তাহসান মিথিলার হানিমুন by মেহেদী মাসুদ

তাহসান ও মিথিলা দম্পতি মধুচন্দ্রিমায় গিয়েছিলেন ২০০৬ সালে। সময়টা ছিল অগাস্ট মাস। তাঁদের বিয়ে হয় ৩ আগস্ট। মধুচন্দ্রিমায় যান বিয়ের ১৬ দিন পর। সেই দিনের কথা উঠতেই তাহসান আর মিথিলার চোখে-মুখে এক আনন্দের ঢেউ খেলে যায়। দুজনের মুখই হাসিহাসি।


তাহসান বলেন, ‘সেবার আমরা গিয়েছিলাম মালয়েশিয়ায়, লাঙ্কাউইতে।’
তার মানে, এই দম্পতি পরে আবারও মধুচন্দ্রিমায় গিয়েছিলেন?
‘হ্যাঁ, এর পর থেকে প্রতিবছর অগাস্ট মাসের এই দিনে আমরা কোথাও না কোথাও বেড়াতে যাই।’ বলেন তাহসান।
মিথিলা বলেন, ‘এ পর্যন্ত অনেক জায়গায় গিয়েছি—থাইল্যান্ডের ব্যাঙ্কক, পুকেট, পাতায়া, ফিফি। যুক্তরাষ্ট্রের লাসভেগাস আর ক্যালিফোর্নিয়ার ডিজনিল্যান্ডেও গিয়েছি। এবার ঈদের পরদিন চলে যাই থাইল্যান্ডে। পাঁচ দিন থেকে এলাম।’
এরপর?
‘পরের বছর যাব কক্সবাজারে।’ হাসতে হাসতে বললেন মিথিলা।
গত শনিবার সন্ধ্যায় কথা হচ্ছিল এই তারকা দম্পতির সঙ্গে, রাজধানীর পরীবাগে, তাঁদের বাসায়। শুরুতেই এল হানিমুন প্রসঙ্গ। কারণ, এবারই প্রথম তাঁরা একসঙ্গে ২৬ পর্বের একটি গেম শো উপস্থাপনা করছেন। নাম হানিমুন। অনুষ্ঠানটির প্রথম পর্ব প্রচারিত হয়েছে এবার ঈদে, চ্যানেল টোয়েন্টিফোরে। এই পর্বে অতিথি ছিলেন ক্রিকেটার খালেদ মাহমুদ ও তাঁর স্ত্রী, অভিনয়শিল্পী মোশাররফ করিম ও তাঁর স্ত্রী, দিহান ও তাঁর স্বামী এবং এজাজ মুন্না ও মম। তাহসান জানান, প্রথমটি ছিল সেলিব্রিটি পর্ব। এখানে মোশাররফ দম্পতি জিতেছিলেন দুই লাখ টাকা।
ঈদের পর প্রতি শুক্রবার রাতে নিয়মিত প্রচারিত হচ্ছে অনুষ্ঠানটি। এখন এই অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন নতুন বিয়ে করেছেন, কিন্তু মধুচন্দ্রিমায় যাওয়ার সুযোগ হয়নি, কিংবা আবারও মধুচন্দ্রিমায় যেতে চান, এমন দম্পতিরা। পুরস্কার হিসেবে বিজয়ীকে দেওয়া হচ্ছে ৫০ হাজার টাকা, বিমানের টিকিট ও ভালো মানের হোটেলে থাকার সুযোগ। অন্য প্রতিযোগীদের জন্য থাকছে ছোট পুরস্কার।
এর আগে এই দম্পতি একসঙ্গে উপস্থাপনা করেছেন পন্ডস মাই সেকেন্ড হানিমুন আয়োজনের ‘গালা নাইট’ পর্ব আর চ্যানেল নাইনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান।
হানিমুন নিয়ে তাহসান বলেন, ‘নানা ধরনের খেলা থাকে প্রতিযোগীদের জন্য। অন্য কোনো প্রতিযোগিতার সঙ্গে যেন ভাবনাগুলো মিলে না যায়, আমরা তার শতভাগ চেষ্টা করছি।’
উপস্থাপনার ব্যাপারকে একটু কঠিন বলে মনে করছেন মিথিলা। বললেন, ‘অভিনয় করতে করতে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। চরিত্রের মধ্যে ঢুকে গেলে আর কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু উপস্থাপনা সহজ নয়। পুরো সময় অজানা একটা চাপ নিজের মধ্যে অনুভব করি।’
এবার প্রসঙ্গ পাল্টাতে হবে। নাটক। এবার ঈদে এই দম্পতি একসঙ্গে অভিনয় করেছেন। নাটকের নাম সময় চুরি। পরিচালক অমিতাভ রেজা। তাহসান বলেন, ‘অনেক দিন পর আমরা একসঙ্গে অভিনয় করেছি। অমিতাভ রেজা শিগগিরই চলচ্চিত্রের কাজ শুরু করবেন। তারই প্রস্তুতি হিসেবে এই নাটকের কাজ করলেন। গল্পটা যেমনই হোক, তৈরিটা কিন্তু দুর্দান্ত হয়েছে। ক্যামেরার কাজ, আলো, সম্পাদনা—সবকিছু মিলিয়ে অসাধারণ।’
এবার ঈদে নিজের আরেকটি কাজের কথা বললেন তাহসান। নাম মন ফড়িংয়ের গল্প। এই টেলিছবিতে তাঁর সঙ্গে ছিলেন তিশা। পরিচালক শিহাব শাহীন। অভিনয়ের পাশাপাশি এখানে সাজিদ সরকারের সুর করা একটি গান গেয়েছেন তাহসান—‘মেঘের পরে’। বললেন, ‘নতুন ছেলে, কিন্তু দারুণ সুর করেছে।’ টেলিছবিটি নাকি অনেক দর্শকেরই ভালো লেগেছে। কারণ, অনেক প্রশংসা পেয়েছেন তাহসান ও তিশা।
এবার তাহসান আর মিথিলার গানের কথা শোনা যাক। তাহসান বলেন, ‘গানের বাজারের যে দুরবস্থা, ভরসাই পাই না।’ আর মিথিলা বলেন, ‘এখন শ্রোতাদের সচেতন হতে হবে। অডিও সিডি কিনে গান শুনতে হবে। শুধু শ্রোতাদের সচেতনতাই পারে পাইরেসি ঠেকাতে।’
সম্প্রতি নতুন ব্যান্ড গড়েছেন তাহসান—সুফি। নতুন ব্যান্ড এখন কী কাজ করছে? তাহসান বলেন, ‘কাজের ব্যস্ততার কারণে সময় নিয়ে আমরা কেউই বসতে পারছি না। নতুন কিছু করার চেষ্টা করছি, কিন্তু হচ্ছে না। সুফির গানগুলো কেমন যেন আমার নিজের গানের মতো হয়ে যাচ্ছে। তাহসানের গান নয়, আমরা চাইছি, সুফির নামেই পরিচিত হোক সুফির গানগুলো।’

No comments

Powered by Blogger.