হাসপাতালের স্বপ্ন ছিল তাঁর

সারা বিশ্ব এখন তাঁকে জানে 'দিল্লিতে গণধর্ষণের শিকার' বলে। কিন্তু পরিবার ও স্বজনের কাছে তিনি ছিলেন 'সাহসী, নির্ভীক আর প্রাণপ্রাচুর্যে ভরা'। গত ২৯ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া সেই মেডিক্যাল ছাত্রীর বাবা ও ভাই এমন অনেক কথাই বলেছেন বিবিসিকে।
বলেছেন তাঁর পারিবারিক জীবনের অনেক গল্প। গত মঙ্গলবার মেয়েটির দেহভস্ম গঙ্গায় বিসর্জন দেওয়ার সময় এসব আলাপ হয় তাঁর সঙ্গে।
উত্তর প্রদেশ রাজ্যের বাল্লিয়া জেলার নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারটি ১৯৮৩ সালে দিল্লিতে চলে যায়। লক্ষ্য ছিল মেয়েটির পড়াশোনা ও উন্নত জীবন। কিন্তু ধর্ষণের ঘটনা সব লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে। ওই ছাত্রীর বাবা জানান, 'আমার মেয়ের স্বপ্ন ছিল নিজের গ্রামে একটি হাসপাতাল তৈরি করবে। ও চাইত অনুন্নত এ অঞ্চলের মানুষের জন্য কিছু করবে। তাদের দুঃখ দূর করবে। পুতুল খেলার বয়স থেকেই ও চিকিৎসক হতে চেয়েছে।'
পাশবিক এ ঘটনার শিকার হওয়ার আগে ওই ছাত্রীর সঙ্গে সর্বশেষ কথা হয়েছিল ছোট ভাইয়ের, 'দিদি দিন-রাত পড়াশোনা করত। আমরা জানতাম না দিদি কখন ঘুমাত, কখন জেগে উঠত।' ঘটনার দিনের বিবরণ দিতে গিয়ে তাঁর ছোট ভাই বলেন, 'দিদি সাধারণত প্রতিদিন রাত ৮টার মধ্যে বাড়ি ফিরত। দেরি হলে আগেই ফোন করে জানাত। ওই দিন (১৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে দিদি ফোন করে জানায়, তার ফিরতে একটু দেরি হবে। ৮টার পর দিদিকে ফোন দিয়ে আর পাচ্ছিলাম না। কয়েক ঘণ্টা পর হাসপাতাল থেকে একটি ফোন আসে। তারা জানায়, একটি দুর্ঘটনার পর পুলিশ দিদিকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করেছে।' হাসপাতালে দিদির সঙ্গে বড়দিনের দিন শেষ কথা হয় তাঁর, 'দিদি তার আঙুল নেড়ে ইশারায় বুঝিয়েছিল ও স্বর্গে চলে যাচ্ছে।'

No comments

Powered by Blogger.