হিলারি-সু চি দ্বিতীয় বৈঠক-গণতন্ত্রের পথে যৌথভাবে কাজ করার অঙ্গীকার

মিয়ানমারে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে আশা প্রকাশ করেছেন গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চি। গতকাল শুক্রবার সকালে সফররত মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের সঙ্গে দ্বিতীয় দফা বৈঠকের পর সু চি এ কথা বলেন। মিয়ানমারে গণতন্ত্রের উন্নয়নের জন্য যৌথভাবে কাজ করে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছেন সু চি ও হিলারি। বর্তমান সরকারকে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করারও আহ্বান জানান হিলারি।


গণতন্ত্রে উত্তরণের পথে মিয়ানমার সরকারের গৃহীত সংস্কার কর্মসূচিকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে গত বুধবার মিয়ানমারের রাজধানী নেপিডোয় পেঁৗছান হিলারি। গত বৃহস্পতিবার সকালে মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট থেইন সেইনের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। হিলারির সফরকে দুই দেশের সম্পর্কের 'নতুন অধ্যায়' উল্লেখ করে মিয়ানমারে বেসামরিকীকরণ কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ব্যাপারে আশ্বস্ত করেন প্রেসিডেন্ট। উল্লেখ্য, গত ৫০ বছরের মধ্যে কোনো মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এটাই প্রথম মিয়ানমার সফর। বৃহস্পতিবার রাতে ইয়াঙ্গুনে সু চির সঙ্গে সাক্ষাৎ ও নৈশ ভোজ করেন হিলারি। গতকাল সকালে সু চির সঙ্গে দ্বিতীয় দফা বৈঠক করেন তিনি।
হিলারির সঙ্গে আলোচনার পর সু চি বলেন, '(যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে) একসঙ্গে কাজ করার ব্যাপারে আমি খুবই আশাবাদী। গণতন্ত্রের পথ থেকে ফিরে যাওয়ার আর কোনো উপায় নেই।' তবে মিয়ানমার এখনো 'গণতন্ত্রের পথে সওয়ার হতে পারেনি' বলেও মন্তব্য করেন সু চি। ১৯৬২ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত সামরিক বাহিনী মিয়ানমারের শাসনক্ষমতা আঁকড়ে ছিল। তবে গত বছর পার্লামেন্ট নির্বাচনের মাধ্যমে বেসামরিক সরকারের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দেয় সামরিক বাহিনী। নির্বাচিত সরকার সম্প্রতি রাজনীতিসংক্রান্ত বেশ কয়েকটি আইন সংস্কারের ঘোষণা দিয়েছে। ফলে সাবেক জান্তা সরকারের সময় বিলুপ্ত হওয়া সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) আবারও রাজনীতিতে ফেরার পথ তৈরি হয়েছে।
সু চি বলেন, 'গণতন্ত্রে উত্তরণের জন্য সেনা সমর্থিত বর্তমান সরকারকে আরো অনেক পদক্ষেপ নিতে হবে। তবে শিগগিরই এটা সম্ভব হবে বলে আশা করছি আমরা।' সরকার এখনো অনেক রাজনৈতিক বন্দিকে আটকে রেখেছে এবং জাতিগত দাঙ্গা এখনো বিপর্যয় সৃষ্টি করছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সফর শেষ হওয়ার আগে সর্বশেষ সংবাদ সম্মেলনে হিলারি বলেন, 'ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার মূলনীতিতে সমর্থন দেব আমরা। তবে এগুলো অর্জনে মিয়ানমারের বর্তমান সরকার ও বিরোধী পক্ষকে তাদের নিজস্ব পদ্ধতিতে কাজ করার সুযোগ দেওয়া উচিত।' এর মাধ্যমে সাবেক জান্তা সরকারের যুদ্ধাপরাধ তদন্তের দাবি থেকে পিছিয়ে এল যুক্তরাষ্ট্র।
গতকাল মিয়ানমার ছাড়ার আগে দেশটির সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও বৈঠক করেন হিলারি। মিয়ানমারের জন্য ১২ লাখ ডলারের নতুন একটি সহায়তার প্রস্তাব দেন তিনি। ক্ষুদ্রঋণ, স্বাস্থ্যোন্নয়ন ও স্থলমাইনের কারণে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা বাবদ এ সাহায্যের প্রস্তাব দেন তিনি। সূত্র : এএফপি, বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.