শহীদ মিনার মুক্তিসংগ্রামের প্রধান সোপান এর অবমাননা বন্ধ করুন by কামাল লোহানী

একটি ছবি গোটা জাতি, অর্থাৎ আপামর জনসাধারণকে লজ্জায় নিমজ্জিত করেছে। দৃশ্যটি অবশেষে খবরের কাগজের পাতায় দেখে শহীদ মিনারের পবিত্রতাকে ক্ষুণ্নকারী কতিপয়ের ধৃষ্টতা, স্পর্ধা দেখে ঘৃণায় কুঁচকে যাওয়ার উপক্রম।


আমরা যাঁরা এই দেশের সত্যিকার নাগরিক, তাঁরা কেন সচেতনতার তাগিদে ওই পবিত্র স্থানটিকে আজ ৬০ বছর পেরিয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করতে পারলাম না! এই তো সেই স্থান, যে মাতৃভাষার মান বাঁচাতে কয়েকজন তরুণ অকাতরে প্রাণ বিসর্জন দিয়ে আমাদের মাথা বিশ্বের দরবারে উঁচু করে দিয়েছিলেন, সেই সালাম, বরকত, রফিউদ্দিন, জব্বার, সফিউর, আলাউদ্দিন- এমন আরো কতজন। কতজন তা তো জানা আজও হয়নি; কারণ ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারির নিষ্ঠুরতায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী পুলিশ ও সর্বোপরি সে সময়ের মুসলিম লীগ সরকার, বিশেষ করে পূর্ব পাকিস্তানের উজিরে আলা (মুখ্যমন্ত্রী) 'নুরুল আমিন' সেদিন বেপরোয়া গুলিবর্ষণে শহীদদের অনেকের নিথর দেহ গুম করে দিয়েছিল। আজও সরকারিভাবে স্বাধীনতা অথবা মুক্তিযুদ্ধ-উত্তর বাংলাদেশে আমরা নির্ণয় করতে পারিনি কতজন শহীদ হয়েছিলেন। আজও সরকারি উদ্যোগে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের যথার্থ ইতিহাস রচনার সার্বিক উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। এমনকি শহীদদের স্মৃতিরক্ষা নয় কেবল, গোটা জনগণের শোক থেকে শক্তি সঞ্চয়ের এই পাদপীঠটির যে পরিকল্পনা ও নকশা প্রণয়ন করেছিলেন ভাস্কর নভেরা আহমদ ও শিল্পী হামিদুর রহমান, ৬০ বছর চলেও গেল, বাস্তবায়নের কোনো লক্ষণও চোখে পড়ছে না। সামরিক স্বৈরাচার জেনারেল এরশাদ নিজের মাহাত্ম্য বিকাশ ও প্রচারের জন্য শহীদ মিনারের এই রূপটি দিয়ে নিজে উদ্বোধনের আশা-আয়োজন করেছিলেন। কিন্তু সে গুড়ে বালি পড়েছিল দেশের সচেতন সংস্কৃতি কর্মীবাহিনী ও প্রগতিশীল জনগণের সচেতনতায়।
পাকিস্তান আমল থেকে আজ পর্যন্ত যত সরকার এসেছে, কেউই এর পূর্ণাঙ্গ রূপ তো দিতে চেষ্টা করেইনি, এমনকি যেটুকু কাঠামো ও চত্বর রয়েছে, তার পবিত্রতা রক্ষার জন্য কোনো নিরাপত্তা বেষ্টনী কিংবা সার্বক্ষণিক নজরদারিরও ব্যবস্থা করেনি। অযত্ন-অবহেলায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটির দুরবস্থা আগের মতো নয়, আরো শঙ্কিত পর্যায়ে নিপতিত।