প্রতিবেশীরা তেল উত্তোলন বাড়ালে পরিণতি ভালো হবে না

রানের পরমাণু কর্মসূচি থামাতে তাদের কাছ থেকে তেল আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়েছে ইউরোপীয় দেশগুলো। জবাবে ইরান বলেছে, এতে তাদের কোনো সমস্যা হবে না। আবার ইরান প্রতিবেশী আরব দেশগুলোকে হুমকি দিয়ে বলেছে, তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞার পর ঘাটতি মেটাতে তেলের উত্তোলন বাড়ালে পরিণতি ভালো হবে না।
ইরানের তেল রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি সমর্থন করে না চীন।


কিন্তু চীনের প্রধানমন্ত্রী ওয়েন জিয়াবাও গত রোববার সৌদি আরব সফরে গিয়ে সে দেশের বিপুল তেল ও গ্যাসসম্পদ কীভাবে আরও বেশি পরিমাণে পাওয়া যায়, সেই চেষ্টা করেছেন। এককভাবে ইরানের তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা চীন। ইরানের তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টি নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তাদের আশঙ্কা, এতে করে বিশ্ববাজারে তেলের দাম আরও বাড়তে পারে। এমনিতে অর্থনৈতিক দুরবস্থা এবং ক্রমাগত বেড়ে চলা বেকরাত্ব নিয়ে ধুঁকতে হচ্ছে ইইউ দেশগুলোকে।
তবে ব্রিটেন সম্প্রতি বেশ আস্থার সঙ্গে জানিয়েছে, ইরান থেকে তেল রপ্তানির ওপর ইইউ শিগগির নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে।
এ ছাড়া নতুন একটি আইনে স্বাক্ষর করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। ওই আইন অনুযায়ী, কোনো প্রতিষ্ঠান ইরানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে লেনদেন করলে তাদের সম্পদ জব্দ করা হবে।
ইরানের তেল রপ্তানির অর্থ লেনদেন হয় তাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে। কাজেই যুক্তরাষ্ট্রের নতুন আইন পুরোপুরি কার্যকর হলে অনেক দেশের পক্ষে ইরান থেকে তেল কেনা কঠিন হয়ে পড়বে।
ইরানের কাছ থেকে তেল কিনতে না পারলে বিকল্প হিসেবে অন্যান্য আরব দেশ থেকে তেল পাওয়া যাবে কি না, তা নিয়ে ইতিমধ্যে ভাবতে শুরু করেছে এশিয়ার অনেক দেশ। এসব দেশের নেতারা আরব দেশগুলো সফর করা শুরু করেছেন।
চারদিকে এই দুরবস্থার মধ্যেও ইরান তাদের পরমাণু কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে জোরেশোরে। নতুন বছরের শুরু থেকে তারা ভূগর্ভস্থ বাংকারে ইউরেনিয়াম পরিশোধন শুরু করেছে।
ইরান তেল রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞার হুমকির জবাবে পাল্টা হুমকি দিয়ে বলেছে, তারা হরমুজ প্রণালি বন্ধ করে দেবে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যসহ উপসাগরীয় দেশগুলোর তেল রপ্তানির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এই নৌপথ।
তেল রপ্তানিকারক দেশগুলোর সংস্থা ওপেকে ইরানের প্রতিনিধি মোহাম্মদ আলী খাতাবি বলেছেন, ‘উপসাগরীয় দেশগুলো যদি বাড়তি তেল রপ্তানির সবুজ সংকেত দেয় এবং এরপর এই অঞ্চলে কিছু ঘটে গেলে তারাই হবে মূল অপরাধী।’
তবে সৌদি আরবের তেলমন্ত্রী আলী আল-নাইমি শনিবার ইঙ্গিত দিয়েছেন, তেলের বাড়তি চাহিদা মেটাতে তাঁরা প্রস্তুত। তিনি ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি উল্লেখ করেননি। রয়টার্স।

No comments

Powered by Blogger.