মুক্তিযোদ্ধা ১ (৫): ১ (৩) ফরাশগঞ্জ; বিজেএমসি ৩: ১ রহমতগঞ্জ-মুক্তিযোদ্ধার রুদ্ধশ্বাস জয়

টাইব্রেকারের পঞ্চম শট। সানডে গোল করলেই মুক্তিযোদ্ধা উঠে যাবে ফেডারেশন কাপের সেমিফাইনালে। শীতের রাতে টান-টান উত্তেজনা বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে। কৌতূহলী হাজার চোখ। কী ঘটতে চলেছে? এরপরের দৃশ্যটা মুক্তিযোদ্ধার জন্য আনন্দের। আর ফরাশগঞ্জের জন্য হূদয়বিদারক। সব উত্তেজনায় জল ঢেলে শেষ শটে নাইজেরিয়ান স্ট্রাইকার সানডের লক্ষ্যভেদ।
১২০ মিনিটের লড়াই আর টাইব্রেকারের ভাগ্যপরীক্ষায় হার ফরাশগঞ্জের। গত বছর স্বাধীনতা কাপজয়ী পুরান ঢাকার দলটি পারল না আরেকটি রূপকথা তৈরির পথে এগিয়ে যেতে। তবে শেষ বিচারে জয়টা শুধু মুক্তিযোদ্ধার নয়। এই জয় ফুটবলেরই। এমন ম্যাচই তো দেখতে চায় দর্শক।
ঢাকার ম্যাড়মেড়ে ফুটবল এখন আর মাঠে দর্শক টানে না। কিন্তু ফেডারেশন কাপের কালকের দ্বিতীয় সেমিফাইনাল ঘরোয়া ফুটবলে অন্য রকম বিজ্ঞাপন হয়ে রইল। মিঠুনের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল মুক্তিযোদ্ধা। জুনাপিউ ১-১ করার পর অতিরিক্ত ৩০ মিনিটও আর গোল দেখেনি। শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে শেষ হাসি মুক্তির। ব্যবধান ৫-৩।
দিনের প্রথম কোয়ার্টার ফাইনালটা অবশ্য কোনো দাগ রেখে যেতে পারেনি। ফরাশঞ্জেরই প্রতিবেশী রহমতগঞ্জ একরকম আত্মসমর্পণই করেছে বিজেএমসির কাছে। ৩-১ গোলে জিতে সবার আগে সেমির টিকিট কাটা আলফাজের দল শুক্রবার শেষ চারে লড়বে এই মুক্তিযোদ্ধারই সঙ্গেই।
এদিনই প্রথম দুই ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার রাফায়েল ও মিডফিল্ডার লিমাকে নিয়ে নেমেছে মুক্তিযোদ্ধা। এক ম্যাচ বহিষ্কৃত থাকা ডিফেন্ডার আরিফ দলের বাইরে। তাই মুক্তিযোদ্ধার দলীয় সমন্বয়টা একটু এলোমেলো হয়েছে। ম্যাচ শেষে এটিকেই সমস্যা বলে দাঁড় করালেন কোচ শফিকুল ইসলাম। তবে প্রথম মিনিট কুড়ি একটু এলোমেলো খেললেও মুক্তি খেলাটা আস্তে আস্তে গুছিয়ে নিয়েছে। সময় যত এগিয়েছে, দলটার ধার বেড়েছে আরও।
৬ ফুটের বেশি লম্বা রাফায়েল-লিমা খুব নজর না কাড়লেও খারাপ খেলেননি। প্রথম ম্যাচ বলে হয়তো আড়ষ্ট ছিলেন কিছুটা। তবে মাঝমাঠে লিমার বল দেওয়া-নেওয়া, আক্রমণ গড়া—সবকিছুতেই কুশলী খেলোয়াড়ের ছাপ ছিল। মুক্তিযোদ্ধাকে ‘অনেক ভালো’ দল বলার পর ফরাশগঞ্জ কোচ কামাল বাবু দুই দলের মধ্যে উচ্চতায় মুক্তিযোদ্ধার এগিয়ে থাকার কথাও আলাদা করে বললেন।
সুযোগ নষ্ট করার কারণেই মুক্তিযোদ্ধাকে যেতে হয়েছে টাইব্রেকার পর্যন্ত। এক সানডেই চার-পাঁচটা সহজ সুযোগ নষ্ট করেছেন। একই রোগে ভুগেছে ফরাশগঞ্জও। বিশেষ করে জুয়েল ও জুনাপিউ দু-তিনটি সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। বৃথাই গেছে পাশবন মোল্লার সব পরিশ্রম। ফরাশঞ্জের এই ফরোয়ার্ডকে ভালো খেলেও পরাজয়ের দুঃখ নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে।
৫০ মিনিটে লিমা-এমিলির তৈরি করা সুযোগ কাজে লাগিয়ে আলতো হেডে মুক্তিযোদ্ধাকে এগিয়ে নেন মিঠুন। ৮৩ মিনিটে জুনাপিউর টোকায় ১-১। তবে অতিরিক্ত সময়ে দুবার মুক্তিযোদ্ধার সামনে বাধা হয়ে দাঁড়ায় ক্রসবার।
ওদিকে বিজেএমসির তিনটি গোলই দুই বিদেশির। আবদুল রশিদ দুটি করেছেন, অন্যটি ইসমাইল বাঙ্গুরা। ৩-০ হওয়ার পর রহমতগঞ্জের হয়ে একটা শোধ করেছেন অধিনায়ক ইদ্রিস কাসুরি।
আজ আবাহনী-শেখ জামাল: মৌসুমের প্রথম বড় ম্যাচ আজ। একটু আগেই দেখা হয়ে যাচ্ছে দুই বড় দলের। ফেডারেশন কাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আবাহনীর সামনে দাঁড়াচ্ছে বাংলাদেশ লিগ চ্যাম্পিয়ন শেখ জামাল। বিকেল সাড়ে পাঁচটায় বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে এই লড়াই নিয়ে তেতে আছে দুই দলই।

No comments

Powered by Blogger.