তেহরানে দুই নেতার বৈঠক- তিস্তা চুক্তির ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করলেন মনমোহন

ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বাংলাদেশের সঙ্গে বহু প্রতীক্ষিত তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আশ্বস্ত করেছেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নয়াদিল্লিতে ২৭ ও ২৮ আগস্ট অনুষ্ঠিত যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) টিপাইমুখ বাঁধসংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ গ্রুপের প্রথম বৈঠকের ব্যাপারে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘এটি একটি শুভ সূচনা।’ খবর বাসস ও ইউএনবির।


গতকাল বুধবার তেহরানে গ্র্যান্ড আজাদি হোটেলে দুই দেশের নেতার মধ্যে বৈঠক হয়। প্রধানমন্ত্রী জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের (ন্যাম) ১৬তম শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে গতকাল তেহরান গেছেন। সম্মেলনের প্রাক্কালে তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এ বৈঠক করলেন।
বৈঠকে মনমোহন বলেন, ভারতের মন্ত্রিসভা বাংলাদেশের সঙ্গে বহু প্রতীক্ষিত স্থলসীমান্ত চুক্তি অনুমোদন করেছে এবং তা পাস করার জন্য এখন পার্লামেন্টে পাঠানো হবে। মন্ত্রিসভা এ চুক্তি অনুমোদন করায় শেখ হাসিনা ভারত সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ত্রিপুরা, মিজোরামসহ বিভিন্ন এলাকায় আরও চারটি সীমান্ত হাট খোলার প্রক্রিয়া চলছে। তিনি বলেন, ত্রিপুরার পালাটানা বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে অতিরিক্ত ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাংলাদেশে রপ্তানির প্রক্রিয়াও চলছে।
শেখ হাসিনা আগামী মাসে বাংলাদেশ, ভারত ও ভুটানের মধ্যে জলবিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতার বিষয়ে অনুষ্ঠেয় বৈঠক সফল হবে বলে আশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘অক্টোবরে নেপাল ও ভারতের সঙ্গে এ ধরনের আরেকটি বৈঠক হবে বলে আমরা আশাবাদী।’
এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি, পররাষ্ট্রসচিব মিজারুল কায়েস, জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি এ কে আবদুল মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ এবং ইরানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত খন্দকার আবদুস সাত্তার উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী গতকাল চার দিনের সফরে তেহরান পৌঁছান। সেখানে বিমানবন্দরে তাঁকে লালগালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়। ইরানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মারজিয়েহ ওয়াহিদ দস্তজেরদি, রাজধানী তেহরানের প্রাদেশিক গভর্নর সফর আলী ব্রাটলু ও ইরানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত খন্দকার আবদুস সাত্তার বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান। সেখানে বিদেশি সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ন্যামকে ন্যায়বিচার, শান্তি, উন্নয়ন ও জনগণের ক্ষমতায়নের নীতি অনুসরণ করা উচিত।
পরে প্রধানমন্ত্রীকে পার্সিয়ান এস্তেঘলাল ইন্টারন্যাশনাল হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়। সফরকালে তিনি এই হোটেলে থাকবেন। শেখ হাসিনা রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের দুই দিনের সম্মেলনে যোগ দেবেন। আজ বৃহস্পতিবার সম্মেলন শুরু হবে। এতে উদ্বোধনী ভাষণ দেবেন ইসলামি বিপ্লবের নেতা আয়াতুল্লাহ সাইয়েদ আলী খামেনি। প্রধানমন্ত্রী আজ সম্মেলনের মূল অধিবেশনে ভাষণ দেবেন।

No comments

Powered by Blogger.