সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের একুশের অনুষ্ঠানমালা শুরু- সংস্কৃতি সংবাদ

বুকের খুনে যুদ্ধ জারি/অমর একুশে ফেব্রুয়ারি- স্লোগানে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শুরু হয়েছে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের একুশের অনুষ্ঠানমালা। সোমবার বিকেলে ১৪দিনব্যাপী এ আয়োজনের উদ্বোধন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
অনুষ্ঠানে আলোচনা করেন প্রফেসর এ্যামিরিটাস ড. আনিসুজ্জামান, নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, লিয়াকত আলী লাকী, আসাদুজ্জামান নূর, গোলাম কুদ্দুছ, হাসান আরিফ প্রমুখ। জোট সভাপতি নাসিরউদ্দিন ইউসুফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ঘোষণাপত্র পাঠ করেন মফিদুল হক।
বক্তারা বলেন, '৫২-এর ভাষা আন্দোলন আমাদের স্বাধিকার আন্দোলনের পথ দেখিয়েছিল। বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছিল বাঙালী। সে আলোকিত পথে হেঁটেই মুক্তির স্বাদ পাই আমরা। কিন্তু এখনও একুশের চেতনার বিরোধী ঘৃন্য যদ্ধাপরাধী রাজাকাররা ষড়যন্ত্রে উলেস্নখ করে তাঁরা বলেন, যত দ্রম্নত সম্ভব এ চক্রটিকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
অনুষ্ঠানে পঠিত ঘোষণা পত্রে বলা হয়_ একুশের প্রেরণা ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে জাতিকে দেখিয়েছে বিকাশের পথ। একবিংশ শতকের প্রথম দশকের সমাপ্তিলগ্নে দাঁড়িয়েও আমরা ল্য করি যুগ থেকে যুগে, প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম বয়ে চলেছে একুশের চেতনা। মানুষের মুক্তিপথ রচনায়, ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে এ দেশের ছাত্র-জনতা একদা বুকের রক্ত ঢেলে রাজপথ রঞ্জিত করেছিল। সেই প্রেরণায় একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে বিপুল আত্মদানের বিনিময়ে বাঙালী অর্জন করে স্বাধীনতা। পঞ্চম সংশোধনী বাতিল করে প্রদত্ত বিচার বিভাগীয় রায়ের পথ ধরে জাতি আবার মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিফলনকারী সাংবিধানিক ধারায় ফিরে যাবে বলেও আশা প্রকাশ করা হয় ঘোষণাপত্রে ।
সাংস্কৃতিক পর্বের সূচনাতে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী তিমির নন্দী গেয়ে শোনান 'ভুলব না ভুলব না সেই একুশে ফেব্রম্নয়ারি' গানটি। মিতা হক পরিবেশন করেন 'যে তোমায় ছাড়ে ছাড়ুক'সহ কয়েকটি গান। একক গান পরিবেশন করেন ইফফাত আরা নার্গিস। আবৃত্তি করেন ভাস্বর বন্দোপাধ্যায়। তাঁর কণ্ঠে শামসুর রাহমানের 'একুশের কবিতা' মুগ্ধ করে শ্রোতাদের। বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের শিল্পীরা অনুষ্ঠানে দলীয় সঙ্গীত পরিবেশ করেন। পথনাটক পরিবেশন করে বঙ্গরঙ্গ নাট্যদল। কেন্দ্রীয় খেলাঘরের শিশু শিল্পীরা পরিবেশন করে দেশাত্মবোধক নৃত্য।
এর আগে ভাষা শহীদসহ সকল শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন ও শহীদ মিনারে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণের মধ্য দিয়ে শুরম্ন হয় অনুষ্ঠান। এ সময় জাতীয় সঙ্গীত ও একুশের গান পরিবেশন করে ছায়ানটের শিল্পীরা।
শহীদ মিনারের এ অনুষ্ঠানমালা চলবে আগামী ১৮ ফেব্রম্নয়ারি পর্যনত্ম। এর পর ১৯ ফেব্রম্নয়ারি থেকে ২১ ফেব্রম্নয়ারি পর্যনত্ম অনুষ্ঠান চলবে ধানম-ির রবীন্দ্র সরোবরে। এখানে অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করবেন বরেণ্য সাংবাদিক ও লেখক ফয়েজ আহমদ।
দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পী, সংগঠনের পরিবেশনায় প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত পর্যনত্ম মুখরিত থাকবে এ এলাকাটি।

সেলিম আলদীন স্মরণে সেমিনার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চতর মানববিদ্যা গবেষণা কেন্দ্রের উদ্যোগে সোমবার কেন্দ্রের সেমিনার কৰে সভাপতি অধ্যাপক নূরম্নর রহমানের সভাপতিত্বে এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। 'নাট্যকার সেলিম আলদীন' শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ সাইফুল ইসলাম। আলোচনার অংশগ্রহণ করেন জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের আফসার আহমদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ ও কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক খোন্দকার আশরাফ হোসেন। প্রবন্ধকার ড. মোঃ সাইফুল ইসলামের তাঁর প্রবন্ধে নাট্যকার সেলিম আলদীনকে সমকালীন নাট্য রচনার কিংবদনত্মি হিসেবে উলেস্নখ করেন। তিনি নতুন ধারার নাটকের পথিকৃৎ। নাটক ও নাট্য-সাহিত্যে সেলিম আলদীনের মূল্যায়ন জরম্নরী বলে প্রবন্ধকার মনে করেন।

No comments

Powered by Blogger.