প্লাস্টিক সার্জারির দিকে ঝুঁকছে মার্কিন 'টিনেজাররা'

নতুন ব্যাগ বা পোশাকের প্রতি শিশু-কিশোরদের টান অন্যরকম। নতুন স্কুলে যাওয়ার সময় সবাই-ই চায় এমন ব্যাগ ও পোশাক। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থী নাদিয়া ইলসে স্কুলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে অন্যভাবে। ১৪ বছরের নাদিয়া সার্জারির মাধ্যমে তার চেহারা পরিবর্তন করেছে।


নাদিরা একা নয়, তার মতো অনেক শিক্ষার্থীই এখন প্লাস্টিক সার্জারির মাধ্যমে তাদের নাক, চিবুক ও কানের রূপ পরিবর্তন করছে। শিশু-কিশোরদের মধ্যে এই ঝোঁক দিনকে দিন বেড়েই চলেছে।
জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের বাসিন্দা নাদিয়ার কান দুটি ছোটবেলা আকারে বড় ছিল। এজন্য স্কুলে তাকে অনেক বিদ্রুপাত্মক মন্তব্য শুনতে হয়েছে। ছেলেমেয়েরা তাকে কার্টুন ছবির ডাম্বো হাতির সঙ্গে তুলনা করত। এই গঞ্জনা এড়াতে সে কসমেটিক সার্জারির দারস্থ হয়। এ প্রসঙ্গে নাদিয়া বলে, 'নিজের কাছে নিজেকে সুন্দর মনে হচ্ছে। আগের চেয়ে নিজের সম্পর্কে ভালো বোধ হচ্ছে।' সে আরো বলে, 'নতুন রূপে ক্লাসে যেতে প্রথম প্রথম ভয় ভয় লাগছিল। পরমুহূর্তে মনে হলো একবার স্কুলে গেলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। আমাকে নিয়ে আগে যারা কটু কথা বলত তারা আমাকে দেখামাত্র তাদের ভুল বুঝতে পারবে।'
নাদিয়ার ঘটনাটি প্রথম সামনে আনে সিএনএন। এরপর কিশোরীদের প্লাস্টিক সার্জারির বিষয়টি ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে। আমেরিকান সোসাইটি অব প্লাস্টিক সার্জারি (এএসপিএস) জানিয়েছে, গত ১৫ বছরে তাদের কাছে কিশোরীরা পাঁচ ধরনের সমস্যা নিয়ে এসেছে। এর মধ্যে স্তনের আকার বড় করা, চুল পড়া কমানো, নাক ও কানের আকৃতি পরিবর্তন করা অন্যতম।
এএসপিএসের হিসাব অনুযায়ী, গত বছর দুই লাখ ৩০ হাজার কিশোরী কসমেটিক সার্জারি করেছে। এদের মধ্যে বেশির ভাগই তাদের কান ও ঠোঁট ঠিক করেছে। তাদের বেশির ভাগ হলিউডের নায়িকাদের মতো চেহারা করতে চায়। কারণ তারা নিজেদের চেহারা নিয়ে সন্তুষ্ট নয়।
নাদিয়ার চিকিৎসায় ব্যয় হয়েছে ৪০ হাজার ডলার। এ অর্থ সরবরাহ করেছে নিউ ইয়র্কের এনজিও লিটল বেবি ফেস ফাউন্ডেশন। বাচ্চাদের জন্মগত ত্রুটির চিকিৎসা দেয় এ সংস্থাটি। সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাতা ডা. থমাস রোমো বলেন, 'তার (নাদিয়া) জীবনে অনেক সমস্যা রয়েছে। সেগুলোর সবকটি আমরা ঠিক করতে পারব না। যেটি আমাদের আয়ত্তে ছিল সেটিই করেছি।'
অনেক চিকিৎসকই কিশোরীদের কসমেটিক সার্জারিবিরোধী। তারা বোঝানোর চেষ্টা করে যে বয়সের সঙ্গে সঙ্গে এসব ঠিক হয়ে যাবে। এএসপিএসের প্রেসিডেন্ট ডা. ম্যালকম রুথ বলেন, 'অনেক বেশি গুরুতর সমস্যা প্লাস্টিক সার্জারির মাধ্যমে ঠিক করা সম্ভব। তবে কিশোরী ক্ষেত্রে এটা কখনই করা ঠিক নয়।' সূত্র : টেলিগ্রাফ।

No comments

Powered by Blogger.