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার হয়ে উঠেছিল ক্ষোভ, বিক্ষোভ, প্রতিবাদ-প্রতিরোধ, ঘৃণা-ক্রোধ প্রকাশের ভিত্তিভূমি। যখনই প্রতিবাদের সময় এসেছে আমাদের জীবনের যেকোনো দুর্যোগ মুহূর্তে, তখনই আমরা ছুটে গেছি ভাষাশহীদদের কাছে প্রতিবাদের রক্তিম শপথে দৃপ্ত হয়ে উজ্জীবিত জনগণের সংগঠন-শক্তি গড়ে তুলতে। আমরা মূল বেদিকে পেছনে রেখে বলিষ্ঠতার প্রহরী হিসেবে তাঁদের কাছ থেকে আন্দোলনের সাহস সঞ্চয় করেছি। দুর্বৃত্তের দুরভিসন্ধি মোকাবিলা করে দুঃস্বপ্ন-দুঃসময়কে কাটিয়ে সত্য ও সফলতার লক্ষ্যে পৌঁছানোর অঙ্গীকারমঞ্চ ছিল এই শহীদ মিনার। আমরা যখনই কোনো সংকটে কিংবা বিপন্নতায় পড়েছি, তখনই ছুটে গেছি শহীদদের কাছে, সমাধান খোঁজার লক্ষ্যে, সাহস ও প্রেরণার জন্য। আমরা বলীয়ান হয়ে সে সংগ্রামে আত্মনিয়োগই করেছি, বিজয়ীর বেশে ফল লাভ করেছি। নিয়মিত নানা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবসগুলোতে হাজির হতাম জনসমাবেশে এই পূতপবিত্র স্থানে নতুন করে লড়াইয়ের শপথ গ্রহণ করতে। এমনি সমাবেশে মানুষ আসত অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ার জন্য কিংবা আয়োজকরা ছোট কিংবা বড় অনুষ্ঠান আকস্মিক কিংবা নির্দিষ্ট দিনে অথবা সপ্তাহ বা ততোধিক সময়ব্যাপী আয়োজন করত এই শহীদ মিনারে, তখন আমরা এই শহীদ মিনারের মূল বেদি (লাল মেঝে চত্বর) বাদ দিয়ে সামনের দিকেই সভা-সমাবেশ, অনুষ্ঠানাদি আয়োজন করতাম। কোনো দিনও এর সীমা অতিক্রম করতাম না। ওই শহীদ বেদিমূলে কেবল পুষ্পার্ঘ্যই নিবেদন করতাম। কিন্তু আজ থেকে বেশ কিছুদিন হলো দেশের উচ্চ আদালত এক রায় দিয়ে ওই পবিত্র স্থানে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করে দিয়েছেন। ফলে শহীদ মিনারের সাধারণভাবে ব্যবহারের ক্ষেত্রে খানিকটা নিষেধাজ্ঞা জারি হয়ে গেছে। তাই এখন আর আগের মতো যাওয়া হয়ে ওঠে না। তবে সীমিত আকারে বেদির সামনের চত্বরটা ছেড়ে দিয়ে দ্বিতীয় ধাপে যে অঙ্গন রয়েছে, সেখানে গিয়ে হলেও আয়োজকরা আদালতের নিষেধাজ্ঞা মেনে প্রতিবাদ, সভা ও সমাবেশ কিংবা নানা অনুষ্ঠান করে থাকেন। তবে আগে যেমন যেকোনো প্রতিবাদের জন্য সবাই ছুটে যেতেন শহীদ মিনারে, এখন আর তেমন ছুটে যেতে পারেন না।
কিন্তু প্রচণ্ড ক্ষোভ ও দুঃখের সঙ্গে লক্ষ করছি, পবিত্র এই শহীদ মিনার এলাকায় অনাকাঙ্ক্ষিত দৃশ্য হরহামেশাই দেখতে হয়। যেমন ধরুন, যেখানে লোকজন শ্রদ্ধা নিবেদন করতে যাওয়ার কথা, যায়ও বটে সময় সময়; কিন্তু বাধা-নিষেধ মানে না যারা, তারা অনেকেই সময়ে-অসময়ে বেদিতে বসে আড্ডা দেওয়া এমনকি নিন্দনীয় কাজও নাকি করে। তবে নিজেরা যা প্রত্যক্ষ করেছি নানা সময়ে, তা হলো- শহীদ মিনার হয়ে গেছে চলাচলকারী মানুষদের জন্য 'বাইপাস'। রাস্তা দিয়ে যেতে যৎকিঞ্চিৎ ঘুরে যাওয়াকে এড়িয়ে চলতে গিয়ে লোকজন শহীদ মিনারের দ্বিতীয় ধাপের চত্বরটাকেই ব্যবহার তো করেই, এর চেয়েও ঘৃণ্য, নিন্দনীয় ও জঘন্য অপরাধ করে মোটরবাইক চালিয়ে এই শহীদ মিনারের চত্বর পার হয়ে। এই মানুষের মধ্যে যারা অমানুষ, তারা এমন আচরণ করে। এ ছাড়া পশু- কখনো ছাগল, কখনো কুকুর শহীদ মিনারকেই তাদের বিচরণক্ষেত্র অথবা বিশ্রামের নিরাপদ স্থান মনে করে নিরাপদে নিদ্রা যায়। ...