সরকারি কর্মচারীরা বিনিয়োগ করতে পারবে না

পুঁজিবাজারের জন্য আয়কর আইন সংশোধন করছে সরকার। সংশোধিত আইনে মিউচুয়াল ফান্ড থেকে অর্জিত আয় করমুক্ত করার কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া লেনদেনের ওপর উৎসে কর দশমিক ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে দশমিক ০৫ শতাংশ করা হয়েছে।


গতকাল সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে পুঁজিবাজার গতিশীল করার লক্ষ্যে আয়কর আইনের এসব সংশোধনী প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। এ ছাড়া মন্ত্রিসভা পুঁজিবাজারে অর্থ বিনিয়োগ করার বিষয়ে সব পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি নির্দেশ দিয়েছে বলে সরকারি সংবাদ সংস্থা বাসস জানায়।
এ ছাড়া বৈঠকে পুঁজিবাজারে সরকারি কর্মকর্তাদের বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও জানা গেছে। এ বিষয়ে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ না করা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। চাকরিবিধি সঠিকভাবে কার্যকর করতেই এ নিয়ে আলোচনা হয় বলে জানা গেছে।
একাধিক মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেহেতু শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ ঝুঁকিপূর্ণ, তাই এর দায়দায়িত্ব বিনিয়োগকারীকেই নিতে হবে। নিজ দায়িত্বে বিনিয়োগ করতে হবে। লাভ যেমন নিজের, তেমনি লোকসানও নিজের। তিনি শেয়ারবাজারের ঝুঁকি সম্পর্কে মানুষকে সতর্ক করে দিতে বলেন।
সূত্র জানায়, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী সরকারি চাকরির বিধিমালা সম্পর্কে জানতে চান। এ সময় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা প্রধানমন্ত্রীকে জানান, ১৯৭৯ সালে জিয়াউর রহমানের শাসনকালে যে বিধিমালা করা হয়, তাতে সরকারি সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তাদের চাকরিরত অবস্থায় ব্যবসা-বাণিজ্যে বা লাভজনক খাতে বিনিয়োগ না করার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আছে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী ১৯৭৯ সালের এই আইনটি নতুন করে প্রচার করার নির্দেশ দেন।
সর্বোচ্চ মজুরি ৫৬০০ টাকা: জাতীয় মজুরি ও উৎপাদনশীলতা কমিশন ২০১০-এর সুপারিশ গতকাল মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সুপারিশ অনুযায়ী, সর্বোচ্চ মজুরি পাঁচ হাজার ৬০০ টাকা করা হয়েছে। এতে সর্বনিম্ন মজুরি নির্ধারিত হয়েছে চার হাজার ১৭৫ টাকা।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব জানান, কমিশনের এ সুপারিশ ২০১০ সালের জুলাই মাস থেকে কার্যকর হবে। এতে বাড়িভাড়া ধার্য করা হয়েছে শতকরা ৫০ ভাগ। চিকিৎসা ভাতা ধরা হয় ৭০০ টাকা। এ ছাড়া উৎসব বোনাস দুই মাসের, যাতায়াত ১৫০ এবং টিফিন বাবদ ১৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রেস সচিব জানান, মন্ত্রিসভার বৈঠকে আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) (সংশোধন) আইন, ২০১২-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই আইনটি প্রথমে ২০০২ সালের ১০ এপ্রিল প্রণয়ন করা হয়। প্রথমে আইনটি দুই বছর পর্যন্ত কার্যকর ছিল। এরপর প্রতিবারই আইনটি দুই বছর করে বাড়ানো হয়। গতকালের বৈঠকে আইনটি ২০১৪ সালের ১০ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন, ২০১২-এর খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।

No comments

Powered by Blogger.