব্যবহার করে। আটকে পড়া পাকিসত্মানীরা মাঠ পর্যায়ে কাজ করে থাকে।
গ্রেফতারকৃত পাকিসত্মানী নাগরিক দানিশ ও সাবি্ববর অনত্মত ১০ বছর ধরে বাংলাদেশে জাল বৈদেশিক মুদ্রার ব্যবসা করে আসছে। জাল ভারতীয় রম্নপী দিয়ে পাশর্্ববর্তী দেশ থেকে শাড়ি, থান কাপড়, গরম্ন, ফেনসিডিল কেনা হয়। পরে তা সীমানত্ম দিয়ে বাংলাদেশে পাঠানো হয়। সীমানত্মে বহু পাকিসত্মানী চোরাকারবারি সিন্ডিকেট সক্রিয় রয়েছে। পুরো সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িতরা সবাই পাকিসত্মানী নাগরিক। এ ৰেত্রে বাংলাদেশী নাগরিকদের পারতপৰে সিন্ডিকেটের সদস্য করা হয় না। এসব চোরাচালান সিন্ডিকেটের সঙ্গে বাংলাদেশের শতাধিক লোকের যোগাযোগ রয়েছে। বৈদেশিক জাল মুদ্রার ব্যবসা থেকে আয়ের একটি বড় অংশ জঙ্গীবাদের উত্থানের পেছনে ব্যয় করা হচ্ছে। বাংলাদেশের অনেক জঙ্গী সংগঠন এ চোরাচালান খাত থেকে নিয়মিত মোটা অঙ্কের টাকা পেয়ে থাকে। এসব টাকায় বাংলাদেশী জঙ্গীদের পাকিসত্মানের বিভিন্ন জঙ্গী প্রশিৰণ কেন্দ্রে প্রশিৰণের ব্যবস্থা করা হয়। বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে বাংলাদেশের সিংহভাগ চোরাচালান ব্যবসা পাকিসত্মানী মাফিয়া ও শীর্ষ জঙ্গী নেতাদের হাতে চলে যায়। বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে পাকিসত্মানী মাফিয়া ও শীর্ষ জঙ্গীদের বাংলাদেশে জমজমাট চোরাচালান বাণিজ্য ছিল।
গ্রেফতারকৃতদের আজ আদালতে সোপর্দ করে আবার রিমান্ডের জন্য আবেদন করা হবে। এদিকে বৃহস্পতিবার গ্রেফতারকৃত পাকিসত্মানী নাগরিকের কাছ থেকে ৩টি পাসপোর্ট উদ্ধার করা হয়েছে। অনত্মত ১০ বছর ধরে একাধিক পাকিসত্মানী শক্তিশালী চোরাচালান সিন্ডিকেট বাংলাদেশে, ভারত ও নেপালে জাল বৈদেশিক মুদ্রার ব্যবসা করে আসছিল।

No comments

Powered by Blogger.