অথচ এসব দৃশ্য আমাদের মনে যে যন্ত্রণার উদ্রেক করে তা নিরসন করার মতো কোনো উপায় দেখি না। মনে কষ্ট লাগে, দেখে সহ্য করতে পারি না। কিন্তু নিজেরা কেবল 'দূর দূর' করে ওই পশুগুলোকে কিছু কথা শোনাই, নীতিবাক্য বলে ক্রোধ প্রকাশ করি মাত্র। কিন্তু এই অবস্থা দূর করার কোনো ধরনের প্রক্রিয়া সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নিতে দেখি না। কেন? এর প্রাথমিক কর্তৃত্ব শুনেছি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের হাতে, তারা তো অন্তত শিক্ষা-সংস্কৃতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। তারা তো কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পবিত্রতা রক্ষার জন্য নজরদারি বহাল রাখতেও পারে নিয়মিত নজরদারির মাধ্যমে। তা না হলে গণপূর্ত বিভাগ কিংবা সংস্কৃতি-মন্ত্রণালয় তথা সরকারের উপযুক্ত সংস্থা কিংবা কর্তৃপক্ষের কাছে এর পরিকল্পিত রক্ষণাবেক্ষণ, নিরাপত্তা ও সুরক্ষার জন্য তাগিদ দিতে পারে।
আমরা বক্তৃতা-ভাষণে কিন্তু জাতীয় মুক্তিসংগ্রামের প্রথম সোপান বলে আখ্যায়িত করে কী অসাধারণ আবেগের সঙ্গে ভাষা আন্দোলনের অসামান্য অবদানের কথা বলি, সালাম-বরকত-রফিক-জব্বারের প্রতি অকুণ্ঠ শ্রদ্ধা নিবেদন করি। কথার ফুলঝুরি ছড়িয়ে মানুষকে বিমোহিত করি, নিজেরাই তৃপ্তি বোধ করি দারুণ বক্তৃতা দেওয়ার অহঙ্কারে অথবা গর্বে। কিন্তু যেখানে দাঁড়িয়ে এই সম্মান বা মর্যাদা বোধ করি, তার কী দুর্দশা তার প্রতি আমাদেরই বা দায়িত্ববোধটা কতখানি? আমরা তো জানিই, শহীদ মিনারে কেবল বছরে একদিন ফুল দেওয়াই আমাদের কাজ নয়, এটি জাতীয় ঐক্য, মুক্তিসংগ্রাম, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও আপন ঐতিহ্যে মহীয়ান মাতৃভাষা রক্ষার মহান ভাষা শহীদদের স্মৃতিস্তম্ভ হওয়ায় দেশের সব মানুষের স্মৃতির মিনার। তাই তো এই স্থাপনাকে প্রতীক হিসেবে গ্রহণ করে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে অগণিত শহীদ মিনার নির্মিত হয়েছে মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের পবিত্র স্থান হিসেবে। তাই কেবল নির্দেশই নয়, বস্তুতই এই শ্রদ্ধার স্থানটিকে যথার্থ মর্যাদায় কেন আজ ৬০ বছরেও প্রতিষ্ঠা করতে পারিনি এই অত্যাধুনিক প্রযুক্তি উন্নতির সময়কালে- সেই ঈপ্সিত শহীদ মিনারকে মুক্তিযুদ্ধের মানুষেরা ব্যর্থ হচ্ছেন যথাসম্মান নিবেদন করতে? 'আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি' গানটি গাইলেই আমরা সবাই আবেগাপ্লুত হওয়ার ভাব দেখাই। কিন্তু যে কারণে এই আবেগ, সেই বিষয়টিকে সুরক্ষার জন্য সৃষ্ট এই মিনারকে দেখছি কি যথার্থ অর্থে?
