অটিস্টিক শিশু নির্যাতন-মনিপুর বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষসহ চারজনকে হাইকোর্টে তলব

রাজধানীর মনিপুর উচ্চবিদ্যালয়ে অটিস্টিক শিশু মাইনউদ্দিন শরীফকে নির্যাতনের ঘটনায় কলেজের অধ্যক্ষ ফরহাদ হোসেন, কাফরুল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আতাউর রহমানসহ চারজনকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ১৯ জানুয়ারি তাঁদের সশরীরে হাজির হতে হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেন। অন্য দুজন হলেন কলেজের নিরাপত্তাকর্মী হেলালউদ্দিন ও আনোয়ার হোসেন।


৯ জানুয়ারি ‘অটিস্টিক শিশুটির ওপর এই নির্মমতা!’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রথম আলোয় প্রকাশিত হয়। গতকাল সকালে প্রতিবেদনটি আদালতের নজরে আনেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আলতাফ হোসেন। এরপর আদালত এ আদেশ দেন।
এদিকে মাইনউদ্দিনের স্বজনেরা অভিযোগ করেন, ‘মাইনউদ্দিনকে নির্যাতনের ঘটনায় এক ব্যক্তি তাঁর বাবাকে বাড়াবাড়ি না করার হুমকি দেন। ওই ব্যক্তি মুঠোফোনে ছেলেটির বাবাকে বলেন, “আমি কামাল মজুমদারের ডান হাত, বাম হাত। আপনি কাগজ চালাচালি বন্ধ করে মনিপুর স্কুলে আসেন। আর আপনি তালতলায় আওয়ামী লীগের বেলালের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।”’
প্রথম আলোর পক্ষ থেকে ওই ব্যক্তির মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি নিজেকে বেগম রোকেয়া সরণি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবদুর রউফ বলে পরিচয় দেন। হুমকি দেওয়ার কথা অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগের একজন কর্মী। সহানুভূতি জানাতে ছেলেটির বাবাকে ফোন করেছিলাম।’
গত রোববার মাইনউদ্দিনের বাবা মো. জসিমউদ্দিন শেওড়াপাড়ায় মনিপুর উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের (শাখা-৩) অধ্যক্ষের কাছে তাঁর সন্তানের ওপর নির্যাতনের ঘটনায় ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানান। ওই আবেদনে তিনি বলেন, কলেজের নৈশপ্রহরী তাঁর কাছে নির্যাতনের কথা স্বীকার করেছিলেন।
জানতে চাইলে অধ্যক্ষ ফরহাদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজ (গতকাল) আমি টিভি দেখে বিষয়টি সম্পর্কে জেনেছি।’ প্রথমে তিনি আবেদন পাওয়ার কথা অস্বীকার করলেও পরে তা স্বীকার করেন।
গত শুক্রবার গভীর রাতে শেওড়াপাড়ায় মনিপুর উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের ৩ নম্বর শাখায় মাইনউদ্দিন শরীফকে (১৩) আটকে রেখে নির্দয়ভাবে নির্যাতন করে স্কুলের নৈশ নিরাপত্তাকর্মী হেলালউদ্দিন ও আনোয়ার। শিশুটি মিরপুর ১৪ নম্বরে প্রতিবন্ধী ফাউন্ডেশনের বিশেষায়িত স্কুলের শিক্ষার্থী।
এ ঘটনায় মাইনউদ্দিনের বাবা জসিমউদ্দিন মামলা করতে গেলেও কাফরুল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আতাউর রহমান মামলা না নিয়ে অভিযোগটি একটি জিডি হিসেবে গ্রহণ করেন।

No comments

Powered by Blogger.