চিকিৎসা বিজ্ঞান-আলঝেইমার রোগের আগাম লক্ষণ নির্ণয়

লঝেইমারের শিকার না হয় সে জন্য এবার বিজ্ঞানীরা বের করলেন এই রোগে ধরার ২০ বছর আগেই তা চিহ্নিত করার উপায়। সাম্প্রতিক এক গবেষণার ফল জানাতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা বললেন, স্মৃতিশক্তি বিলোপ কিংবা চিন্তাশক্তি লোপ পেতে শুরু করার প্রায় ২০ বছর আগেই এ রোগ তথা আলঝেইমারের সম্ভাব্যতা চিহ্নিত করা যাবে। প্যারিসে আলঝেইমারবিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বিজ্ঞানীরা উপস্থাপন করেন এ গবেষণার প্রতিবেদন।


এতে বলা হয়েছে, এ রোগের লক্ষণ দেখা দিতে শুরু করার বেশ কিছু বছর আগেই মস্তিষ্ক রসায়নের নিরূপণযোগ্য কিছু পরিবর্তন ঘটতে থাকে। এসব পরিবর্তনের দিকে নজর রেখে সম্ভাব্য আলঝেইমার রোগীকে এর হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে। মস্তিষ্কের রাসায়নিক পদার্থের বৈশিষ্ট্য ও পরিবর্তন চিহ্নিত করে সম্ভাব্য রোগীদের রক্ষার পাশাপাশি ইতিমধ্যে এর শিকার ব্যক্তিদের আরোগ্য লাভের ব্যাপারেও ইঙ্গিত দিয়েছে চিকিৎসা বিজ্ঞান। সাম্প্রতিক গবেষণায় বিজ্ঞানীরা প্রায় সব ধরনের আলঝেইমার রোগের জন্য দায়ী মস্তিষ্কে বিশেষ দুটি আমিষ জাতীয় রসের পরীক্ষা করেন। একটি হলো, স্পাইনাল রসে অ্যামাইলয়েড বেটা৪২ নামক আমিষের ঘাটতি পরীক্ষা। কারণ স্পাইনাল রসে এর ঘাটতির অর্থই হচ্ছে মস্তিষ্কের অন্য কিছু অংশে এ একই আমিষের ক্ষতিকর প্রবৃদ্ধি। যা স্নায়ুকোষ ধ্বংস করে এবং পরিণামে স্মৃতিশক্তির মারাত্মক ক্ষতি হয়। আরেকটি লক্ষণীয় বিষয় হলো স্নায়ুতন্তুর জটে 'টাও নামের একটি উপাদান বৃদ্ধি যা স্নায়ুকোষের মৃত্যুর জন্য দায়ী।
ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এবং ওই গবেষণার প্রধান গবেষক র‌্যান্ড্যাল বেটম্যান বলেন, 'বাহ্যিকভাবে দৃশ্যমান লক্ষণ প্রকাশিত হওয়ার আগেই আমরা চিকিৎসা শুরুর মাধ্যমে এ রোগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মস্তিষ্কের কোষগুলোর ক্ষতি ঠেকাতে চাই। এ গবেষণার ক্ষেত্রে বিশেষ করে এমন সম্ভাব্য রোগীদের ওপর পরীক্ষা চালানো হয়েছে যারা তাদের পিতা-মাতা উভয় কিংবা যে কোনো একজনের কাছ থেকে জিনগতভাবে এ রোগের ঝুঁকি বহন করছিল। তবে বংশগতভাবে আক্রান্ত হওয়া ছাড়াও বিপুলসংখ্যক মানুষ জিনগত সংমিশ্রণ এবং পরিবেশগত কারণেও এ রোগে ভুগতে পারে। সারাবিশ্বে বর্তমানে সাড়ে তিন কোটিরও বেশি মানুষ এ রোগে আক্রান্ত। তবে চলতি শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে এই সংখ্যা তিনগুণ হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। নতুন এ গবেষণায় আলঝেইমারের ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের মস্তিষ্কের কোষে বেশ কিছু পরীক্ষা চালিয়ে এর ফল পর্যবেক্ষণ করা হয়।
হএসএম নাজমুল হক ইমন

No comments

Powered by Blogger.