প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগ-দোলেশ্বরে ডুবল শেখ জামাল

বারের প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে বেশ কটি দল শক্তির পার্থক্যে উনিশ-বিশ। কোন ফলটা প্রত্যাশিত, আর কোনটা অঘটন—এটা বলা তাই কঠিন। তবে কাল ফতুল্লায় প্রাইম দোলেশ্বরের কাছে শেখ জামালের হারটা যেকোনো দৃষ্টিকোণ থেকেই অঘটন। কাগজে-কলমে শক্তির বিচারে বেশ ভালো ব্যবধানেই এগিয়ে ছিল ধানমন্ডির ক্লাবটি।
কাল আরও জিতেছে বাংলাদেশ বিমান ও ওল্ড ডিওএইচএস। চতুর্থ ম্যাচে তৃতীয় জয় পেয়ে ওল্ড ডিওএইচএস উঠে গেছে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে। তিনটি ম্যাচ করে জিতেছে আরও চারটি ক্লাব। আশরাফুলের দল এগিয়ে শ্রেয়তর রানরেটে।
ফতুল্লায় দোলেশ্বর জিতেছে ৪৩ রানে। চার ম্যাচে এটা তাদের প্রথম জয়, জামালের দ্বিতীয় হার। টস হেরে ব্যাটিং পেয়েছিল বুড়িগঙ্গার ওপারের ক্লাবটি। পাকিস্তান দলের বাইরে থাকা কামরান আকমলের সেঞ্চুরি (১১৭) এবং শাহরিয়ার নাফিস (৫০) ও আরেক পাকিস্তানি কায়সার আব্বাসের (৫২) ফিফটিতে ৭ উইকেটে ২৯৫ রান করে দোলেশ্বর। প্রথম উইকেট পড়ার পর আকমল যখন ক্রিজে আসেন, দোলেশ্বরের রান তখন ৪৭। ২০৫ রানের মাথায় তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে যখন আউট হলেন, তাঁর নামের পাশে ১১৭। অর্থাৎ উইকেট থাকাকালে ১৫৩ রানের ১১৭-ই এই উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যানের। ৯৬ বলে ১৭ চার ও ২ ছক্কায় সাজানো এই ইনিংসটি এবারের লিগের সর্বোচ্চ।
শেখ জামালের শুরুটা হয়েছিল দুর্দান্ত। আড়াই ওভার শেষে স্কোর বোর্ডে রান ২৭। এর ২৫ রানই শামসুর রহমানের। ৯ বলে ২৫ রান করার পথে দ্বিতীয় ওভারে লিমনের এক ওভার থেকেই ২০ রান নেন শামসুর। এরপর অধিনায়ক সোহরাওয়ার্দী ছাড়া (৬৪) আর কেউই দাঁড়াতে পারেননি। ৯ উইকেটে ২৫২ রান তুলতেই শেষ ৫০ ওভার।
মিরপুরে বিমানের কাছে ৪৩ রানে হেরে মাথা ঠিক রাখতে পারেননি ব্রাদার্সের কর্মকর্তারা। ম্যাচ শেষে আম্পায়ারদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছেন তাঁরা। ঘটনার শুরু নাজিমউদ্দিনের আউট নিয়ে। ব্রাদার্সের এই ব্যাটসম্যান আউট হওয়ার পর কিছু সময় দাঁড়িয়ে ছিলেন ক্রিজে। ম্যাচ শেষে ম্যাচ রেফারি তাঁকে ডেকে পাঠাতেই ব্রাদার্সের এই অভব্য আচরণ।
কুয়াশার জন্য ৪২ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে নাটক হয়েছে আরও। বিমানের পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান খালেদ লতিফ হিসেবে ভুল করায় পেতে পেতেও পাননি সেঞ্চুরি। ৯৮ রানে অপরাজিত এই লতিফ ইনিংসের শেষ ওভারের পঞ্চম বলে একটি সিঙ্গেল নিয়ে চলে যান নন-স্ট্রাইকিং প্রান্তে। তিনি নাকি ভেবেছিলেন, আরও দুই বল বাকি আছে!
বিকেএসপির ম্যাচটিও সংক্ষিপ্ত হয়ে নেমে এসেছিল ৩৮ ওভারে। এখানেও ম্যাচের সর্বোচ্চ রান এক পাকিস্তানির। ডিওএইচএসের আদনান রাজা মাত্র ৬১ বলে করেছেন ৮০। ডিওএইচএস করে ২৪৫ রান। এরপর সিসিএসকে ১২০ রানে অলআউট করে ১২৫ রানের বড় জয়ের সঙ্গে যোগ করে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠে যাওয়ার আনন্দও।

সং ক্ষি প্ত স্কো র
শেখ জামাল-প্রাইম দোলেশ্বর
প্রাইম দোলেশ্বর: ৫০ ওভারে ২৯৫/৭ (কামরান আকমল ১১৭, কায়সার ৫২, শাহরিয়ার ৫০, সায়েম ৩০, মিজানুর ২৮; আরাফাত সানি ২/৪০, সোহরাওয়ার্দী ২/৫৩)। শেখ জামাল: ৪৭.৪ ওভারে ২৫২/৯ (সোহরাওয়ার্দী ৬৪, আরিফুল ৩৬, সুজিত ৩১, মেহরাব ৩০, শামসুর ২৫; মনির ৩/২৮, জায়েদ ২/৪৯)।
ফল: প্রাইম দোলেশ্বর ৪৩ রানে জয়ী।

বিমান-ব্রাদার্স
বিমান: ৪২ ওভারে ২৩৪/৪ (খালেদ লতিফ ৯৮*, জুনায়েদ ৫৪, ফয়সাল ইকবাল ৪৪, কাশিফ ২১; তানভীর ২/৫২)। ব্রাদার্স: ৩৭.২ ওভারে ১৯১ (আফতাব ৩৮, নাজিমউদ্দিন ৩১, ধীমান ৩০, তুষার ২০; রেজাউল ৩/৪৬, আসিফ ২/১৯, কাশিফ ২/৩০, তাসকিন ২/৪১)।
ফল: বিমান ৪৩ রানে জয়ী।

ওল্ড ডিওএইচএস-সিসিএস
ওল্ড ডিওএইচএস: ৩৮ ওভারে ২৪৫/৫ (আদনান ৮০, জিয়াউর ৫৯, শুভাগত ৪০; সুলেমান ২/৫৩)। সিসিএস: ২৮ ওভারে ১২০ (সুলেমান ৩১, আতিকুর ২৭, রবিউল ২৫; জোহায়েব ৩/২৮, এনামুল ৩/৩১, সাঈদ ২/২৯)।
ফল: ওল্ড ডিওএইচএস ১২৫ রানে জয়ী।

No comments

Powered by Blogger.