পাঁচ কোটি টাকার জাল মুদ্রাসহ দুজন গ্রেপ্তার

ঞ্চমবারের মতো গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন জাল মুদ্রা তৈরি চক্রের অন্যতম দুই ব্যক্তি সগীর আহম্মেদ ওরফে মাস্টার সগীর (৫২) ও হারুন উর রশীদ মোস্তফা চিশতি (৬২)। এক যুগের বেশি সময় ধরে তাঁরা প্রায় ৩০ কোটি টাকার জাল মুদ্রা তৈরি করেছেন। গত সোমবার ডিবির জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার গোলাম আজাদ খানের নেতৃত্বে একটি দল লালবাগের শহীদনগর এলাকার একটি বাসা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করে। তাঁদের কাছ


থেকে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা মূল্যমানের পুরোপুরি ও আংশিক ছাপানো জাল বাংলাদেশি টাকা, মার্কিন ডলার, ভারতীয় রুপি, ওমানের রিয়াল, মিয়ানমারের কিয়েত ও বাংলাদেশি রাজস্ব স্ট্যাম্প জব্দ করা হয়েছে। পাওয়া গেছে জাল মুদ্রা তৈরির রং, রাসায়নিক, ছাঁচ, ছাপাযন্ত্র (প্রিন্টার), ল্যাপটপ ও প্রিন্টারের কালি।
গতকাল মঙ্গলবার মিন্টো রোডের ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে পাঞ্জাবি, পাগড়ি পরা শ্মশ্রুমণ্ডিত দুজনকে হাজির করা হয়। সেখানে বক্তব্য দেন ডিবির উপকমিশনার মনিরুল ইসলাম। ওই দুজন জঙ্গিবাদে অর্থায়ন করতে পারেন বলে কর্মকর্তাদের ধারণা।
সগীর মাস্টার বলেন, ১৯৯৬ সাল থেকে তিনি জাল টাকার কাজ করেছেন। আগে চারবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। আদালত থেকে জামিনে ছাড়া পেয়েছেন। তবে চারটি মামলাই চলছে। সর্বশেষ ২০০৪ সালে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। এক সময় নোয়াখালীর এক স্কুলে বাংলার শিক্ষক ছিলেন।
হারুন উর রশীদ বলেন, ১৯৯৮ সাল থেকে তিনি এ চক্রের সঙ্গে জড়িত। তিনি রাসায়নিক মাখিয়ে কাগজ প্রস্তুত, পরিমাণমতো রং দেওয়ার মতো কারিগরি কাজগুলো করে থাকেন। তিনিও আগে চারবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।
সগীর আহম্মেদ বলেন, তাঁদের কাছ থেকে অন্য একটি চক্র জাল টাকা কিনে নেয়। প্রতি বান্ডিল নকল টাকা পাঁচ থেকে ছয় হাজার আসল টাকায় বিক্রি হয়। এক হাজার টাকার নোট হলে বান্ডিলে এক লাখ টাকা আর ৫০০ টাকার নোট হলে ৫০ হাজার টাকা হয়। তিনি বলেন, সীমান্ত এলাকার চোরাকারবারি, অবৈধ পশুর ব্যবসায়ীরা জাল টাকার বড় ক্রেতা। এ ছাড়া ঢাকা শহরে খুচরা বাজারে টাকা ছড়ানোরও একটি চক্র রয়েছে। এই চোরাকারবারিদের মাধ্যমেই বিদেশি টাকাগুলো পাচার ও ছড়ানো হয়।
কারিগরি দিক সম্পর্কে হারুন উর রশীদ বলেন, পুরান ঢাকার রাসায়নিক বাজার থেকে রাসায়নিক ও বিজয়নগর থেকে কেনেন কাগজ।
সংবাদ সম্মেলনে মনিরুল ইসলাম বলেন, রাতারাতি ধনী হওয়ার জন্য তাঁরা এটা করছেন না বলেই প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে। আয় দিয়ে তাঁরা জঙ্গিবাদে অর্থায়ন করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। অথবা তাঁদের সঙ্গে এমন কোনো মহলের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে, যাঁরা দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করতে চান। প্রমাণ সাপেক্ষে তাঁদের বিরুদ্ধে জঙ্গিবাদের অর্থায়নের অথবা দেশদ্রোহের অভিযোগে মামলাও হতে পারে।

No comments

Powered by Blogger.