আমরা যাঁরা মাঝেমধ্যেই সংকট-সমস্যায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ব্যবহার করতাম, তাঁরা কিন্তু পবিত্রতা অক্ষুণ্ন রাখতে কখনোই জুতো, চপ্পল বা স্যান্ডেল পায়ে মূল বেদির সামনের প্রথম ধাপে উঠতাম না। এই ধাপের সিঁড়িতেই ওগুলো খুলে ওপরে উঠতাম। আজও সেই সম্মানটুকু বজায় রাখি আমরা। কিন্তু দুঃখজনক হলেও প্রশ্ন হচ্ছে, রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধানরা যখন আসেন, তখন তাঁদের সঙ্গে আসা নিরাপত্তা প্রহরীরা কি এই পবিত্রতা রক্ষা করেন?
যদি না করে থাকেন, তবে কেন করবেন না? তাঁরা কি ওই মুক্তিসংগ্রামের মহান শহীদদের চেয়েও সম্মানিত অথবা মর্যাদাসম্পন্ন? তাঁরা কেন বুট পরেই ওই পবিত্র স্থানে উঠবেন? এখানে যদি পোশাকি মর্যাদা রক্ষা করতেই হয়, তবে তাঁদের প্রথম ধাপের নিচে থেকেই গার্ড অব অনার দেওয়া উচিত। জানি না, এই সরকারের সময় কী হয়, এর আগে দেখেছি, ক্ষোভও প্রকাশ করেছি।
যা হোক, মোদ্দা কথা হলো, ওই যে ছবিটি দৈনিক কালের কণ্ঠে প্রকাশিত হয়েছে, এটা নিত্যদিনের দৃশ্য। অত্যন্ত দুঃখজনক। উচ্চ আদালত রায় দিয়েছেন; কিন্তু তার পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ ও পবিত্রতা সংরক্ষণ- এ সবই তো সরকারের দায়িত্ব। আদালতের রায় অনুযায়ী একটি বিশাল কালো বোর্ডে কী-সব লিখে সতর্ক করা হয়েছে, যা পড়তে বেশ কয়েক মিনিট বোর্ডের সামনে দাঁড়াতে হবে বা হয়। তা কি কেউ করেন? সংক্ষিপ্ত আকারে বড় করে, 'সতর্কবাণী' সবার চোখে পড়ার মতো করে লিখতে হবে। কেবল দায়সারা কাজ দেখালে সম্মানই দেখানো হয় না, হচ্ছে না, হবেও না। তবে এর পবিত্রতা রক্ষায় সরকার দু-একটি পদক্ষেপ নিয়ে মাজারের পাশে গড়ে ওঠা 'উটকো' স্থাপনা বন্ধ করে দিয়েছে, সে জন্য ধন্যবাদ। কিন্তু নিন্দাবাদ সে জন্য যে পাকিস্তানমুক্ত স্বাধীন বাংলাদেশেও ৪০ বছর পার হয়ে গেছে, আজও যথার্থ ও পরিকল্পিত 'শহীদ মিনার'টি স্থাপিত হয়নি। সেই পাকিস্তান আমলের শহীদ মিনারই আজও দেখছি কেন? ওরা তো বাংলা ভাষাবিরোধী ছিল। কিন্তু আমরা? আমরাই তো অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলাকে চেয়েছিলাম। আঞ্চলিক ভাষার সম্মান-মর্যাদা দাবি করেছিলাম। কিন্তু বাংলা ভাষার দুরবস্থা দেখে, ইংরেজি ও আরবির কাছে মার খেতে দেখে লজ্জায় মাথা নিচু হয়ে যায়। আঞ্চলিক ক্ষুদ্র ভাষাগুলোকে তো আমরা পাত্তাই দিচ্ছি না। এ কি শহীদদের আত্মত্যাগের প্রতি অশ্রদ্ধা