চাঁদাবাজ, দলবাজ ও বয়স্কদের বাদ দিন- ছাত্রদলের নেতৃত্বে অস্ত্রবাজেরা

প্রশ্ন উঠেছে, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির নেতৃত্বে যে পাঁচজন করে নেতা নিয়োগ দিয়ে নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে, তাঁরা কি ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দেবেন, নাকি সন্ত্রাসী অভিযানে? কারণ, তাঁরা প্রায় সবাই অস্ত্র চালনায় হাত পাকিয়েছেন। বয়স অনেকের ৪০ পেরিয়ে গেছে।


সবাই অছাত্র। কারও কারও সন্তানেরা স্কুলে পড়ছে। এমনকি অতীতে তাঁদের কেউ কেউ খোদ বিএনপির অফিসে সশস্ত্র হামলাও চালিয়েছেন। একজন তো আগে ছাত্রলীগ করতেন, তখন ছাত্রদলের মিছিলে সশস্ত্র অভিযান চালিয়েছিলেন। এখন তাঁদের সবার সাত খুন মাফ!
দলের দাবি, দক্ষতা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে তাঁদের ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে আনা হয়েছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে তাঁরাই রাজপথে থাকবেন। প্রকারান্তরে বিএনপি স্বীকার করে নিল, অভিযুক্ত অস্ত্রধারীদের দিয়ে গঠিত ছাত্রদলের নেতৃত্বই হবে সরকারবিরোধী আন্দোলনের বর্শাফলক। এটাই কি বিএনপির রাজনীতি?
বিএনপির দাবি, সরকারি দলের অন্যায়, পুলিশি নির্যাতন ও সরকারদলীয় ক্যাডারদের সহিংসতার বিরুদ্ধে তারা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন করবে। এটাই কি তার নমুনা? সশস্ত্র ক্যাডারদের ছাত্রদলের মূল নেতৃত্বে এনে কি তারা রাজনীতিকে সন্ত্রাসমুক্ত করবে?
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়োগ দিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। অথচ নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের সময় বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দল অঙ্গীকার করে যে, ছাত্রদের মধ্যে দলের কোনো অঙ্গসংগঠন থাকবে না, সহযোগী সংগঠন থাকতে পারে। সেই বিধান কেউ মানছে না। আগের মতোই ছাত্রসংগঠনের মূল নেতৃত্ব নিয়োগ ও পরিচালনা করছে মূল রাজনৈতিক দল। বলার অপেক্ষা রাখে না, দলীয় রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির উদ্দেশ্যেই ছাত্রদলের নেতৃত্ব গঠন করা হয়েছে। তাঁদের নেতা বানানোর মধ্য দিয়ে প্রকৃতপক্ষে অবাধে চাঁদাবাজি, সশস্ত্র সন্ত্রাস চালানোর সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে।
মূল বিরোধী দল হিসেবে বিএনপিকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। অবিলম্বে ছাত্রদলের নেতৃত্ব থেকে অভিযুক্ত সন্ত্রাসীদের বিদায় করা হোক। দলের হস্তক্ষেপমুক্তভাবে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব গঠনের ব্যবস্থা করা উচিত। না হলে বিএনপির সব নীতিবাক্য অন্তঃসারশূন্য হয়ে যাবে।

No comments

Powered by Blogger.