চ্যাম্পিয়নের মতোই শুরু আবাহনীর

মাঠের হিসাব যাই হোক, কাগজ-কলমের হিসাবে এবার শক্তিতে সেরা দুই দল মুক্তিযোদ্ধা ও আবাহনী। ফেডারেশন কাপে টপ ফেভারিটও তারা। প্রথম দিন কমলাপুরে নবাগত কক্স সিটি ফুটবল ক্লাবকে ১০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে মুক্তিযোদ্ধা। আবাহনী কী করে তা দেখার অপেক্ষায় ছিল সমর্থকরা। গতকাল বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় বিভাগের দল বাংলাদেশ পুলিশকে ৬-০ গোলে বিধ্বস্ত করল আবাহনী, ফেডারেশন কাপে তাদের সূচনাটা হলো চ্যাম্পিয়নের


মতোই। প্রথমার্ধে ৪-০ গোলে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয়ার্ধে আরও ২ গোল দিল ইরানি কোচ আলি আকবর পোরমুসলিমির শিষ্যরা। সহজ গ্রুপে পড়া আবাহনীর এ জয় দলটিকে অনেকটা এগিয়ে দিল কোয়ার্টার ফাইনালের পথে। তাদের শেষ দুই প্রতিপক্ষ আরামবাগ ও ফেনি সকার ক্লাব। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আবাহনীর এ বড় জয়ে দুটি গোল করেছেন তাদের নতুন নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড লাকি পল। আইটিসি না আসায় একদিন আগেও নিশ্চিত ছিল না আবাহনীর প্রথম ম্যাচে তার খেলা। গতকালই ছাড়পত্র এলে মাঠে নামার সুযোগ পান পল, প্রথম ম্যাচেই সমর্থকদের মন জয় করেন এই নাইজেরিয়ান। ৬ গোলের দুটিই করেছেন তিনি। এ ছাড়া ফ্রাঙ্ক, ইব্রাহিম, রবিন ও ওয়ালি ফয়সাল গোল করেন।
পুরো ম্যাচে আবাহনীর গোলরক্ষক সোহেলকে একবারই পরীক্ষা দিতে হয়েছে। দ্বিতীয় মিনিটে পুলিশের অসীমের আচমকা নেওয়া শট তিনি ডানদিকে বাইরে পাঠানোর পর বাকি সময় ম্যাচটাই উপভোগ করেছেন। অন্যদিকে পুলিশের গোলরক্ষক আজম খানকে সারাক্ষণই ব্যতিব্যস্ত রেখেছেন আবাহনী ফরোয়ার্ডরা। তাই অর্ধডজন গোলের বোঝা নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় তাকে। গত মৌসুম শেষ না করে চলে গিয়েছিলেন আবাহনীর ইরানি কোচ। এবার তার হাত ধরেই আবার মৌসুম শুরু করল আবাহনী। মোহামেডানের কোচ এমেকা আর ব্রাদার্স কোচ সৈয়দ নাঈমুদ্দিনের শুরুটা ড্র দিয়ে হলেও চমৎকার সূচনা আলি আকবরের। পরের ম্যাচগুলোতে তার দল আরও ভালো করবেন বলেও জানালেন তিনি।
পুলিশের কোচ সেলিম খানের অভিযোগ রেফারি আজাদ রহমানের ওপর। তার কারণেই নাকি তারা বেশি গোল হজম করেছে। 'আমরা জিততাম তা নয়। তবে রেফারির কাছ থেকে আরও নিরপেক্ষ খেলাই আশা করেছিলাম। প্রথমার্ধে বেশি ডিফেন্সিভ ছিলাম বলে চাপে পড়েছি। দ্বিতীয়ার্ধে একটু উঠে খেলায় গোল কম হয়েছে'_ বলেন পুলিশ কোচ।
আবাহনীর উৎসব শুরু ১৫ মিনিটে রবিনের গোলে। ২ মিনিট পর কোনাকুনি শটে ঘানার ফ্রাঙ্ক যখন ব্যবধান বাড়ান, তখনই ধরে নেওয়া হয়েছিল গোলের বোঝা নিয়েই মাঠ ছাড়তে হবে পুলিশকে। শেষ পর্যন্ত হয়েছেও তাই। ৩১ মিনিটে রবিন আর ফ্রাঙ্কের সুন্দর বোঝাপড়ায় বল পেয়েছিলেন লাকি পল। তিনি সহজেই জালে বল পাঠিয়ে ঢাকার মাঠে নিজের প্রথম গোল করেন। তার আগে ডি বক্সের মাথা থেকে ইব্রাহিমের নেওয়া ফ্রিকিক পোস্টে লেগে না ফিরলে প্রথমার্ধে আরও বেশি ব্যবধানে এগিয়ে থাকতে পারত সুজন-ওয়ালিরা। ফ্রিকিক পোস্টে লাগলেও গোল পেতে বেশি বিলম্ব হয়নি ইব্রাহিমের। ৩৬ মিনিটে রবিনের পাস থেকে টোকায় বল ঠেলে দেন আবাহনীর দীর্ঘদিনের এ কাণ্ডারি। ৫৪ মিনিটে ফ্রিকিক থেকে গোলমুখে জটলা হলে ব্যবধান বাড়ান পল, ৮৮ মিনিটে ওয়ালি ফয়সালের ফ্রিকিক সরাসরি জালে জড়ালে অর্ধডজন গোল পূরণ হয় আবাহনী। গতকাল কমলাপুর স্টেডিয়ামে ফেনী সকার ও আরামবাগের মধ্যেকার এ গ্রুপের অন্য ম্যাচটি গোলশূন্য ড্র হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.