প্রকাশই হচ্ছে না? কেন এমন হচ্ছে? সর্বস্তরে বাংলা প্রচলনের দাবি কি এভাবেই উপেক্ষিত হয়ে বিদেশি ভাষার পায়ে মাথা খুঁটে মরবে? সমাজের বিত্তশালীদের অর্থকরী দাপটে ভাষা আন্দোলনের সেই অমর স্মৃতি ধুয়ে-মুছে যাচ্ছে আধুনিকতা, আন্তর্জাতিকতার দোহাইয়ে। আমরা মুক্ত স্বদেশে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা বাংলা পেয়েছি; কিন্তু একমাত্র তাকেই অপমানিত করে চলেছি নিরবধি। মুখে বলছি বাংলা ভাষা-সাহিত্য-সংস্কৃতির কথা; কিন্তু পশ্চিমা বিশ্বের স্তুতিগানে বিমুগ্ধ হয়ে তাদের সংস্কৃতি- যা চটকদার, তা অনুসরণই নয় কেবল, জীবনের রীতিনীতিতে ধারণ করে বাংলার মানুষের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতিকে বিলুপ্তির পথেই ঠেলে দিতে হাত লাগাচ্ছি। ফলে সংখ্যাধিক্যের ভাষা-সংস্কৃতি অবহেলিতই হচ্ছে দিন দিন। ...এদিকে কে নজর দেবেন? সরকার কি বাংলার মর্যাদা রক্ষায় চেষ্টা করবে না? করবে না শহীদদের স্মৃতির মিনারকেও পবিত্র স্থান?
সজ্জনদের প্রতি আমার আবেদন, কোনো আবেগ নয়, বাস্তবতার কারণেই শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের উদ্দেশ্যেই জাতীয় কর্তব্য পালনে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকাটি সুরক্ষিত এলাকা হওয়া উচিত। যেহেতু জনগণের অবাধ শ্রদ্ধা নিবেদনের সুযোগ অব্যাহত রাখতেই হবে, সে কথা মনে রেখে এর চতুর্দিকে দেয়াল নয়; কিন্তু একটি বেষ্টনী-নিরাপত্তা বূ্যহ তৈরি করতে হবে, যাতে করে ছবির মতো যেসব ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে, যে বাইপাস বানিয়েছে মিনার চত্বরকে মানুষ ও মোটরবাইক চলাচলের, তা থেকে রক্ষা করা যায়। এই ব্যবস্থা অনতিবিলম্বে গ্রহণ করে অযাচিত আড্ডা ও চলাচল বন্ধ করতে হবে। তবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারকে ঘিরে যে রাস্তা, তা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল গেট ছেড়ে, মিনারের সামনের রাস্তা বন্ধ করে পশ্চিমে বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকাটি উচ্ছেদ করে সম্পূর্ণ জায়গাজুড়ে একটি বড় শহীদ চত্বর সৃষ্টি করলে ওই ধরনের বিসদৃশ ঘটনা ঘটার সুযোগ কমবে না, বন্ধই হয়ে যাবে এবং যথার্থ মর্যাদায় দাঁড়িয়ে থাকবে মিনার। আমরাও নিষ্কলুষ মনে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারব।

লেখক : সাংবাদিক ও লেখক
৩১.৮.২০১২

No comments

Powered by Blogger.