জুবায়ের হত্যাকাণ্ড-আন্দোলনের মুখে প্রক্টরের পদত্যাগ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জুবায়ের আহমেদ হত্যার ঘটনায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে প্রক্টর মো. আরজু মিয়া পদত্যাগ করেছেন। গতকাল সোমবার সংবাদ সম্মেলন করে তিনি পদত্যাগের ঘোষণা দেন। এদিকে পাঁচ দফা দাবিতে ক্লাস পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি স্থগিত করেছেন শিক্ষক সমাজের ব্যানারে আন্দোলনরত শিক্ষকেরা। তবে সব দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন তাঁরা।


গতকাল বেলা দুইটার দিকে সমাজবিজ্ঞান ভবনে সংবাদ সম্মেলন করে তাঁরা এ ঘোষণা দেন। এর আগে গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুন্নি সরণি থেকে মৌন মিছিল বের করেন শিক্ষকেরা। পরে তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে সমাবেশ করেন।
একই সময়ে নতুন কলা ভবনের সামনে থেকে শোক র‌্যালি বের করেন জুবায়েরের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীরা। দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্বর থেকে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। একই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রশাসনিক ভবনের সিনেট হলে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। এ সময় অধ্যাপক আরজু মিয়া বলেন, ‘জুবায়ের হত্যার ঘটনায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও শিক্ষকদের একাংশের ক্লাস বর্জন—এ পরিস্থিতি বিবেচনা করে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছি।’
এদিকে গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র জুবায়ের আহমেদ কতিপয় দুর্বৃত্ত কর্তৃক নিহত হওয়ার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনা করে ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখার স্বার্থে অধ্যাপক মো. আরজু মিয়া প্রক্টরের পদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন। উপাচার্য অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবির প্রক্টরের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন।’
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, গতকাল সন্ধ্যায় উপাচার্যের সভাপতিত্বে সিন্ডিকেটের এক জরুরি সভায় জুবায়ের হত্যাকাণ্ড-পরবর্তী বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং প্রশাসনিকভাবে নেওয়া সব কার্যক্রম অনুমোদন করা হয়। সিন্ডিকেট জুবায়ের আহমেদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করে। জুবায়ের হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুর্বৃত্তদের বিষয়ে সর্বোচ্চ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ এবং আসামিদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তাগিদ দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
প্রক্টরের পদ থেকে সরে দাঁড়ালেও আরজু মিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য, সিনেট সদস্য, নবনির্মিত শহীদ রফিক-জব্বার হলের প্রাধ্যক্ষ, বিশ্ববিদ্যালয়ের দোকান পরিচালনা কমিটির সভাপতির দায়িত্বে বহাল আছেন।
উপাচার্যকে স্মারকলিপি: প্রক্টর পদত্যাগের পর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা গতকাল চার দফা দাবিতে উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দেন। স্মারকলিপিতে বলা হয়, অবিলম্বে জুবায়ের হত্যার দায়ভার বিদায়ী প্রক্টরকে নিতে হবে, দেশের প্রচলিত আইনে দোষীদের বিচার, মদদদাতাদের চিহ্নিত করা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রের আধুনিকায়ন করতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.